পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬

আল আদিয়াত

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
وَالْعَادِيَاتِ ضَبْحًا
১) কসম সেই (ঘোড়া ) গুলোর যারা হ্রেষারব সহকারে দৌড়ায়৷

﴿فَالْمُورِيَاتِ قَدْحًا
২) তারপর (খুরের আঘাতে) আগুনের ফুলকি ঝরায়৷

﴿فَالْمُغِيرَاتِ صُبْحًا
৩) তারপর অতর্কিত আক্রমণ চালায় প্রভাতকালে৷

﴿فَأَثَرْنَ بِهِ نَقْعًا
৪) তারপর এ সময় ধূলা উড়ায়

﴿فَوَسَطْنَ بِهِ جَمْعًا
৫) এবং এ অবস্থায় কোন জনপদের ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়ে৷

﴿إِنَّ الْإِنسَانَ لِرَبِّهِ لَكَنُودٌ
৬) আসলে মানুষ তার রবের প্রতি বড়ই অকৃতজ্ঞ৷

﴿وَإِنَّهُ عَلَىٰ ذَٰلِكَ لَشَهِيدٌ
৭) আর সে নিজেরই এর সাক্ষী৷

﴿وَإِنَّهُ لِحُبِّ الْخَيْرِ لَشَدِيدٌ
৮) অবশ্য সে ধন দৌলতের মোহে খুব বেশী মত্ত৷

﴿أَفَلَا يَعْلَمُ إِذَا بُعْثِرَ مَا فِي الْقُبُورِ
৯) তবে কি সে সেই সময়ের কথা জানে না  যখন কবরের মধ্যে যা কিছু ( দাফন করা ) আছে সেসব বের করে আনা হবে

﴿وَحُصِّلَ مَا فِي الصُّدُورِ
১০) এবং বুকের মধ্যে যা কিছু ( লুকানো ) আছে সব বের করে এনে যাচাই করা হবে ?

﴿إِنَّ رَبَّهُم بِهِمْ يَوْمَئِذٍ لَّخَبِيرٌ
১১) অবশ্য সেদিন তাদের রব তাদের সম্পর্কে ভালোভাবেই অবগত থাকবেন৷

আল যিলযাল

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
 إِذَا زُلْزِلَتِ الْأَرْضُ زِلْزَالَهَا
১) যখন পৃথিবীকে প্রবলবেগে ঝাঁকুনি দেয়া হবে৷
﴿وَأَخْرَجَتِ الْأَرْضُ أَثْقَالَهَا
২) পৃথিবী তার ভেতরের সমস্ত ভার বাইরে বের করে দেবে৷
﴿وَقَالَ الْإِنسَانُ مَا لَهَا
৩) আর মানুষ বলবে , এর কী হয়েছে ?
﴿يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا
৪) সেদিন সে তার নিজের ( ওপর যা কিছু ঘটেছে সেই ) সব অবস্থা বর্ণনা করবে ৷
﴿بِأَنَّ رَبَّكَ أَوْحَىٰ لَهَا﴾
৫) কারণ তোমার রব তাকে ( এমটি করার) হুকুম দিয়ে থাকবেন৷
﴿يَوْمَئِذٍ يَصْدُرُ النَّاسُ أَشْتَاتًا لِّيُرَوْا أَعْمَالَهُمْ
৬) সেদিন লোকেরা ভিন্ন ভিন্ন অবস্থায় ফিরে আসবে ,   যাতে তাদের কৃতকর্ম তাদেরকে দেখানো যায় ৷
﴿فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ
৭) তারপর যে অতি অল্প পরিমাণ ভালো কাজ করবে সে তা দেখে নেবে
﴿وَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ
৮) এবং যে অতি অল্প পরিমাণ খারাপ কাজ করবে সে তা দেখে নেবে৷

আল বায়্যেনা

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
لَمْ يَكُنِ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِينَ مُنفَكِّينَ حَتَّىٰ تَأْتِيَهُمُ الْبَيِّنَةُ
১) আহলি কিতাব ও মুশরিকদের  মধ্যে যারা কাফের ছিল  তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ না আসা পর্যন্ত তারা ( নিজেদের কুফরী থেকে ) বিরত থাকতে প্রস্তুত ছিল না৷
﴿رَسُولٌ مِّنَ اللَّهِ يَتْلُو صُحُفًا مُّطَهَّرَةً
২) ( অর্থাৎ ) আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন রসূল  যিনি পবিত্র সহীফা পড়ে শুনাবেন ,
﴿فِيهَا كُتُبٌ قَيِّمَةٌ
৩) যাতে একেবারে সঠিক কথা লেখা আছে৷
﴿وَمَا تَفَرَّقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءَتْهُمُ الْبَيِّنَةُ
৪) প্রথমে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে তো বিভেদ সৃষ্টি হলো তাদের কাছে ( সত্য পথের ) সুস্পষ্ট প্রমাণ এসে যাওয়ার পর৷
﴿وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ ۚ وَذَٰلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ
৫) তাদেরকে তো এ ছাড়া আর কোন হুকুম দেয়া হয়নি যে , তারা নিজেদের দীনকে একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত করে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদাত করবে , নামায কায়েম করবে ও যাকাত দেবে, এটিই যথার্থ সত্য ও সঠিক দীন৷
﴿إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِينَ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ أُولَٰئِكَ هُمْ شَرُّ الْبَرِيَّةِ
৬) আহলি কিতাব ও মুশরিকদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে তারা নিশ্চিতভাবে জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে ৷ তারা সৃষ্টির অধম ৷
﴿إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أُولَٰئِكَ هُمْ خَيْرُ الْبَرِيَّةِ
৭) যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তারা নিশ্চিত ভাবে সৃষ্টির সেরা ৷১০
﴿جَزَاؤُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ جَنَّاتُ عَدْنٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ۖ رَّضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ ۚ ذَٰلِكَ لِمَنْ خَشِيَ رَبَّهُ
৮) তাদের পুরষ্কার রয়েছে তাদের রবের কাছে চিরস্থায়ী জান্নাত, যার নিম্নদেশে ঝরণাধারা প্রবাহিত ৷ সেখানে তারা চিরকাল থাকবে ৷ আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট ৷ এসব সে ব্যক্তির জন্য যে তার রবকে ভয় করে ৷১১

আল কাদর

بِّسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ
১) আমি এ (কুরআন )নাযিল করেছি কদরের রাতে ৷
﴿وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ
২) তুমি কি জানো ,কদরের রাত কি ?
﴿لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ
৩) কদরের রাত হাজার মাসের চাইতেও বেশী ভালো ৷
﴿تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمْرٍ
৪) ফেরেশতারা ও রূহ  এই রাতে তাদের রবের অনুমতিক্রমে প্রত্যেকটি হুকুম নিয়ে নাযিল হয়৷
﴿سَلَامٌ هِيَ حَتَّىٰ مَطْلَعِ الْفَجْرِ﴾
৫) এ রাতটি পুরোপুরি শান্তিময় ফজরের উদয় পর্যন্ত৷

আল আলাক

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ
১) পড়ো ( হে নবী ) , তোমার রবের নামে ৷  যিনি সৃষ্টি করেছেন৷
﴿خَلَقَ الْإِنسَانَ مِنْ عَلَقٍ
২) জমাট বাঁধা রক্তের দলা থেকে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন৷
﴿اقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ
৩) পড়ো , এবং তোমার রব বড় মেহেরবান ,
﴿الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ
৪) যিনি কলমের সাহায্যে জ্ঞান শিখিয়েছেন৷
﴿عَلَّمَ الْإِنسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ
৫) মানুষকে এমন জ্ঞান দিয়েছেন , যা সে জানতো না৷
﴿كَلَّا إِنَّ الْإِنسَانَ لَيَطْغَىٰ
৬) কখনই নয় ,  মানুষ সীমালংঘন করে৷
﴿أَن رَّآهُ اسْتَغْنَىٰ
৭) কারণ সে নিজেকে দেখে অভাবমুক্ত৷
﴿إِنَّ إِلَىٰ رَبِّكَ الرُّجْعَىٰ
৮) (অথচ) নিশ্চিতভাবেই তোমার রবের দিকেই ফিরে আসতে হবে৷
﴿أَرَأَيْتَ الَّذِي يَنْهَىٰ
৯) তুমি কি দেখেছো সেই ব্যক্তিকে
﴿عَبْدًا إِذَا صَلَّىٰ
১০) যে এক বান্দাকে নিষেধ করে যখন সে নামায পড়ে৷১০
﴿أَرَأَيْتَ إِن كَانَ عَلَى الْهُدَىٰ
১১) তুমি কি মনে করো , যদি ( সেই বান্দা ) সঠিক পথে থাকে
﴿أَوْ أَمَرَ بِالتَّقْوَىٰ﴾
১২) অথবা তাকওয়ার নির্দেশ দেয়?
﴿أَرَأَيْتَ إِن كَذَّبَ وَتَوَلَّىٰ﴾
১৩) তুমি কি মনে করো , যদি ( এই নিষেধকারী সত্যের প্রতি ) মিথ্যা আরোপ করে এবং মুখ ফিরিয়ে নেয় ?
﴿أَلَمْ يَعْلَم بِأَنَّ اللَّهَ يَرَىٰ﴾
১৪) সে কি জানে না , আল্লাহ দেখছেন ? ১১
﴿كَلَّا لَئِن لَّمْ يَنتَهِ لَنَسْفَعًا بِالنَّاصِيَةِ﴾
১৫) কখনই নয় , ১২ যদি সে বিরত না হয় তাহলে আমি তার কপালের দিকে চুল ধরে তাকে টানবো ,
﴿نَاصِيَةٍ كَاذِبَةٍ خَاطِئَةٍ﴾
১৬) সেই কপালের চুল ( ওয়ালা ) যে মিথ্যুক ও কঠিন অপরাধকারী৷ ১৩
﴿فَلْيَدْعُ نَادِيَهُ﴾
১৭) সে তার সমর্থক দলকে ডেকে নিক১৪
﴿سَنَدْعُ الزَّبَانِيَةَ﴾
১৮) আমি ডেকে নিই আযাবের ফেরেশতাদেরকে ৷ ১৫
﴿كَلَّا لَا تُطِعْهُ وَاسْجُدْ وَاقْتَرِب ۩﴾
১৯) কখনই নয়, তার কথা মেনে নিয়ো না , তুমি সিজদা করো এবং ( তোমার রবের ) নৈকট্য অর্জন করো৷১৬

আততিন

بِّسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ
১) তীন ও যায়তুন,
﴿وَطُورِ سِينِينَ
২) সিনাই পর্বত
﴿وَهَٰذَا الْبَلَدِ الْأَمِينِ
৩) এবং এই নিরাপদ নগরীর (মক্কা) কসম৷
﴿لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ
৪) আমি মানুষকে পয়দা করেছি সর্বোত্তম কাঠামোয় ৷
﴿ثُمَّ رَدَدْنَاهُ أَسْفَلَ سَافِلِينَ
৫) তারপর তাকে উল্টো ফিরিয়ে নীচতমদেরও নীচে পৌঁছিয়ে দিয়েছি
﴿إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فَلَهُمْ أَجْرٌ غَيْرُ مَمْنُونٍ
৬) তাদেরকে ছাড়া যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করতে থাকে৷ কেননা তাদের রয়েছে এমন পুরস্কার যা কোনদিন শেষ হবে না৷
﴿فَمَا يُكَذِّبُكَ بَعْدُ بِالدِّينِ
৭) কাজেই ( হে নবী !) এরপর পুরস্কার ও শাস্তির ব্যাপারে কে তোমাকে মিথ্যাবাদী বলতে পারে ?
﴿أَلَيْسَ اللَّهُ بِأَحْكَمِ الْحَاكِمِينَ
৮) আল্লাহ কি সব শাসকের চাইতে বড় শাসক নন ?

আলাম নাশরাহ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ
১) হে নবী ! আমি কি তোমার বক্ষদেশ তোমার জন্য উন্মুক্ত করে দেইনি ?
﴿وَوَضَعْنَا عَنكَ وِزْرَكَ
২) আমি তোমার ওপর থেকে ভারী বোঝা নামিয়ে দিয়েছি ,
﴿الَّذِي أَنقَضَ ظَهْرَكَ
৩) যা তোমার কোমর ভেঙ্গে দিচ্ছিল৷
﴿وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ
৪) আর তোমার জন্য তোমার খ্যাতির কথা বুলন্দ করে দিয়েছি৷
﴿فَإِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا
৫) প্রকৃত কথা এই যে, সংকীর্ণতার সাথে প্রশস্ততাও রয়েছে৷
﴿إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا
৬) আসলে সংকীর্ণতার সাথে আছে প্রশস্ততাও ৷
﴿فَإِذَا فَرَغْتَ فَانصَبْ
৭) কাজেই যখনই অবসর পাও ইবাদাতের কঠোর শ্রমে লেগে যাও
﴿وَإِلَىٰ رَبِّكَ فَارْغَب
৮) এবং নিজের রবেরই প্রতি মনোযোগ দাও৷

আদ দুহা

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
وَالضُّحَىٰ
১) উজ্জ্বল দিনের কসম
﴿وَاللَّيْلِ إِذَا سَجَىٰ﴾
২) এবং রাতের কসম যখন তা নিঝুম হয়ে যায় ৷
﴿مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلَىٰ﴾
৩) ( হে নবী !) তোমার রব তোমাকে কখনো পরিত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি অসন্তুষ্টও হননি৷
﴿وَلَلْآخِرَةُ خَيْرٌ لَّكَ مِنَ الْأُولَىٰ﴾
৪) নিসন্দেহে তোমার জন্য পরবর্তী যুগ পূর্ববর্তী যুগের চেয়ে ভালো ৷
﴿وَلَسَوْفَ يُعْطِيكَ رَبُّكَ فَتَرْضَىٰ﴾
৫) আর শীঘ্রই তোমার রব তোমাকে এত দেবেন যে , তুমি খুশী হয়ে যাবে৷
﴿أَلَمْ يَجِدْكَ يَتِيمًا فَآوَىٰ﴾
৬) তিনি কি তোমাকে এতিম হিসেবে পাননি ?তারপর তোমাকে আশ্রয় দেননি ?
﴿وَوَجَدَكَ ضَالًّا فَهَدَىٰ﴾
৭) তিনি তোমাকে পথ না পাওয়া অবস্থায় পান , তারপর তিনিই পথ দেখান৷
﴿وَوَجَدَكَ عَائِلًا فَأَغْنَىٰ﴾
৮) তিনি তোমাকে নিঃস্ব অবস্থায় পান , তারপর তোমাকে ধনী করেন৷
﴿فَأَمَّا الْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ﴾
৯) কাজেই এতিমের প্রতি কঠোর হয়ো না৷
﴿وَأَمَّا السَّائِلَ فَلَا تَنْهَرْ﴾
১০) প্রার্থীকে তিরস্কার করো না ৷ ১০
﴿وَأَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ﴾
১১) আর নিজের রবের নিয়ামত প্রকাশ করো৷ ১১

আল লাইল

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَىٰ
১) রাতের কসম যখন তা ঢেকে যায়৷
﴿وَالنَّهَارِ إِذَا تَجَلَّىٰ﴾
২) দিনের কসম যখন তা উজ্জ্বল হয়৷
﴿وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْأُنثَىٰ﴾
৩) আর সেই সত্তার কসম যিনি পুরুষ ও স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন ৷
﴿إِنَّ سَعْيَكُمْ لَشَتَّىٰ﴾
৪) আসলে তোমাদের প্রচেষ্টা নানা ধরনের৷
﴿فَأَمَّا مَنْ أَعْطَىٰ وَاتَّقَىٰ﴾
৫) কাজেই যে ( আল্লাহর পথে ) ধন সম্পদ দান করেছে ,
﴿وَصَدَّقَ بِالْحُسْنَىٰ﴾
৬) ( আল্লাহর নাফরমানি থেকে ) দূরে থেকেছে
﴿فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْيُسْرَىٰ﴾
৭) এবং সৎবৃত্তিতে সত্য বলে মেনে নিয়েছে , তাকে আমি সহজ পথের সুযোগ - সুবিধা দেবো৷
﴿وَأَمَّا مَن بَخِلَ وَاسْتَغْنَىٰ﴾
৮) আর যে কৃপণতা করেছে , আল্লাহ থেকে বেপরোয়া হয়ে গেছে
﴿وَكَذَّبَ بِالْحُسْنَىٰ﴾
৯) এবং সৎবৃত্তিকে মিথ্যা গণ্য করেছে ,
﴿فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرَىٰ﴾
১০) তাকে আমি কঠিন পথের সুযোগ - সুবিধা দেবো৷
﴿وَمَا يُغْنِي عَنْهُ مَالُهُ إِذَا تَرَدَّىٰ﴾
১১) আর তার ধন - সম্পদ তার কোন কাজে লাগবে যখন সে ধবংস হয়ে যাবে ?
﴿إِنَّ عَلَيْنَا لَلْهُدَىٰ﴾
১২) নিসন্দেহে পথনির্দেশ দেয়া তো আমার দায়িত্বের অন্তরভুক্ত৷
﴿وَإِنَّ لَنَا لَلْآخِرَةَ وَالْأُولَىٰ﴾
১৩) আর আসলে আমি তো আখেরাত ও দুনিয়া উভয়েরই মালিক৷
﴿فَأَنذَرْتُكُمْ نَارًا تَلَظَّىٰ﴾
১৪) তাই আমি তোমাদের সাবধান করে দিয়েছি জ্বলন্ত আগুন থেকে৷
﴿لَا يَصْلَاهَا إِلَّا الْأَشْقَى﴾
১৫) যে চরম হতভাগ্য ব্যক্তি মিথ্যা আরোপ করেছে ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে
﴿الَّذِي كَذَّبَ وَتَوَلَّىٰ﴾
১৬) সে ছাড়া আর কেউ তাতে ঝলসে যাবে না৷
﴿وَسَيُجَنَّبُهَا الْأَتْقَى﴾
১৭) আর যে পরম মুত্তাকী ব্যক্তি পবিত্রতা অর্জনের জন্য নিজের ধন - সম্পদ দান করে
﴿الَّذِي يُؤْتِي مَالَهُ يَتَزَكَّىٰ﴾
১৮) তাকে তা থেকে দূরে রাখা হবে৷
﴿وَمَا لِأَحَدٍ عِندَهُ مِن نِّعْمَةٍ تُجْزَىٰ﴾
১৯) তার প্রতি কারো কোন অনুগ্রহ নেই যার প্রতিদান তাকে দিতে হবে৷
﴿إِلَّا ابْتِغَاءَ وَجْهِ رَبِّهِ الْأَعْلَىٰ﴾
২০) সেতো কেবলমাত্র নিজের রবের সন্তুষ্টিলাভের জন্য এ কাজ করে ৷১০
﴿وَلَسَوْفَ يَرْضَىٰ﴾
২১) আর তিনি অবশ্যি ( তার প্রতি ) সন্তুষ্ট হবেন৷১১

আশ শামস

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا
১) সূর্যের ও তার রোদের কসম ৷
﴿وَالْقَمَرِ إِذَا تَلَاهَا﴾
২) চাঁদের কসম যখন তা সূর্যের পেছনে পেছনে আসে৷
﴿وَالنَّهَارِ إِذَا جَلَّاهَا﴾
৩) দিনের কসম যখন তা (সূর্যকে ) প্রকাশ করে৷
﴿وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَاهَا﴾
৪) রাতের কসম যখন তা ( সূর্যকে ) ঢেকে নেয়৷
﴿وَالسَّمَاءِ وَمَا بَنَاهَا﴾
৫) আকাশের ও সেই সত্তার কসম যিনি তাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন৷
﴿وَالْأَرْضِ وَمَا طَحَاهَا﴾
৬) পৃথিবীর ও সেই সত্তার কসম যিনি তাকে বিছিয়েছেন৷
﴿وَنَفْسٍ وَمَا سَوَّاهَا﴾
৭) মানুসের নফসের ও সেই সত্তার কসম যিনি তাকে ঠিকভাবে গঠন করেছেন৷
﴿فَأَلْهَمَهَا فُجُورَهَا وَتَقْوَاهَا﴾
৮) তারপর তার পাপ ও তার তাকওয়া তার প্রতি ইলহাম করেছেন৷
﴿قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّاهَا﴾
৯) নিসন্দেহে সফল হয়ে গেছে সেই ব্যক্তির নফসকে পরিশুদ্ধ করেছে
﴿وَقَدْ خَابَ مَن دَسَّاهَا﴾
১০) এবং যে তাকে দাবিয়ে দিয়েছে সে ব্যর্থ হয়েছে৷
﴿كَذَّبَتْ ثَمُودُ بِطَغْوَاهَا﴾
১১) সামূদ জাতি  বিদ্রোহের কারণে মিথ্যা আরোপ করলো৷
﴿إِذِ انبَعَثَ أَشْقَاهَا﴾
১২) যখন সেই জাতির সবচেয়ে বড় হতভাগ্য লোকটি ক্ষেপে গেলো,
﴿فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ نَاقَةَ اللَّهِ وَسُقْيَاهَا﴾
১৩) আল্লাহর রসূল তাদেরকে বললো : সাবধান ! আল্লাহর উটনীকে স্পর্শ করো না এবং তাকে পানি পান করতে (বাধা দিয়ো না)
﴿فَكَذَّبُوهُ فَعَقَرُوهَا فَدَمْدَمَ عَلَيْهِمْ رَبُّهُم بِذَنبِهِمْ فَسَوَّاهَا﴾
১৪) কিন্তু তারা তার কথা প্রত্যাখ্যান করলো এবং উটনীটিকে মেরে ফেললো৷১০  অবশেষে তাদের গোনাহের কারণে তাদের রব ওপর বিপদের পাহাড় চাপিরে দিয়ে তাদেরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিলেন৷
﴿وَلَا يَخَافُ عُقْبَاهَا﴾
১৫) আর তিনি (তাঁর এই কাজের )খারাপ পরিণতির কোন ভয়ই করেন না৷১১

আল বালাদ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
لَا أُقْسِمُ بِهَٰذَا الْبَلَدِ
১) না, আমি কসম খাচ্ছি এই নগরের৷
﴿وَأَنتَ حِلٌّ بِهَٰذَا الْبَلَدِ﴾
২) আর অবস্থা হচ্ছে এই যে ( হে নবী !) তোমাকে এই নগরে হালাল করে নেয়া হয়েছে৷
﴿وَوَالِدٍ وَمَا وَلَدَ﴾
৩) কসম খাচ্ছি বাপের এবং তার ঔরসে যে সন্তান জন্ম নিয়েছে তার ৷
﴿لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ فِي كَبَدٍ﴾
৪) আসলে আমি মানুষকে কষ্ট ও পরিশ্রমের মধ্যে সৃষ্টি করেছি৷
﴿أَيَحْسَبُ أَن لَّن يَقْدِرَ عَلَيْهِ أَحَدٌ﴾
৫) সে কি মনে করে রেখেছে , তার ওপর কেউ জোর খাটাতে পারবে না ?
﴿يَقُولُ أَهْلَكْتُ مَالًا لُّبَدًا﴾
৬) সে বলে , আমি প্রচুর ধন সম্পদ উড়িয়ে দিয়েছি৷
﴿أَيَحْسَبُ أَن لَّمْ يَرَهُ أَحَدٌ﴾
৭) সে কি মনে করে কেউ তাকে দেখেনি ?
﴿أَلَمْ نَجْعَل لَّهُ عَيْنَيْنِ﴾
৮) আমি কি তাকে দু’টি চোখ,
﴿وَلِسَانًا وَشَفَتَيْنِ﴾
৯) একটি জিহ্বা ও দু’টি ঠোঁট দেইনি ?
﴿وَهَدَيْنَاهُ النَّجْدَيْنِ﴾
১০) আমি কি তাকে দু’টি সুস্পষ্ট পথ দেখাইনি?১০
﴿فَلَا اقْتَحَمَ الْعَقَبَةَ﴾
১১) কিন্তু সে দুর্গম গিরিপথ অতিক্রম করার সহস করেনি৷ ১১
﴿وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْعَقَبَةُ﴾
১২) তুমি কী জানো সেই দুর্গম গিরিপথটি কি ?
﴿فَكُّ رَقَبَةٍ﴾
১৩) কোন গলাকে দাসত্বমুক্ত করা
﴿أَوْ إِطْعَامٌ فِي يَوْمٍ ذِي مَسْغَبَةٍ﴾
১৪) অথবা অনাহারের দিন
﴿يَتِيمًا ذَا مَقْرَبَةٍ﴾
১৫) কোন নিকটবর্তী এতিম
﴿أَوْ مِسْكِينًا ذَا مَتْرَبَةٍ﴾
১৬) বা ধূলি মলিন মিসকিনকে খাবার খাওয়ানো৷১২
﴿ثُمَّ كَانَ مِنَ الَّذِينَ آمَنُوا وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ وَتَوَاصَوْا بِالْمَرْحَمَةِ﴾
১৭) তারপর ( এই সংগে ) তাদের মধ্যে শামিল হওয়া যারা ঈমান এনেছে ১৩ এবং যারা পরস্পরকে সবর ও ( আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি ) রহম করার উপদেশ দেয়৷১৪
﴿أُولَٰئِكَ أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ﴾
১৮) এরাই ডানপন্থী ৷
﴿وَالَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِنَا هُمْ أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ﴾
১৯) আর যারা আমার আয়াত মানতে অস্বীকার করেছে তারা বামপন্থী ৷১৫
﴿عَلَيْهِمْ نَارٌ مُّؤْصَدَةٌ﴾
২০) এদের ওপর আগুন ছেয়ে থাকবে৷১৬

আল ফজর

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
وَالْفَجْرِ
১) ফজরের কসম,
﴿وَلَيَالٍ عَشْرٍ﴾
২) দশটি রাতের জোড় ও বেজোড়ের
﴿وَالشَّفْعِ وَالْوَتْرِ﴾
৩) এবং রাতের কসম
﴿وَاللَّيْلِ إِذَا يَسْرِ﴾
৪) যখন তা বিদায় নিতে থাকে ৷
﴿هَلْ فِي ذَٰلِكَ قَسَمٌ لِّذِي حِجْرٍ﴾
৫) এর মধ্যে কোন বুদ্ধিমানের জন্য কি কোন কসম আছে?
﴿أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِعَادٍ﴾
৬) তুমি কি দেখনি
﴿إِرَمَ ذَاتِ الْعِمَادِ﴾
৭) তোমার রব সুউচ্চ স্তম্ভের অধিকারী আদে - ইরামের সাথে কি আচরণ করেছেন ,
﴿الَّتِي لَمْ يُخْلَقْ مِثْلُهَا فِي الْبِلَادِ﴾
৮) যাদের মতো কোন জাতি দুনিয়ার কোন দেশে সৃষ্টি করা হয়নি ?
﴿وَثَمُودَ الَّذِينَ جَابُوا الصَّخْرَ بِالْوَادِ﴾
৯) আর সামূদের সাথে , যারা উপত্যকায় পাথর কেটে গৃহ নির্মাণ করেছিল ?
﴿وَفِرْعَوْنَ ذِي الْأَوْتَادِ﴾
১০) আর কীলকধারী ফেরাউনের  সাথে ?
﴿الَّذِينَ طَغَوْا فِي الْبِلَادِ﴾
১১) এরা দুনিয়ায় বিভিন্ন দেশে বড়ই সীমালংঘন করেছিল
﴿فَأَكْثَرُوا فِيهَا الْفَسَادَ﴾
১২) এবং সেখানে বহু বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল৷
﴿فَصَبَّ عَلَيْهِمْ رَبُّكَ سَوْطَ عَذَابٍ﴾
১৩) অবশেষে তোমার রব তাদের ওপর আযাবের কশাঘাত করলেন৷
﴿إِنَّ رَبَّكَ لَبِالْمِرْصَادِ﴾
১৪) আসলে তোমার রব ওঁৎ পেতে আছেন ৷
﴿فَأَمَّا الْإِنسَانُ إِذَا مَا ابْتَلَاهُ رَبُّهُ فَأَكْرَمَهُ وَنَعَّمَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَكْرَمَنِ﴾
১৫) কিন্তু  মানুষের অবস্থা হচ্ছে এই যে , তার রব যখন তাকে পরীক্ষায় ফেলেন এবং তাকে সম্মান ও নিয়ামত দান করেন তখন সে বলে , আমার রব আমাকে সম্মানিত করেছেন৷
﴿وَأَمَّا إِذَا مَا ابْتَلَاهُ فَقَدَرَ عَلَيْهِ رِزْقَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَهَانَنِ﴾
১৬) আবার যখন তিনি তাকে পরীক্ষায় ফেলেন এবং তার রিযিক তার জন্য সংকীর্ণ করে দেন তখন সে বলে , আমার রব আমাকে হেয় করেছেন৷
﴿كَلَّا ۖ بَل لَّا تُكْرِمُونَ الْيَتِيمَ﴾
১৭) কখনোই নয় , ১০ বরং তোমরা এতিমের সাথে সম্মানজনক ব্যবহার কর না ১১
﴿وَلَا تَحَاضُّونَ عَلَىٰ طَعَامِ الْمِسْكِينِ﴾
১৮) এবং মিসকীনকে খাওয়াবার জন্য পরস্পরকে উৎসাহিত কর না ৷ ১২
﴿وَتَأْكُلُونَ التُّرَاثَ أَكْلًا لَّمًّا﴾
১৯) তোমরা মীরাসের সব ধন সম্পদ সম্পূর্ণরূপে খেয়ে ফেলো১৩
﴿وَتُحِبُّونَ الْمَالَ حُبًّا جَمًّا﴾
২০) এবং এই ধন সম্পদের প্রেমে তোমরা মারাত্মকভাবে বাঁধা পড়েছ৷১৪
﴿كَلَّا إِذَا دُكَّتِ الْأَرْضُ دَكًّا دَكًّا﴾
২১) কখনই নয় , ১৫ পৃথিবীকে যখন চূর্ণবিচূর্ণ করে বালুকাময় করে দেয়া হবে
﴿وَجَاءَ رَبُّكَ وَالْمَلَكُ صَفًّا صَفًّا﴾
২২) এবং তোমার রব এমন অবস্থায় দেখা দেবেন৷১৬ যখন ফেরেশতারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে৷
﴿وَجِيءَ يَوْمَئِذٍ بِجَهَنَّمَ ۚ يَوْمَئِذٍ يَتَذَكَّرُ الْإِنسَانُ وَأَنَّىٰ لَهُ الذِّكْرَىٰ﴾
২৩) সেদিন জাহান্নামকে সামনে আনা হবে৷
﴿يَقُولُ يَا لَيْتَنِي قَدَّمْتُ لِحَيَاتِي﴾
২৪) সেদিন মানুষ বুঝবে কিন্তু তার বুঝতে পারায় কী লাভ ? ১৭ সে বলবে, হায়, যদি আমি নিজের জীবনের জন্য কিছু আগাম ব্যবস্থা করতাম !
﴿فَيَوْمَئِذٍ لَّا يُعَذِّبُ عَذَابَهُ أَحَدٌ﴾
২৫) সেদিন আল্লাহ যে শাস্তি দেবেন তেমন শাস্তি কেউ দিতে পারবে না৷
﴿وَلَا يُوثِقُ وَثَاقَهُ أَحَدٌ﴾
২৬) এবং আল্লাহ যেমন বাঁধবেন আর কেউ তেমন বাঁধতে পারবে না৷
﴿يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ﴾
২৭) ( অন্য দিকে বলা হবে ) হে প্রশান্ত আত্মা !১৮
﴿ارْجِعِي إِلَىٰ رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً﴾
২৮) চলো তোমার রবের দিকে , ১৯ এমন অবস্থায় যে তুমি ( নিজের শুভ পরিণতিতে ) সন্তুষ্ট ( এবং তোমরা রবের প্রিয়পাত্র৷
﴿فَادْخُلِي فِي عِبَادِي﴾
২৯) শামিল হয়ে যাও আমার ( নেক ) বান্দাদের মধ্যে
﴿وَادْخُلِي جَنَّتِي﴾
৩০) এবং প্রবেশ করো আমার জান্নাতে৷

আল গাশিয়া

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ الْغَاشِيَةِ
১) তোমার কাছে আচ্ছন্নকারী বিপদের খবর এসে পৌঁছেছে কি ?
﴿وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ خَاشِعَةٌ﴾
২) কিছু চেহারা  সেদিন হবে ভীত কাতর ,
﴿عَامِلَةٌ نَّاصِبَةٌ﴾
৩) কঠোর পরিশ্রম রত , ক্লান্ত - পরিশ্রন্ত ৷
﴿تَصْلَىٰ نَارًا حَامِيَةً﴾
৪) জ্বলন্ত আগুনে ঝলসে যেতে থাকবে৷
﴿تُسْقَىٰ مِنْ عَيْنٍ آنِيَةٍ﴾
৫) ফুটন্ত ঝরণার পানি তাদেরকে দেয়া হবে পান করার জন্য৷
﴿لَّيْسَ لَهُمْ طَعَامٌ إِلَّا مِن ضَرِيعٍ﴾
৬) তাদের জন্য কাঁটাওয়ালা শুকনো ঘাস ছাড়া আর কোন খাদ্য থাকবে না৷
﴿لَّا يُسْمِنُ وَلَا يُغْنِي مِن جُوعٍ﴾
৭) তা তাদেরকে পুষ্ট করবে না এবং ক্ষুধাও মেটাবে না৷
﴿وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَّاعِمَةٌ﴾
৮) কিছু চেহারা সেদিন আলোকোজ্জ্বল হবে৷
﴿لِّسَعْيِهَا رَاضِيَةٌ﴾
৯) নিজেদের কর্ম সাফল্যে আনন্দিত হবে৷
﴿فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٍ﴾
১০) উচ্চ মর্যাদার জান্নাতে অবস্থান করবে৷
﴿لَّا تَسْمَعُ فِيهَا لَاغِيَةً﴾
১১) সেখানে কোন বাজে কথা শুনবে না৷
﴿فِيهَا عَيْنٌ جَارِيَةٌ﴾
১২) যেখানে থাকবে বহমান ঝরণাধারা ৷
﴿فِيهَا سُرُرٌ مَّرْفُوعَةٌ﴾
১৩) সেখানে উঁচু আসন থাকবে ,
﴿وَأَكْوَابٌ مَّوْضُوعَةٌ﴾
১৪) পানপাত্রসমূহ থাকবে ৷
﴿وَنَمَارِقُ مَصْفُوفَةٌ﴾
১৫) সারি সারি বালিশ সাজানো থাকবে
﴿وَزَرَابِيُّ مَبْثُوثَةٌ﴾
১৬) এবং উৎকৃষ্ট বিছানা পাতা থাকবে৷
﴿أَفَلَا يَنظُرُونَ إِلَى الْإِبِلِ كَيْفَ خُلِقَتْ﴾
১৭) (এরা মানছে না ) তাহলে কি এরা উটগুলো দেখছে না , কিভাবে তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে ?
﴿وَإِلَى السَّمَاءِ كَيْفَ رُفِعَتْ﴾
১৮) আকাশ দেখছে না , কিভাবে তাকে উঠানো হয়েছে ?
﴿وَإِلَى الْجِبَالِ كَيْفَ نُصِبَتْ﴾
১৯) পাহাড়গুলো দেখছে না , কিভাবে তাদেরকে শক্তভাবে বসানো হয়েছে ?
﴿وَإِلَى الْأَرْضِ كَيْفَ سُطِحَتْ﴾
২০) আর যমীনকে দেখছে না ,কিভাবে তাকে বিছানো হয়েছে ?
﴿فَذَكِّرْ إِنَّمَا أَنتَ مُذَكِّرٌ﴾
২১) বেশ (হে নবী ) তাহলে তুমি উপদেশ দিয়ে যেতে থাকো ৷ তুমি তো শুধু মাত্র একজন উপদেশক,
﴿لَّسْتَ عَلَيْهِم بِمُصَيْطِرٍ﴾
২২) এদের উপর বল প্রয়োগকারী নও ৷
﴿إِلَّا مَن تَوَلَّىٰ وَكَفَرَ﴾
২৩) তবে যে ব্যক্তি মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং অস্বীকার করবে,
﴿فَيُعَذِّبُهُ اللَّهُ الْعَذَابَ الْأَكْبَرَ﴾
২৪) আল্লাহ তাকে মহাশাস্তি দান করবেন ৷
﴿إِنَّ إِلَيْنَا إِيَابَهُمْ﴾
২৫) অবশ্যি এদের আমার কাছেই ফিরে আসতে হবে ৷
﴿ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا حِسَابَهُم﴾
২৬) তারপর এদের হিসেব নেয়া হবে আমারই দায়িত্ব ৷ 

আল আলা

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى
১) ( হে নবী ) তোমার সুমহান রবের নামরে তাসবীহ পাঠ করো৷
﴿الَّذِي خَلَقَ فَسَوَّىٰ﴾
২) যিনি সৃষ্টি করেছেন এবং সমতা কায়েম করেছেন৷
﴿وَالَّذِي قَدَّرَ فَهَدَىٰ﴾
৩) যিনি তাকদীর গড়েছেন তারপর পথ দেখিয়েছেন৷
﴿وَالَّذِي أَخْرَجَ الْمَرْعَىٰ﴾
৪) যিনি উদ্ভিদ উৎপন্ন করেছেন৷
﴿فَجَعَلَهُ غُثَاءً أَحْوَىٰ﴾
৫) তারপর তাদেরকে কালো আবর্জনায় পরিণত করেছেন৷
﴿سَنُقْرِئُكَ فَلَا تَنسَىٰ﴾
৬) আমি তোমাকে পড়িয়ে দেবো , তারপর তুমি আর ভুলবে না৷
﴿إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ ۚ إِنَّهُ يَعْلَمُ الْجَهْرَ وَمَا يَخْفَىٰ﴾
৭) তবে আল্লাহ যা চান তা ছাড়া ৷ তিনি জানেন প্রকাশ্য এবং যা কিছু গোপন আছে তাও৷
﴿وَنُيَسِّرُكَ لِلْيُسْرَىٰ﴾
৮) আর আমি তোমাকে সহজ পথের সুযোগ সুবিধা দিচ্ছি৷
﴿فَذَكِّرْ إِن نَّفَعَتِ الذِّكْرَىٰ﴾
৯) কাজেই তুমি উপদেশ দাও , যদি উপদেশ উপকারী হয়১০
﴿سَيَذَّكَّرُ مَن يَخْشَىٰ﴾
১০) যে ভয় করে সে উপদেশ গ্রহণ করে নেবে৷১১
﴿وَيَتَجَنَّبُهَا الْأَشْقَى﴾
১১) আর তার প্রতি অবহেলা করবে নিতান্ত দুর্ভাগাই ,
﴿الَّذِي يَصْلَى النَّارَ الْكُبْرَىٰ﴾
১২) যে বৃহৎ আগুনে প্রবেশ করবে ,
﴿ثُمَّ لَا يَمُوتُ فِيهَا وَلَا يَحْيَىٰ﴾
১৩) তারপর সেখানে মরবেও না, বাঁচবেও না ৷১২
﴿قَدْ أَفْلَحَ مَن تَزَكَّىٰ﴾
১৪) সে সফলকাম হয়েছে , যে পবিত্রতা অবলম্বন করেছে ১৩
﴿وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهِ فَصَلَّىٰ﴾
১৫) এবং নিজের রবের নাম স্মরণ করেছে ১৪ তারপর নামায পড়েছে ৷ ১৫
﴿بَلْ تُؤْثِرُونَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا﴾
১৬) কিন্তু তোমরা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে থাকো৷১৬
﴿وَالْآخِرَةُ خَيْرٌ وَأَبْقَىٰ﴾
১৭) অথচ আখেরাত উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী৷১৭
﴿إِنَّ هَٰذَا لَفِي الصُّحُفِ الْأُولَىٰ﴾
১৮) পূর্বে অবতীর্ণ সহীফাগুলোয় একথাই বলা হয়েছিল ,
﴿صُحُفِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَىٰ﴾
১৯) ইবরাহীম ও মূসার সহীফায়৷১৮

আত তারেক

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
وَالسَّمَاءِ وَالطَّارِقِ
১) কসম আকাশের এবং রাতে আত্মপ্রকাশকারীর৷
﴿وَمَا أَدْرَاكَ مَا الطَّارِقُ﴾
২) তুমি কি জানো ঐ রাতে আত্মপ্রকাশকারী কি ?
﴿النَّجْمُ الثَّاقِبُ﴾
৩) উজ্জ্বল তারকা ৷
﴿إِن كُلُّ نَفْسٍ لَّمَّا عَلَيْهَا حَافِظٌ﴾
৪) এমন কোন প্রাণ নেই যার ওপর কোন হেফাজতকারী নেই৷
﴿فَلْيَنظُرِ الْإِنسَانُ مِمَّ خُلِقَ﴾
৫) কাজেই মানুষ একবার এটাই দেখে নিক কী জিনিস থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে !
﴿خُلِقَ مِن مَّاءٍ دَافِقٍ﴾
৬) তাকে সৃষ্টি করা হেয়ছে প্রবলবেগে নিঃসৃত পানি থেকে ,
﴿يَخْرُجُ مِن بَيْنِ الصُّلْبِ وَالتَّرَائِبِ﴾
৭) যা পিঠ ও বুকের হাড়ের মাঝখান দিয়ে বের হয়৷
﴿إِنَّهُ عَلَىٰ رَجْعِهِ لَقَادِرٌ﴾
৮) নিশ্চিতভাবেই তিনি ( স্রষ্টা ) তাকে দ্বিতীয় বার সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখেন৷
﴿يَوْمَ تُبْلَى السَّرَائِرُ﴾
৯) যেদিন গোপন রহস্যের যাচাই বাছাই হবে ,
﴿فَمَا لَهُ مِن قُوَّةٍ وَلَا نَاصِرٍ﴾
১০) সেদিন মানুষের নিজের কোন শক্তি থাকবে না এবং কেউ তার সাহায্যকারী ও হবে না৷
﴿وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الرَّجْعِ﴾
১১) কসম বৃষ্টি বর্ষণকারী আকাশের
﴿وَالْأَرْضِ ذَاتِ الصَّدْعِ﴾
১২) এবং ( উদ্ভিদ জন্মাবার সময় ) ফেটে যাওয়া যমীনের ,
﴿إِنَّهُ لَقَوْلٌ فَصْلٌ﴾
১৩) এটি মাপাজোকা মীমাংসাকারী কথা ,
﴿وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ﴾
১৪) হাসি ঠাট্টা নয়৷
﴿إِنَّهُمْ يَكِيدُونَ كَيْدًا﴾
১৫) এরা কিছু চক্রান্ত করছে
﴿وَأَكِيدُ كَيْدًا﴾
১৬) এবং আমিও একটি কৌশল করছি৷
﴿فَمَهِّلِ الْكَافِرِينَ أَمْهِلْهُمْ رُوَيْدًا﴾
১৭) কাজেই ছেড়ে দাও , হে নবী ! এ কাফেরদেরকে সামান্য কিছুক্ষণের জন্য এদের অবস্থার ওপর ছেড়ে দাও ৷ ১০

আল বুরজ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الْبُرُوجِ﴾
১) কসম মজবুত দুর্গ বিশিষ্ট আকাশের
﴿وَالْيَوْمِ الْمَوْعُودِ﴾
২) এবং সেই দিনের যার ওয়াদা করা হয়েছে
﴿وَشَاهِدٍ وَمَشْهُودٍ﴾
৩) আর যে দেখে তার এবং সেই জিনিসের যা দেখা যায়৷
﴿قُتِلَ أَصْحَابُ الْأُخْدُودِ﴾
৪) মারা পড়েছে গর্তওয়ালারা যে গর্তে দাউ দাউ করে জ্বলা জ্বালানীর আগুন ছিল ,
﴿النَّارِ ذَاتِ الْوَقُودِ﴾
৫) যখন তারা সেই গর্তের কিনারে বসেছিল
﴿إِذْ هُمْ عَلَيْهَا قُعُودٌ﴾
৬) এবং ঈমানদারদের সাথে
﴿وَهُمْ عَلَىٰ مَا يَفْعَلُونَ بِالْمُؤْمِنِينَ شُهُودٌ﴾
৭) তারা সবকিছু করছিল তা দেখছিল৷
﴿وَمَا نَقَمُوا مِنْهُمْ إِلَّا أَن يُؤْمِنُوا بِاللَّهِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ﴾
৮) ওই ঈমানদারদের সাথে তাদের শত্রুতার এ ছাড়া আর কোন কারণ ছিল না যে তারা সেই আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল
﴿الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ﴾
৯) যিনি মহাপরাক্রমশালী এবং নিজের সত্তায় নিজেই প্রশংসিত , যিনি আকাশ ও পৃথিবীর রাজত্বের অধিকারী ৷ আর সে আল্লাহ সবকিছু দেখছেন৷
﴿إِنَّ الَّذِينَ فَتَنُوا الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ ثُمَّ لَمْ يَتُوبُوا فَلَهُمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَلَهُمْ عَذَابُ الْحَرِيقِ﴾
১০) যারা মু’মিন পুরুষ ও নারীদের ওপর জুলুম - নিপীড়ন চালিয়েছে , তারপর তা থেকে তওবা করেনি , নিশ্চিতভাবেই তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব এবং জ্বালা - পোড়ার শাস্তি৷
﴿إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُمْ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۚ ذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْكَبِيرُ﴾
১১) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে নিশ্চিতভাবেই তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের বাগান যার নিম্নদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে ঝরণাধারা৷ এটিই বড় সাফল্য৷
﴿إِنَّ بَطْشَ رَبِّكَ لَشَدِيدٌ﴾
১২) আসলে তোমার রবের পাকড়াও বড় শক্ত৷
﴿إِنَّهُ هُوَ يُبْدِئُ وَيُعِيدُ﴾
১৩) তিনিই প্রথমবার সৃষ্টি করেন আবার তিনিই দ্বিতীয় বার সৃষ্টি করবেন৷
﴿وَهُوَ الْغَفُورُ الْوَدُودُ﴾
১৪) তিনি ক্ষমাশীল , প্রেমময় ,
﴿ذُو الْعَرْشِ الْمَجِيدُ﴾
১৫) আরশের মালিক , শ্রেষ্ঠ সম্মানিত
﴿فَعَّالٌ لِّمَا يُرِيدُ﴾
১৬) এবং তিনি যা চান তাই করেন৷
﴿هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ الْجُنُودِ﴾
১৭) তোমার কাছে কি পৌঁছেছে সেনাদলের খবর ?
﴿فِرْعَوْنَ وَثَمُودَ﴾
১৮) ফেরাউন ও সামূদের সেনাদলের ?
﴿بَلِ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي تَكْذِيبٍ﴾
১৯) কিন্তু যারা কুফরী করেছে , তারা মিথ্যা আরোপ করার কাজে লেগে রয়েছে৷
﴿وَاللَّهُ مِن وَرَائِهِم مُّحِيطٌ﴾
২০) অথচ আল্লাহ তাদেরকে ঘেরাও করে রেখেছেন৷
﴿بَلْ هُوَ قُرْآنٌ مَّجِيدٌ﴾
২১) ( তোমার মিথ্যা আরোপ করায় এ কুরআনের কিছু আসে যায় না৷)
﴿فِي لَوْحٍ مَّحْفُوظٍ﴾
২২) বরং এ কুরআন উন্নত মর্যাদা সম্পন্ন , সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ৷

আল ইনশিকাক

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
إِذَا السَّمَاءُ انشَقَّتْ﴾
১) যখন আকাশ ফেটে যাবে
﴿وَأَذِنَتْ لِرَبِّهَا وَحُقَّتْ﴾
২) এবং নিজের রবের হুকুম পালন করবে৷  আর ( নিজের রবের হুকুম মেনে চলা , ) এটিই তার জন্য সত্য৷
﴿وَإِذَا الْأَرْضُ مُدَّتْ﴾
৩) আর পৃথিবীকে যখন ছড়িয়ে দেয়া হবে৷
﴿وَأَلْقَتْ مَا فِيهَا وَتَخَلَّتْ﴾
৪) যা কিছু তার মধ্যে আছে তা বাইরে নিক্ষেপ করে সে খালি হয়ে যাবে
﴿وَأَذِنَتْ لِرَبِّهَا وَحُقَّتْ﴾
৫) এবং নিজের রবের হুকুম পালন করবে৷ আর ( নিজের রবের হুকুম মেনে চলা ), এটিই তার জন্য সত্য৷
﴿يَا أَيُّهَا الْإِنسَانُ إِنَّكَ كَادِحٌ إِلَىٰ رَبِّكَ كَدْحًا فَمُلَاقِيهِ﴾
৬) হে মানুষ ! তুমি কঠোর পরিশ্রম করতে করতে তোমার রবের দিকে এগিয়ে যাচ্ছো, পরে তাঁর সাথে সাক্ষাত করবে৷
﴿فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ﴾
৭) তারপর যার আমলনামা তার ডান হাতে দেয়া হয়েছে ,
﴿فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا﴾
৮) তার কাছ থেকে হালকা হিসেব নেয়া হবে
﴿وَيَنقَلِبُ إِلَىٰ أَهْلِهِ مَسْرُورًا﴾
৯) এবং সে হাসিমুখে নিজের লোকজনের কাছে ফিরে যাবে৷
﴿وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ وَرَاءَ ظَهْرِهِ﴾
১০) আর যার আমলনামা তার পিছন দিক দেয়া হবে৷
﴿فَسَوْفَ يَدْعُو ثُبُورًا﴾
১১) সে মৃত্যুকে ডাকবে
﴿وَيَصْلَىٰ سَعِيرًا﴾
১২) এবং জ্বলন্ত আগুনে গিয়ে পড়বে৷
﴿إِنَّهُ كَانَ فِي أَهْلِهِ مَسْرُورًا﴾
১৩) সে নিজের পরিবারের লোকদের মধ্যে ডুবে ছিল৷
﴿إِنَّهُ ظَنَّ أَن لَّن يَحُورَ﴾
১৪) সে মনে করেছিল , তাকে কখনো ফিরতে হবে না৷
﴿بَلَىٰ إِنَّ رَبَّهُ كَانَ بِهِ بَصِيرًا﴾
১৫) না ফিরে সে পারতো কেমন করে ? তার রব তার কার্যকলাপ দেখছিলেন৷১০
﴿فَلَا أُقْسِمُ بِالشَّفَقِ﴾
১৬) কাজেই না আমি কসম খাচ্ছি ,
﴿وَاللَّيْلِ وَمَا وَسَقَ﴾
১৭) আকাশের লাল আভার ও রাতের
﴿وَالْقَمَرِ إِذَا اتَّسَقَ﴾
১৮) এবং তাতে যা কিছুর সমাবেশ ঘটে তার , আর চাঁদের , যখন তা পূর্ণরূপ লাভ করে৷
﴿لَتَرْكَبُنَّ طَبَقًا عَن طَبَقٍ﴾
১৯) তোমাদের অবশ্যি স্তরে স্তরে এক অবস্থা থেকে আর এক অবস্থার দিকে এগিয়ে যেতে হবে৷১১
﴿فَمَا لَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ﴾
২০) তাহলে এদের কি হয়েছে , এরা ঈমান আনে না
﴿وَإِذَا قُرِئَ عَلَيْهِمُ الْقُرْآنُ لَا يَسْجُدُونَ ۩﴾
২১) এবং এদের সামনে কুরআন পড়া হলে এরা সিজদা করে না ?১২
﴿بَلِ الَّذِينَ كَفَرُوا يُكَذِّبُونَ﴾
২২) বরং এ অস্বীকারকারীরা উলটো মিথ্যা আরোপ করে ৷
﴿وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا يُوعُونَ﴾
২৩) অথচ এরা নিজেদের আমলনামায় যা কিছু জমা করছে আল্লাহ তা খুব ভালো করেই জানেন ৷১৩
﴿فَبَشِّرْهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٍ﴾
২৪) কাজেই এদের যন্ত্রণাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও৷
﴿إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُمْ أَجْرٌ غَيْرُ مَمْنُونٍ﴾
২৫) তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার ৷

আল মুতাফফিফীন

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
وَيْلٌ لِّلْمُطَفِّفِينَ
১) ধবংস তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়৷
﴿الَّذِينَ إِذَا اكْتَالُوا عَلَى النَّاسِ يَسْتَوْفُونَ﴾
২) তাদের অবস্থা এই যে , লোকদের থেকে নেবার সময় পুরোমাত্রায় নেয়
﴿وَإِذَا كَالُوهُمْ أَو وَّزَنُوهُمْ يُخْسِرُونَ﴾
৩) এবং তাদেরকে ওজন করে বা মেপে দেবার সময় কম করে দেয়৷
﴿أَلَا يَظُنُّ أُولَٰئِكَ أَنَّهُم مَّبْعُوثُونَ﴾
৪) এরা কি চিন্তা করে না , একটি মহাদিবসে
﴿لِيَوْمٍ عَظِيمٍ﴾
৫) এদেরকে উঠিয়ে আনা হবে ?
﴿يَوْمَ يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ﴾
৬) যেদিন সমস্ত মানুষ রব্বুল আলামীনের সামনে দাঁড়াবে ৷
﴿كَلَّا إِنَّ كِتَابَ الْفُجَّارِ لَفِي سِجِّينٍ﴾
৭) কখনো নয় , নিশ্চিতভাবেই পাপীদের আমলনামা কয়েদখানার দফতরে রয়েছে৷
﴿وَمَا أَدْرَاكَ مَا سِجِّينٌ﴾
৮) আর তুমি কি জানো সেই কয়েদখানার দফতরটা কি ?
﴿كِتَابٌ مَّرْقُومٌ﴾
৯) একটি লিখিত কিতাব৷
﴿وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُكَذِّبِينَ﴾
১০) সেদিন মিথ্যা আরোপকারীদের জন্য ধবংস সুনিশ্চিত ,
﴿الَّذِينَ يُكَذِّبُونَ بِيَوْمِ الدِّينِ﴾
১১) যারা কর্মফল দেবার দিনটিকে মিথ্যা বলেছে ৷
﴿وَمَا يُكَذِّبُ بِهِ إِلَّا كُلُّ مُعْتَدٍ أَثِيمٍ﴾
১২) আর সীমালংঘনকারী পাপী ছাড়া কেই একে মিথ্যা বলে না ৷
﴿إِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِ آيَاتُنَا قَالَ أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ﴾
১৩) তাকে যখন আমার আয়াত শুনানো হয়  সে বলে , এ তো আগের কালের গল্প৷
﴿كَلَّا ۖ بَلْ ۜ رَانَ عَلَىٰ قُلُوبِهِم مَّا كَانُوا يَكْسِبُونَ﴾
১৪) কখনো নয় , বরং এদের খারাপ কাজের জং ধরেছে৷
﴿كَلَّا إِنَّهُمْ عَن رَّبِّهِمْ يَوْمَئِذٍ لَّمَحْجُوبُونَ﴾
১৫) কখখনো নয়, নিশ্চিতভাবেই সেদিন তাদের রবের দর্শন থেকে বঞ্চিত রাখা হবে৷
﴿ثُمَّ إِنَّهُمْ لَصَالُو الْجَحِيمِ﴾
১৬) তারপর তারা গিয়ে পড়বে জাহান্নামের মধ্যে ৷
﴿ثُمَّ يُقَالُ هَٰذَا الَّذِي كُنتُم بِهِ تُكَذِّبُونَ﴾
১৭) এরপর তাদেরকে বলা হবে , এটি সেই জিনিস যাকে তোমরা মিথ্যা বলতে৷
﴿كَلَّا إِنَّ كِتَابَ الْأَبْرَارِ لَفِي عِلِّيِّينَ﴾
১৮) কখখনো নয় , অবশ্যি নেক লোকদের আমলনামা উন্নত মর্যাদাসম্পন্ন লোকদের দফতরে রয়েছে৷
﴿وَمَا أَدْرَاكَ مَا عِلِّيُّونَ﴾
১৯) আর তোমরা কি জানো , এ উন্নত মর্যাদাসম্পন্ন লোকদের দফতরটি কি ?
﴿كِتَابٌ مَّرْقُومٌ﴾
২০) এটি একটি লিখিত কিতাব৷
﴿يَشْهَدُهُ الْمُقَرَّبُونَ﴾
২১) নৈকট্য লাভকারী ফেরেশতারা এর দেখাশুনা করে ৷
﴿إِنَّ الْأَبْرَارَ لَفِي نَعِيمٍ﴾
২২) নিসন্দেহে নেক লোকেরা থাকবে বড়ই আনন্দে৷
﴿عَلَى الْأَرَائِكِ يَنظُرُونَ﴾
২৩) উঁচু আসনে বসে দেখতে থাকবে৷
﴿تَعْرِفُ فِي وُجُوهِهِمْ نَضْرَةَ النَّعِيمِ﴾
২৪) তাদের চেহারায় তোমরা সচ্ছলতার দীপ্তি অনুভব করবে৷
﴿يُسْقَوْنَ مِن رَّحِيقٍ مَّخْتُومٍ﴾
২৫) তাদেরকে মোহর করা বিশুদ্ধতম শরাব পান করানো হবে৷
﴿خِتَامُهُ مِسْكٌ ۚ وَفِي ذَٰلِكَ فَلْيَتَنَافَسِ الْمُتَنَافِسُونَ﴾
২৬) তার ওপর মিশক-এর মোহর থাকবে ৷ ১০ যারা অন্যদের ওপর প্রতিযোগিতায় জয়ী হতে চায় তারা যেন এই জিনিসটি হাসিল করার জন্য প্রতিযোগিতায় জয়ী হবার চেষ্টা করে৷
﴿وَمِزَاجُهُ مِن تَسْنِيمٍ﴾
২৭) সে শরাবে তাসনীমের১১ মিশ্রণ থাকবে৷
﴿عَيْنًا يَشْرَبُ بِهَا الْمُقَرَّبُونَ﴾
২৮) এটি একটি ঝরণা, নৈকট্যলাভকারীরা এর পানির সাথে শরাব পান করবে৷
﴿إِنَّ الَّذِينَ أَجْرَمُوا كَانُوا مِنَ الَّذِينَ آمَنُوا يَضْحَكُونَ﴾
২৯) অপরাধীরা দুনিয়াতে ঈমানদারদের বিদ্রূপ করতো৷
﴿وَإِذَا مَرُّوا بِهِمْ يَتَغَامَزُونَ﴾
৩০) তাদের কাছ দিয়ে যাবার সময় চোখ টিপে তাদের দিকে ইশারা করতো৷
﴿وَإِذَا انقَلَبُوا إِلَىٰ أَهْلِهِمُ انقَلَبُوا فَكِهِينَ﴾
৩১) নিজেদের ঘরের দিকে ফেরার সময় আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ফিরতো ৷ ১২
﴿وَإِذَا رَأَوْهُمْ قَالُوا إِنَّ هَٰؤُلَاءِ لَضَالُّونَ﴾
৩২) আর তাদেরকে দেখলে বলতো , এরা হচ্ছে পথভ্রষ্ট৷১৩
﴿وَمَا أُرْسِلُوا عَلَيْهِمْ حَافِظِينَ﴾
৩৩) অথচ তাদেরকে এদের ওপর তত্ত্বাবধায়ক করে পাঠানো হয়নি৷১৪
﴿فَالْيَوْمَ الَّذِينَ آمَنُوا مِنَ الْكُفَّارِ يَضْحَكُونَ﴾
৩৪) আজ ঈমানদাররা কাফেরদের ওপর হাসছে৷
﴿عَلَى الْأَرَائِكِ يَنظُرُونَ﴾
৩৫) সুসজ্জিত আসনে বসে তাদের অবস্থা দেখছে৷
﴿هَلْ ثُوِّبَ الْكُفَّارُ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ﴾
৩৬) কাফেররা তাদের কৃতকর্মের “ সওয়াব” পেয়ে গেলো তো? ১৫