বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

দেশপ্রেম যখন বিপজ্জনক আবেগ

দেশপ্রেম যখন বিপজ্জনক আবেগ

দেশপ্রেম যখন বিপজ্জনক আবেগ

॥ আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু ॥

দেশপ্রেম যে কখনো কখনো বিপজ্জনক হতে পারে, বাংলাদেশ তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসে দেশী-বিদেশী শাসকেরা দেশবাসীকে নানাভাবে বিভক্ত করার চেষ্টা করে যে কাজটি করতে সক্ষম হয়নি, গত ৪০ বছরে তিন মেয়াদে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সুচারুভাবে সেটি সম্পন্ন করেছে। এই বিভাজন ভাষাগতও নয়, ধর্মীয়ও নয়। ‘স্বাধীনতার পক্ষ’ ও ‘স্বাধীনতার বিপক্ষ’ শক্তি নামে দু’টি পক্ষ দাঁড় করিয়ে মাঝখানে একটি সীমারেখা টেনে দেয়া হয়েছে। এ রেখাকে সীমারেখা না বলে ‘লক্ষ্মণ রেখা’ বলাই উত্তম। আওয়ামী লীগের টেনে দেয়া এই লক্ষ্মণ রেখা অতিক্রম করলে দেশের কে কী অভিধায় ভূষিত হবেন তা অনুমান করাও কঠিন। রামায়ণের কাহিনী অনুসারে রাম তার স্ত্রী সীতাসহ অযোধ্যা থেকে ১৪ বছরের জন্য নির্বাসিত হন এবং ভ্রাতৃ-অন্তপ্রাণ লক্ষ্মণ তাদের অনুগমন করেন এবং দণ্ডকারণ্যে বনবাস যাপনকালে একদিন রাম শিকারে গেলে সীতার প্রহরায় ছিলেন লক্ষ্মণ। রামের ফিরে আসতে বিলম্ব দেখে সীতা লক্ষ্মণকে বলেন ভাইকে খুঁজে আনতে। লক্ষ্মণ প্রথমত সম্মত হননি, কিন' সীতার পীড়াপীড়িতে রাজি হলেও কুটিরের চার পাশে একটি রেখা টেনে সীতাকে নিষেধ করেন যাতে কিছুতেই তিনি সেই রেখা অতিক্রম না করেন। লক্ষ্মণ চলে যাওয়ার পর সাধুবেশী রাক্ষস রাজা রাবণ উপসি'ত হয় এবং ভিক্ষা চায়। রাবণের কৌশল বুঝতে না পেরে সীতা ভিক্ষা দিতে রেখা অতিক্রম করতেই রাবণ তাকে বলপূর্বক পুষ্পক রথে তুলে লঙ্কায় নিয়ে যায় এবং এরপর সীতাকে উদ্ধারের জন্য দীর্ঘ যুদ্ধ চলে।

আওয়ামী লীগ যেহেতু দেশপ্রেমের মনোপলি দখল করেছে, অতএব তাদের অপছন্দনীয় যে কাউকে স্বাধীনতার বিপক্ষের লোক বা স্বাধীনতাবিরোধী বলে চিহ্নিত করতে কোনো দ্বিধা করছে না। কারণ তারা আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করে ক্ষমতায় গিয়ে, গাড়িতে-বাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দেশ পরিচালনা করে ‘লক্ষ্মণ রেখা’ অতিক্রম করেছে। অতএব রাবণের হাতে তাদেরকে পড়তেই হবে। জামায়াতে ইসলামীর নেতারা না হয় অখণ্ড পাকিস্তানের স্বপ্নে বিভোর ছিলেন, ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্য বিস্তারের আশঙ্কায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করে অপরাধ(?) করেছেন, কিন' বিএনপি বা বিরোধী দলের অন্যদের কেন একই অপবাদের শিকার হতে হচ্ছে? ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা ভারতে না গিয়ে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে কেন ছিলেন, এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বেগম জিয়াকে কটাক্ষ করে অনেক বাজে মন্তব্য করেছেন। কিন' শেখ হাসিনাও তো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সপরিবারে ঢাকা শহরেই অবস'ান করেছেন। তাদের কারো গায়ে আঁচড়টুকু পড়েছিল, এমন শোনা যায়নি। এ নিয়ে তার দেশপ্রেমে ঘাটতি ছিল- এমন প্রশ্ন কেউ তোলেনি। তাহলে কি ব্যাপারটি এমন যে কেউ যদি নিজেকে সবার চেয়ে সেরা বলে মনে করেন, তাহলে একটি পর্যায়ে নিজের অস্তিত্ব ও অতীত সম্পর্কে বিস্মৃত হন। মির্জা গালিবের একটি কবিতায় আছে, ‘হাম উঁহা হ্যায় জাহা সে হামকো ভি কুচ হামারি খবর নেহি আতি’। (আমি এমন এক স্তরে পৌঁছে গেছি, যেখান থেকে আমি নিজের কোনো খবরও পাই না)।

দেশপ্রেম এক বিস্ময়কর অনুভূতি ও আবেগ এবং দেশের জন্য মানুষ জীবন ও সম্পত্তি বিলিয়ে দিতে দ্বিধা করে না। এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী সর্বত্র সমভাবে প্রযোজ্য। ২০০ বছর ধরে বিশ্বের বহু দেশ স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছে। কোথাও রক্তক্ষয় বেশি হয়েছে, কোথাও কম হয়েছে। কিন' এমন কোনো দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবে না যে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামরত কোনো একটি দেশের শতভাগ মানুষ স্বাধীনতার পক্ষে ছিল। উপমহাদেশে ব্রিটিশরাজের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার লড়াইয়ের সময় এর বিরোধিতা করার মতো যথেষ্ট লোক ভারতজুড়েই ছিল। তারও আগে ১৮৫৭ সালে ‘সিপাহি বিদ্রোহ’ নামে পরিচিত ভারতের প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পেছনে ভারতীয়দের অবদানই ছিল বেশি। তা না হলে তখনই ভারত থেকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের বিদায় নিতে হতো অথবা এ দেশেই তাদের কবর রচিত হতো। 

দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভাজনের সময়ও মুসলমানদের একটি বড় অংশ পাকিস্তানের বিরোধিতা করেছে এবং পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ভারতেই রয়ে গেছে। আবার অনেক হিন্দু অখণ্ড ভারতের পক্ষাবলম্বন করেও শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানেই ছিলেন, যার প্রমাণ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান কংগ্রেস। পূর্ব বাংলা আইন পরিষদে কংগ্রেসের ১৩ জন নির্বাচিত সদস্যও ছিলেন। পাকিস্তান সরকার তাদেরকে দেশদ্রোহী হিসেবে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করায়নি। একটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বহু দল-মতের অস্তিত্ব থাকবে, এটিই স্বতঃসিদ্ধ। এই সত্যকে মানতে না পারলেই বিভাজন ও সঙ্ঘাত অনিবার্য হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশকে আর কেউ ভালোবাসে না, অথবা আর কেউ ভালোবাসলেও তার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো বাড়াবাড়িতে দেশ আজ সেই সঙ্ঘাতের মুখে। এ সঙ্ঘাত থেকে দেশকে উদ্ধার করতে যে বোধ প্রয়োজন, আওয়ামী লীগের সেই বোধের উৎস রুদ্ধ হয়েছে। 

বিদেশী শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীনতা অর্জন এক কথা, আর দেশের জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশকে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী, দেশদ্রোহী, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক প্রত্যয় ব্যক্ত করা ভিন্ন ব্যাপার। আওয়ামী লীগবহির্ভূত জনগণের অবশিষ্টাংশ বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করলেই কারো দেশপ্রেম নিয়ে সন্দেহ করার যে ম্যানিয়া বা বাতিক আওয়ামী লীগ পুষে রেখেছে, তা এখন বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের বাতিকগ্রস্ত একটি দলের নেতৃত্বে দেশের ভবিষ্যৎ যে অন্ধকারাচ্ছন্ন তা উপলব্ধির জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। দেশকে একটি স'ায়ী সঙ্ঘাতময় পরিসি'তির মধ্যে রেখে দেশের উন্নয়ন আশা করা আর বোকার স্বর্গে বাস করা একই কথা।

বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করার পর যখন স্বাধীনতাকে সংরক্ষণ ও সুসংহত করাই ছিল স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের প্রধান কাজ, ঠিক সে সময় তারা তাদের বিরুদ্ধে সদ্য গজিয়ে ওঠা বিরোধী রাজনৈতিক দল জাসদের নেতাকর্মী ও যারাই ভারতের সাথে আওয়ামী লীগের অতিরিক্ত মাখামাখির বিরুদ্ধে সামান্য আওয়াজ তুলেছে তাদেরকে নির্মূল করার অভিযানে নেমেছিল। তাদেরকে হত্যা করেছে। বিনাবিচারে কারাগারে আটকে রেখেছে। অথচ মাত্র কিছু দিন আগেই তারাও মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সহযোদ্ধা হিসেবে একত্রে যুদ্ধ করেছে। জাসদ তখন দাবি করত যে আওয়ামী সরকার তাদের ৪০ হাজার নেতাকর্মী হত্যা করেছে। কিন' এখন ইতিহাসের গতি পাল্টেছে জাসদ আওয়ামী লীগের সাথে গাঁটছড়া বাঁধায়। জাসদ নেতারা এখন শেখ হাসিনার ইশারায় রাজনৈতিক মাঠে ওঠবোস করেন। কী বিচিত্র এই দেশ! আর বিচিত্র এ দেশের রাজনীতি! স্বাধীনতার পর যারা তখনকার নেতৃত্বে ছিলেন তাদের আহ্বান একটাই হওয়া উচিত ছিল যে প্রত্যেকের কাছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের দাবি হচ্ছে, তারা তাদের নিজ নিজ অবস'ান থেকে দেশের জন্য তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবেন। জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও নতুন উদ্যমে দেশকে গড়ার জন্য এ আহ্বান মন্ত্রের মতো কাজ করতে পারত। কিন' তার পরিবর্তে পরিত্যক্ত সম্পত্তি লুণ্ঠন, উচ্চপদ দখলের প্রতিযোগিতা, বিদেশ থেকে আসা ত্রাণসামগ্রীর ঢালাও চুরির প্রতিযোগিতা এবং যে ক্ষীণ রাজনৈতিক ভিন্নমত ছিল তা মেনে নেয়ার সহনশীলতা না থাকায় দেশ শুরুতেই যে অসি'রতার চক্রে পড়েছে, তা থেকে ৪০ বছরেও বের হতে পারেনি। কবে পারবে সে সম্পর্কে ধারণা করার খেইও হারিয়ে ফেলেছেন প্রকৃত বিশেষজ্ঞরা। 

জনগণের মধ্যে দেশপ্রেম স্বভাবগতভাবে থাকলেও দেশপ্রেমকে জাতীয় ঐক্যের প্রতীকে পরিণত করতে হলেও প্রয়োজন মেধাবী নেতৃত্বের, যে নেতৃত্ব শুধু নিজেকে ও দলীয় লোকদেরকে দেশপ্রেমিক বিবেচনা করার পরিবর্তে সবাইকে দেশপ্রেমিক ভাববে, কারো মধ্যে দেশপ্রেমের ঘাটতি আছে মনে হলে তাদেরকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে। কিন' নেতৃত্বের মধ্যে যদি দেউলিয়াপনা থাকে, দেশের সব জনগোষ্ঠীকে একভাবে দেখার দৃষ্টি না থাকে, অন্যের ত্রুটিকে পুঁজি করে দেশকে অসি'তিশীল করে রাখার মানসিকতা থাকে, তাহলে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী সার্বক্ষণিক আতঙ্কের মধ্যে থাকবে এবং কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলবে। যখন দেশ সঙ্কটে পড়বে তখন তারা আর সঙ্কট উত্তরণে ঝাঁপিয়ে পড়বে না। ইতিহাসে চরম নিন্দিত শাসকদের অন্যতম হিটলারও তার দেশবাসীকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ছয়-সাত বছরের মধ্যে জনগণকে পিতৃভূমি রক্ষায় যুদ্ধের জন্য প্রস'ত করেছিলেন। দেশপ্রেমের আবেগকে সঠিক পথে চালিত করতে পারলে তা দেশের জন্য যথার্থই কল্যাণকর। কিন' এই আবেগকে প্রতিশোধস্পৃহা চরিতার্থ করার কাজে ব্যবহার করে জনগণের একটি অংশকে ক্ষেপিয়ে তুললে তা নৈরাজ্য সৃষ্টি ছাড়া দেশের জন্য শুভ কিছু বয়ে আনবে না তা আমরা দেখতে পাচ্ছি। কারণ আওয়ামী দেশপ্রেমের মাত্রা সব সীমা ছাড়িয়ে রূপ নিয়েছে ধর্মান্ধতায়, যার বিপদ আসন্ন। দেশপ্রেমে মাতাল হয়ে তারা আরেকটি যুদ্ধ করতে প্রস'ত। যুদ্ধ মানেই মৃত্যু, ধ্বংস। প্রায় প্রতি বছর সংঘটিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও জনভারে ন্যুব্জ, নানা সঙ্কটে বিপর্যস্ত এই ক্ষুদ্র জনপদ ১৯৪৭ সালে মৃত্যু ও ধ্বংস দেখেছে। ১৯৭১ সালের ঘটনা ছিল হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসলীলা। সাময়িক বিরতির পর ধ্বংসের কবলে পতিত হওয়াই কি বাংলাদেশের ললাট লিখন? যে দেশপ্রেম জনগোষ্ঠীর একটি অংশের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে, প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে প্রতিশোধের ছুরি উঁচিয়ে ধরতে প্ররোচিত করে দেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়, এমন দেশপ্রেম নিন্দনীয়, ঠিক যেভাবে শেষ পর্যন্ত নিন্দিত হয়েছিল হিটলার ও তার অনুগতদের দেশপ্রেম।

বাংলাদেশে দেশপ্রেমের একচ্ছত্র ইজারাদার আওয়ামী লীগের দেশপ্রেম নিয়েই জনগণ বেশি সন্দিহান। কারণ বিপদে পড়লেই সীমান্তের ওপারে তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় রয়েছে। জনগণের সন্দেহের থোড়াই পরোয়া করে আওয়ামী লীগ। মহান সৃষ্টিকর্তাই এই দলটির নেতাকর্মীদের এমন উপাদান দিয়ে সৃষ্টি করেছেন যে, তারা সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করতে দ্বিধা করেন না। ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানোর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বেমালুম অস্বীকার করা, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ অধিবেশনে যোগ দিতে এসে বিরোধী দলের নেতার সাথে বৈঠকে বসার সম্ভাবনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ‘চোর-বাটপারদের সাথে কিসের বৈঠক’ বলে দেশে ফিরে তিনি এমন কথা বলেননি বলে এড়িয়ে যাওয়া এবং মাত্র ১৩ দিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রুনি-সাগর হত্যাকারীদের ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে’ ঘোষণা করে পরে এ সম্পর্কে ভিন্ন ব্যাখ্যা দেয়ার যোগ্যতা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আর কোনো দল দেখাতে পারেনি। তারা ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থে দেশকে বারবার সঙ্কটে ফেলেছে এবং জনগণকে সেই সঙ্কট থেকে বের হয়ে আসতে চরম মূল্য দিতে হয়েছে। কিন' সব কিছুর একটা শেষ আছে। সীতাকে অপহরণকারী রাবণকেও পরাজিত হতে হয়েছিল। তার সোনার লঙ্কা আগুনে ভস্মীভূত হয়েছিল। দেশ ধ্বংস হওয়ার আগেই দেশবাসী আওয়ামী রাবণের হাত থেকে মুক্ত হবে বলে আশা করি। আরো একটি বিষয় উল্লেখ করার মতো, দেশপ্রেমের তকমা পাওয়া দেশপ্রেমিকের জন্য প্রয়োজনীয় কোনো বিষয় নয়। স্যার উইলিয়াম স্কট দেশপ্রেমের ওপর তার এক কবিতার শুরুতে উল্লেখ করেছেন, ÔBreathes there the man with soul so dead. Who never to himself hath said, This is my own, my native land!Õ’ এবং কবিতার শেষে বলেছেন এমন দেশপ্রেমিক তার নিজ দেশে কখনোই সম্মান বা স্বীকৃতি লাভ করবেন না। অতএব প্রকৃত দেশপ্রেমিকদের আফসোস করার কোনো কারণ নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন