بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ
الرَّحِيمِ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا عَدُوِّي
وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ تُلْقُونَ إِلَيْهِم بِالْمَوَدَّةِ وَقَدْ
كَفَرُوا بِمَا جَاءَكُم مِّنَ الْحَقِّ يُخْرِجُونَ الرَّسُولَ
وَإِيَّاكُمْ ۙ أَن تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ رَبِّكُمْ إِن كُنتُمْ خَرَجْتُمْ
جِهَادًا فِي سَبِيلِي وَابْتِغَاءَ مَرْضَاتِي ۚ تُسِرُّونَ إِلَيْهِم
بِالْمَوَدَّةِ وَأَنَا أَعْلَمُ بِمَا أَخْفَيْتُمْ وَمَا أَعْلَنتُمْ ۚ
وَمَن يَفْعَلْهُ مِنكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَوَاءَ السَّبِيلِ﴾
১) হে ১ ঈমানদারগণ,
যদি তোমরা আমার পথে জিহাদ করার জন্য এবং আমার সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে
(জন্মভুমি ছেড়ে ঘর থেকে) বেরিয়ে থাক তাহলে আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধু
হিসেবে গ্রহণ করবে না৷ তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা কর, অথচ যে
সত্য তোমাদের কাছে এসেছে তারা তা মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে৷ তাদের আচরণ
হলো, তারা রসূলকে এবং তোমাদেরকে শুধু এই অপরাধে জন্মভূমি থেকে বহিষ্কার করে
যে, তোমরা তোমাদের রব আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছো৷ তোমরা গোপনে তাদের কাছে
বন্ধুত্বমূলক পত্র পাঠাও৷ অথচ তোমরা গোপনে যা কর এবং প্রকাশ্যে যা করো তা
সবই আমি ভাল করে জানি৷ তোমাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তিই এরূপ করে
নিশ্চিন্তভাবেই সে সত্যপথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে৷
﴿إِن
يَثْقَفُوكُمْ يَكُونُوا لَكُمْ أَعْدَاءً وَيَبْسُطُوا إِلَيْكُمْ
أَيْدِيَهُمْ وَأَلْسِنَتَهُم بِالسُّوءِ وَوَدُّوا لَوْ تَكْفُرُونَ﴾
২)
তাদের আচরণ হলো, তারা যদি তোমাদের কাবু করতে পারে তাহলে তোমাদের সাথে
শত্রুতা করবে এবং হাত ও জিহবা দ্বারা তোমাদের কষ্ট দেবে৷ তারা চায় যে,
কোনক্রমে তোমরা কাফের হয়ে যাও৷২
﴿لَن
تَنفَعَكُمْ أَرْحَامُكُمْ وَلَا أَوْلَادُكُمْ ۚ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
يَفْصِلُ بَيْنَكُمْ ۚ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ﴾
৩) কিয়ামতের দিন না তোমাদের আত্মীয়তার বন্ধন কোন কাজে আসবে না সন্তান-সন্তুতি ৩ কোন কাজে আসবে না৷ সেদিন আল্লাহ তোমাদের পরস্পর বিচ্ছিন্ন করে দেবেন৷ ৪৪ আর তিনিই তোমাদের আমল বা কর্মফল দেখবেন৷ ৫
﴿قَدْ
كَانَتْ لَكُمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِي إِبْرَاهِيمَ وَالَّذِينَ مَعَهُ
إِذْ قَالُوا لِقَوْمِهِمْ إِنَّا بُرَآءُ مِنكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ
مِن دُونِ اللَّهِ كَفَرْنَا بِكُمْ وَبَدَا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ
الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَاءُ أَبَدًا حَتَّىٰ تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ
وَحْدَهُ إِلَّا قَوْلَ إِبْرَاهِيمَ لِأَبِيهِ لَأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ
وَمَا أَمْلِكُ لَكَ مِنَ اللَّهِ مِن شَيْءٍ ۖ رَّبَّنَا عَلَيْكَ
تَوَكَّلْنَا وَإِلَيْكَ أَنَبْنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ﴾
৪) তোমাদের
জন্য ইবরাহীম ও তাঁর সাথীদের মধ্যে একটি উত্তম আদর্শ বর্তমান৷ তিনি তাঁর
কওমকে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছিলেন : আমরা তোমাদের প্রতি এবং আল্লাহকে ছেড়ে
যেসব উপাস্যের উপাসনা তোমরা করে থাক তাদের প্রতি সম্পূর্ণরূপে অসন্তুষ্ট৷
আমরা তোমাদের অস্বীকার করেছি৷৬
আমাদের ও তোমাদের মধ্যে চিরদিনের জন্য শত্রুতা ও বিদ্বেষের সৃষ্টি হয়ে
গিয়েছে- যতদিন তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান না আনবে৷ তবে ইবরাহীমের তার
বাপকে একথা বলা (এর অন্তরভুক্ত নয়) “আমি আপনার জন্য অবশ্যই ক্ষমা প্রার্থনা
করবো৷ তবে আল্লাহর নিকট থেকে আপনার জন্য নিশ্চিত কোন কিছু অর্জন করে নেয়া
আমার আয়ত্বাধীন নয়৷” ৭ (ইবরাহীম
ও ইবরাহীমের দোয়া ছিল :) হে আমাদের রব, তোমার ওপরেই আমরা ভরসা করেছি,
তোমার প্রতিই আমরা রুজু করেছি আর তোমার কাছেই আমাদের ফিরে আসতে হবে৷
﴿رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِّلَّذِينَ كَفَرُوا وَاغْفِرْ لَنَا رَبَّنَا ۖ إِنَّكَ أَنتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ﴾
৫) হে আমাদের রব, আমাদেরকে কাফেরদের জন্য ফিতনা বানিয়ে দিও না৷ ৮ হে আমাদের রব, আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দাও৷ নিসন্দেহে তুমিই পরাক্রমশালী এবং জ্ঞানী৷
﴿لَقَدْ
كَانَ لَكُمْ فِيهِمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُو اللَّهَ
وَالْيَوْمَ الْآخِرَ ۚ وَمَن يَتَوَلَّ فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ الْغَنِيُّ
الْحَمِيدُ﴾
৬) এসব লোকের কর্মপদ্ধতিতে তোমাদের জন্য এবং আল্লাহ ও আখেরাতের দিনের প্রত্যাশী লোকদের জন্য উত্তম আদর্শ রয়েছে৷ ৯ এ থেকে যদি কেউ মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে আল্লাহ স্বয়ংসম্পূর্ণ ও প্রশংসিত৷১০
﴿عَسَى
اللَّهُ أَن يَجْعَلَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ الَّذِينَ عَادَيْتُم مِّنْهُم
مَّوَدَّةً ۚ وَاللَّهُ قَدِيرٌ ۚ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
৭) অসম্ভব নয় যে, আজ তোমরা যাদের শত্রু বানিয়ে নিয়েছো আল্লাহ তা’আলা তাদের ও তোমাদের মধ্যে কোন এক সময় বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দেবেন৷ ১১ আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমতাবান৷ আর তিনি ক্ষমাশীল ও দয়াময়৷
﴿لَّا
يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ
وَلَمْ يُخْرِجُوكُم مِّن دِيَارِكُمْ أَن تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا
إِلَيْهِمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ﴾
৮) যারা দীনের
ব্যাপারে তোমাদের সাথে লড়াই করেনি এবং বাড়ীঘর থেকে তোমাদের তাড়িয়ে দেয়নি
তাদের সাথে সদ্ব্যবহার ও ন্যায় বিচার করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না৷
আল্লাহ ন্যায় বিচারকারীদের পছন্দ করেন৷ ১২
﴿إِنَّمَا
يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ
وَأَخْرَجُوكُم مِّن دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَىٰ إِخْرَاجِكُمْ أَن
تَوَلَّوْهُمْ ۚ وَمَن يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ﴾
৯)
আল্লাহ তোমাদেরকে শুধু তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করছেন যারা দীনের
ব্যাপারে তোমাদের সাথে লড়াই করেছে, বাড়ীঘর থেকে তোমাদের তাড়িয়ে দিয়েছে এবং
তোমাদেরকে তাড়িয়ে দেয়ার ব্যাপারে পরস্পরকে সাহায্য করেছে৷ যারা তাদের সাথে
বন্ধুত্ব করবে তারাই জালেম৷ ১৩
﴿يَا
أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا جَاءَكُمُ الْمُؤْمِنَاتُ مُهَاجِرَاتٍ
فَامْتَحِنُوهُنَّ ۖ اللَّهُ أَعْلَمُ بِإِيمَانِهِنَّ ۖ فَإِنْ
عَلِمْتُمُوهُنَّ مُؤْمِنَاتٍ فَلَا تَرْجِعُوهُنَّ إِلَى الْكُفَّارِ ۖ
لَا هُنَّ حِلٌّ لَّهُمْ وَلَا هُمْ يَحِلُّونَ لَهُنَّ ۖ وَآتُوهُم مَّا
أَنفَقُوا ۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ أَن تَنكِحُوهُنَّ إِذَا
آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ ۚ وَلَا تُمْسِكُوا بِعِصَمِ الْكَوَافِرِ
وَاسْأَلُوا مَا أَنفَقْتُمْ وَلْيَسْأَلُوا مَا أَنفَقُوا ۚ ذَٰلِكُمْ
حُكْمُ اللَّهِ ۖ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ ۚ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ﴾
১০)
হে ঈমানদাররা, ঈমানদার নারীরা যখন হিজরাত করে তোমাদের কাছে আসবে তখন
(তাদের ঈমানদার হওয়ার বিষয়টি) পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নাও৷ তাদের ঈমানের
প্রকৃত অবস্থা অবশ্য আল্লাহই ভাল জানেন৷ অতপর যদি তোমরা বুঝতে পার যে, তারা
সত্যিই ঈমানদার তাহলে তাদেরকে কাফেরদের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দিও না৷ ১৪ না
তারা কাফেরদের জন্য হালাল না কাফেররা তাদের জন্য হালাল৷ তাদের কাফের
স্বামীরা তাদেরকে যে মোহরানা দিয়েছে তা তাদের ফিরিয়ে দাও৷ তাদেরকে মোহরানা
দিয়ে বিয়ে করায় তোমাদের কোন গোনাহ হবে না৷ ১৫ আর
তোমরা নিজেরাও কাফের নারীদেরকে নিজেদের বিয়ের বন্ধনে আটকে রেখো না৷
নিজেদের কাফের স্ত্রীদের তোমরা যে মোহরানা দিয়েছ তা ফেরত চেয়ে নাও৷ আর
কাফেররা তাদের মুসলমান স্ত্রীদের যে মোহরানা দিয়েছে তাও যেন তারা ফেরত চেয়ে
নেয়৷ ১৬ এটি আল্লাহর নির্দেশ৷ তিনি তোমাদের সবকিছুর ফায়সালা করেন৷ আল্লাহ জ্ঞানী ও বিজ্ঞ৷
﴿وَإِن
فَاتَكُمْ شَيْءٌ مِّنْ أَزْوَاجِكُمْ إِلَى الْكُفَّارِ فَعَاقَبْتُمْ
فَآتُوا الَّذِينَ ذَهَبَتْ أَزْوَاجُهُم مِّثْلَ مَا أَنفَقُوا ۚ
وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي أَنتُم بِهِ مُؤْمِنُونَ﴾
১১) তোমাদের
কাফের স্ত্রীদেরকে দেয়া মোহরানার কিছু অংশ যদি তোমরা ফেরত না পাও এবং পরে
যদি তোমরা সুযোগ পেয়ে যাও তাহলে যাদের স্ত্রীরা ওদিকে রয়ে গিয়েছে তাদেরকে
দেয়া মোহরানার সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে দাও৷১৭ যে আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছো তাকে ভয় করে চলো৷
﴿يَا
أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا جَاءَكَ الْمُؤْمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ عَلَىٰ
أَن لَّا يُشْرِكْنَ بِاللَّهِ شَيْئًا وَلَا يَسْرِقْنَ وَلَا يَزْنِينَ
وَلَا يَقْتُلْنَ أَوْلَادَهُنَّ وَلَا يَأْتِينَ بِبُهْتَانٍ
يَفْتَرِينَهُ بَيْنَ أَيْدِيهِنَّ وَأَرْجُلِهِنَّ وَلَا يَعْصِينَكَ فِي
مَعْرُوفٍ ۙ فَبَايِعْهُنَّ وَاسْتَغْفِرْ لَهُنَّ اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ
غَفُورٌ رَّحِيمٌ﴾
১২) হে নবী, ঈমানদার নারীগণ যখন তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণের জন্য আসে ১৮ এবং এ মর্মে প্রতিশ্রুতি দেয় যে, তারা আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না, চুরি করবে না, ১৯ যিনা করবে না, নিজেদের সন্তানদের হত্যা করবে না৷ ২০ সন্তান সম্পর্কে কোন অপবাদ তৈরী করে আনবে না৷ ২১ এবং কোন ভাল কাজে তোমার অবাধ্য হবে না৷ ২২ তাহলে তাদের থেকে বাইয়াত গ্রহণ করো ২৩ এবং তাদের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করো৷ নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও মেহেরবান৷
﴿يَا
أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَوَلَّوْا قَوْمًا غَضِبَ اللَّهُ
عَلَيْهِمْ قَدْ يَئِسُوا مِنَ الْآخِرَةِ كَمَا يَئِسَ الْكُفَّارُ مِنْ
أَصْحَابِ الْقُبُورِ﴾
১৩) হে ঈমানদারগণ, যাদের ওপর আল্লাহ গযব নাযিল
করেছেন তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না৷ আখেরাত সম্পর্কে তারা ঠিক
তেমনি নিরাশ যেমন কবরস্থ কাফেরা নিরাশ৷ ২৪
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন