রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭

সবর সিরিজ -৪


সবরঃ ঘ :
৩১।

﴿ وَلِرَبِّكَ فَاصۡبِرۡؕ‏﴾

এবং তোমার রবের জন্য ধৈর্য অবলম্বন করো। মুদ্দাস্সির, ৭৪ঃ ৭।
৩২।
﴿وَجَزَاهُم بِمَا صَبَرُوا جَنَّةً وَحَرِيرًا﴾

 আর তাদের সবরের বিনিময়ে তাদেরকে জান্নাত ও রেশমী পোশাক দান করবেন। দাহার, ৭৬ঃ ১২।
৩৩।
﴿فَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ وَلَا تُطِعْ مِنْهُمْ آثِمًا أَوْ كَفُورًا﴾

তাই তুমি ধৈর্যের সাথে তোমার রবের হুকুম পালন করতে থাকো। এবং এদের মধ্যকার কোন দুষ্কর্মশীল এবং সত্য অমান্যকারীর কথা শুনবে না। দাহার, ৭৬ঃ ২৪।
৩৪।
﴿ الصّٰبِرِيۡنَ وَالصّٰدِقِيۡنَ وَالۡقٰنِتِيۡنَ وَالۡمُنۡفِقِيۡنَ وَالۡمُسۡتَغۡفِرِيۡنَ بِالۡاَسۡحَارِ‏﴾

 এরা সবরকারী, সত্যনিষ্ঠ, অনুগত ও দানশীল এবং রাতের শেষভাগে আল্লাহ‌র কাছে গোনাহ মাফের জন্য দোয়া করে থাকে।” আল ইমরান, ৩ঃ ১৭।
৩৫।

﴿ يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا اصۡبِرُوۡا وَصَابِرُوۡا وَرَابِطُوۡا وَاتَّقُوۡا اللّٰهَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ‏﴾

হে ঈমানদারগণ! সবরের পথ অবলম্বন করো, বাতিলপন্থীদের মোকাবিলায় দৃঢ়তা দেখাও, হকের খেদমত করার জন্য উঠে পড়ে লাগো এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাকো। আশা করা যায়, তোমরা সফলকাম হবে। আল ইমরান, ৩ঃ ২০০।
৩৬।
﴿وَلَقَدۡ كُذِّبَتۡ رُسُلٌ مِّنۡ قَبۡلِكَ فَصَبَرُوۡا عَلٰى مَا كُذِّبُوۡا وَاُوۡذُوۡا حَتّٰىۤ اَتٰٮهُمۡ نَصۡرُنَا‌ؕ وَلَا مُبَدِّلَ لِكَلِمٰتِ اللّٰهِ‌ؕ وَلَقَدۡ جَآءَكَ مِنۡ نَّبَاِى الۡمُرۡسَلِيۡنَ﴾

তোমার পূর্বেও অনেক রসূলকে মিথ্যা বলা হয়েছে কিন্তু তাদের ওপর যে মিথ্যা আরোপ করা হয়েছে এবং যে কষ্ট দেয়া হয়েছে, তাতে তাঁরা সবর করেছে। শেষ পর্যন্ত তাদের কাছে আমার সাহায্য পৌঁছে গেছে। আল্লাহর কথাগুলো পরিবর্তন করার ক্ষমতা কারোর নেই এবং আগের রসূলদের সাথে যা কিছু ঘটে গেছে তার খবর তো তোমার কাছে পৌঁছে গেছে। আনআম,৬ঃ৩৪।
৩৭।

﴿ وَاِنۡ كَانَ طَآٮِٕفَةٌ مِّنۡكُمۡ اٰمَنُوۡا بِالَّذِىۡۤ اُرۡسِلۡتُ بِهٖ وَطَآٮِٕفَةٌ لَّمۡ يُؤۡمِنُوۡا فَاصۡبِرُوۡا حَتّٰى يَحۡكُمَ اللّٰهُ بَيۡنَنَا‌ۚ وَهُوَ خَيۡرُ الۡحٰكِمِيۡنَ‏﴾

৮৭.) যে শিক্ষা সহকারে আমাকে পাঠানো হয়েছে, তোমাদের মধ্য থেকে কোন একটি দল যদি তার প্রতি ঈমান আনে এবং অন্য একটি দল যদি তার প্রতি ঈমান না আনে তাহলে ধৈর্যসহকারে দেখতে থাকো, যতক্ষণ না আল্লাহ‌ আমাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেন। আর তিনিই সবচেয়ে ভাল ফায়সালাকারী। আরাফ, ৭ঃ৮৭।
৩৮।
رَبَّنَاۤ اَفۡرِغۡ عَلَيۡنَا صَبۡرًا وَّتَوَفَّنَا مُسۡلِمِيۡنَ‏
হে আমাদের রব! আমাদের সবর দান করো এবং তোমার আনুগত্য থাকা অবস্থায় আমাদের দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নাও।” আরাফ, ৭ঃ১২৬।
৩৯।
﴿ قَالَ مُوۡسٰى لِقَوۡمِهِ اسۡتَعِيۡنُوۡا بِاللّٰهِ وَاصۡبِرُوۡا‌ۚ اِنَّ الۡاَرۡضَ لِلّٰهِۙ يُوۡرِثُهَا مَنۡ يَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِهٖ‌ؕ وَالۡعٰقِبَةُ لِلۡمُتَّقِيۡنَ‏﴾

১২৮.) মূসা তার জাতিকে বললোঃ “আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও এবং সবর করো। এ পৃথিবী তো আল্লাহরই। তিনি নিজের বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে চান তাকে এর উত্তরাধিকারী করেন। আর যারা তাঁকে ভয় করে কাজ করে চূড়ান্ত সাফল্য তাদের জন্য নির্ধারিত।” আরাফ, ৭ঃ১২৮।

৪০।
﴿ وَاَوۡرَثۡنَا الۡقَوۡمَ الَّذِيۡنَ كَانُوۡا يُسۡتَضۡعَفُوۡنَ مَشَارِقَ الۡاَرۡضِ وَمَغَارِبَهَا الَّتِىۡ بٰرَكۡنَا فِيۡهَا‌ؕ وَتَمَّتۡ كَلِمَتُ رَبِّكَ الۡحُسۡنَىٰ عَلٰى بَنِىۡۤ اِسۡرٰۤءِيۡلَ ۙ بِمَا صَبَرُوۡا‌ؕ وَدَمَّرۡنَا مَا كَانَ يَصۡنَعُ فِرۡعَوۡنُ وَقَوۡمُهٗ وَمَا كَانُوۡا يَعۡرِشُوۡنَ‏﴾

১৩৭.) আর তাদের জায়গায় আমি প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম দুর্বল ও অধোপতিত করে রাখা মানব গোষ্ঠীকে। অতঃপর যে ভূখণ্ডে আমি প্রাচুর্যে ভরে দিয়েছিলাম, তার পূর্ব ও পশ্চিম অংশকে তাদেরই করতল গত করে দিয়েছিলাম।৯৭ এভাবে বনী ইসরাঈলের ব্যাপারে তোমার রবের কল্যানের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হয়েছে। কারণ তারা সবর করেছিল। আর ফেরাউন ও তার জাতি যা কিছু তৈরী করেছিলও উচূ করছিল তা সব ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আরাফ, ৭ঃ১৩৭।

সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৭

সবর সিরিজ -৩

সবর সম্পর্কে কুরআনে বর্ণিত আয়াত সংকলন

২১।
﴿الَّذِيۡنَ اِذَا ذُكِرَ اللّٰهُ وَجِلَتۡ قُلُوۡبُهُمۡ وَالصّٰبِرِيۡنَ عَلٰى مَاۤ اَصَابَهُمۡ وَالۡمُقِيۡمِىۡ الصَّلٰوةِۙ وَمِمَّا رَزَقۡنٰهُمۡ يُنۡفِقُوۡنَ‏﴾
 যাদের অবস্থা এই যে, আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে তাদের হৃদয় কেঁপে ওঠে, যে বিপদই তাদের ওপর আসে তার ওপর তারা সবর করে, নামায কায়েম করে এবং যা কিছু রিযিক তাদেরকে আমি দিয়েছি তা থেকে খরচ করে। হাজ্জ, ২২ঃ ৩৫।
২২।

﴿ اُولٰٓٮِٕكَ يُجۡزَوۡنَ الۡغُرۡفَةَ بِمَا صَبَرُوۡا وَيُلَقَّوۡنَ فِيۡهَا تَحِيَّةً وَّسَلٰمًاۙ‏﴾
এরাই নিজেদের সবরের ফল উন্নত মনজিলের আকারে পাবে। অভিবাদন ও সালাম সহকারে তাদের সেখানে অভ্যর্থনা করা হবে। ফুরকান, ২৫ঃ ৭৫।
২৩।

﴿ فَاصۡبِرۡ اِنَّ وَعۡدَ اللّٰهِ حَقٌّ‌ وَّلَا يَسۡتَخِفَّنَّكَ الَّذِيۡنَ لَا يُوۡقِنُوۡنَ‏﴾
কাজেই (হে নবী!) সবর করো, অবশ্যই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং যারা বিশ্বাস করে না তারা যেন কখনোই তোমাকে গুরুত্বহীন মনে না করে। রুম, ৩০ঃ ৬০।
২৪।
﴿ يٰبُنَىَّ اَقِمِ الصَّلٰوةَ وَاۡمُرۡ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَانۡهَ عَنِ الۡمُنۡكَرِ وَاصۡبِرۡ عَلٰى مَاۤ اَصَابَكَ‌ؕ اِنَّ ذٰلِكَ مِنۡ عَزۡمِ الۡاُمُوۡرِ‌ۚ‏﴾
 হে পুত্র! নামায কায়েম করো, সৎকাজের হুকুম দাও, খারাপ কাজে নিষেধ করো এবং যা কিছু বিপদই আসুক সেজন্য সবর করো।একথাগুলোর জন্য বড়ই তাকিদ করা হয়েছে। লুকমান, ৩১ঃ ১৭।
২৫।

﴿ اِنَّ الۡمُسۡلِمِيۡنَ وَالۡمُسۡلِمٰتِ وَالۡمُؤۡمِنِيۡنَ وَالۡمُؤۡمِنٰتِ وَالۡقٰنِتِيۡنَ وَالۡقٰنِتٰتِ وَالصّٰدِقِيۡنَ وَالصّٰدِقٰتِ وَالصّٰبِرِيۡنَ وَالصّٰبِرٰتِ وَالۡخٰشِعِيۡنَ وَالۡخٰشِعٰتِ وَالۡمُتَصَدِّقِيۡنَ وَالۡمُتَصَدِّقٰتِ وَالصّآٮِٕمِيۡنَ وَالصّٰٓٮِٕمٰتِ وَالۡحٰفِظِيۡنَ فُرُوۡجَهُمۡ وَالۡحٰفِظٰتِ وَالذّٰكِرِيۡنَ اللّٰهَ كَثِيۡرًا وَّالذّٰكِرٰتِۙ اَعَدَّ اللّٰهُ لَهُمۡ مَّغۡفِرَةً وَّاَجۡرًا عَظِيۡمًا‏﴾
একথা সুনিশ্চিত যে, যে পুরুষ ও নারী মুসলিম, মু’মিন, হুকুমের অনুগত, সত্যবাদী, সবরকারী, আল্লাহর সামনে বিনত, সাদকাদানকারী, রোযা পালনকারী,  নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী এবং আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণকারী আল্লাহ তাদের জন্য মাগফিরাত এবং প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আহজাব, ৩৩ঃ ৩৫।
২৬।
فَقَالُوۡا رَبَّنَا بٰعِدۡ بَيۡنَ اَسۡفَارِنَا وَظَلَمُوۡۤا اَنۡفُسَهُمۡ فَجَعَلۡنٰهُمۡ اَحَادِيۡثَ وَمَزَّقۡنٰهُمۡ كُلَّ مُمَزَّقٍؕ اِنَّ فِىۡ ذٰلِكَ لَاٰيٰتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُوۡرٍ﴾
 কিন্তু তারা বলল, “হে আমাদের রব! আমাদের ভ্রমণের দূরত্ব দীর্ঘায়িত করো।” তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছে। শেষ পর্যন্ত আমি তাদেরকে কাহিনী বানিয়ে রেখে দিয়েছি এবং তাদেরকে একদম ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছি। নিশ্চিতভাবেই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে বেশী বেশী সবরকারী ও বেশী বেশী কৃতজ্ঞ প্রতিটি ব্যক্তির জন্য। সাবা, ৩৪ঃ ১৯।
২৭।
﴿ قُلۡ يٰعِبَادِ الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا اتَّقُوۡا رَبَّكُمۡ‌ؕ لِلَّذِيۡنَ اَحۡسَنُوۡا فِىۡ هٰذِهِ الدُّنۡيَا حَسَنَةٌ‌ ؕ وَاَرۡضُ اللّٰهِ وَاسِعَةٌ‌ ؕ اِنَّمَا يُوَفَّى الصّٰبِرُوۡنَ اَجۡرَهُمۡ بِغَيۡرِ حِسَابٍ‏﴾
 [হে নবী, (সা.)] বলো, হে আমার সেসব বান্দা যারা ঈমান গ্রহণ করেছো তোমাদের রবকে ভয় করো। যারা এ পৃথিবীতে সদাচরণ গ্রহণ করেছে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ  আর আল্লাহর পৃথিবী তো অনেক বড়।  ধৈর্যশীলদেরকে তো অঢেল পুরস্কার দেয়া হবে। ঝুমার,৩৯ঃ ১০।
২৮।
﴿ فَاصۡبِرۡ اِنَّ وَعۡدَ اللّٰهِ حَقٌّ وَّاسۡتَغۡفِرۡ لِذَنۡۢبِكَ وَسَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّكَ بِالۡعَشِىِّ وَالۡاِبۡكَارِ﴾
অতএব, হে নবী, ধৈর্যধারণ করো। আল্লাহর ওয়াদা সত্য, নিজের ভুল-ত্রুটির জন্য মাফ চাও। মুমিন, ৪০ঃ ৫৫।
২৯।
 اِنۡ يَّشَاۡ يُسۡكِنِ الرِّيۡحَ فَيَظۡلَلۡنَ رَوَاكِدَ عَلٰى ظَهۡرِهٖؕ اِنَّ فِىۡ ذٰلِكَ لَاٰيٰتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُوۡرٍۙ‏﴾
 আল্লাহ চাইলে বাতাসকে থামিয়ে দেবেন আর তখন সেগুলো সমুদ্রের বুকে নিশ্চল দাঁড়িয়ে যাবে। ---এর মধ্যে সেই সব লোকদের প্রত্যেকের জন্য বড় বড় নিদর্শন রয়েছে যারা পূর্ণ মাত্রায় ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞ। শুরা, ৪২ঃ ৩৩।
৩০।
 فَاصۡبِرۡ كَمَا صَبَرَ اُولُوۡا الۡعَزۡمِ مِنَ الرُّسُلِ وَلَا تَسۡتَعۡجِل لَّهُمۡ‌ؕ كَاَنَّهُمۡ يَوۡمَ يَرَوۡن مَا يُوۡعَدُوۡنَۙ لَمۡ يَلۡبَثُوۡۤا اِلَّا سَاعَةً مِّنۡ نَّهَارٍ ‌ؕ بَلٰغٌ‌‌ۚ فَهَلۡ يُهۡلَكُ اِلَّا الۡقَوۡمُ الۡفٰسِقُوۡنَ‏﴾
অতএব, হে নবী, দৃঢ়চেতা রসূলদের মত ধৈর্য ধারণ করো এবং তাদের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করো না।৩৭ এদেরকে এখন যে জিনিসের ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে যেদিন এরা তা দেখবে সেদিন এদের মনে হবে যেন পৃথিবীতে অল্প কিছুক্ষণের বেশি অবস্থান করেনি। কথা পৌঁছিয়ে দেয়া হয়েছে। অবাধ্য লোকেরা ছাড়া কি আর কেউ ধ্বংস হবে? আহকাফ, ৪৬ঃ ৩৫

বুধবার, ২ আগস্ট, ২০১৭

সবর সিরিজ -২

সবর সম্পর্কে কুরআনে বর্ণিত আয়াত সংকলন

১১।
﴿قَالُوۡۤا ءَاِنَّكَ لَاَنۡتَ يُوۡسُفُ‌ؕ قَالَ اَنَا يُوۡسُفُ وَهٰذَاۤ اَخِىۡ‌ قَدۡ مَنَّ اللّٰهُ عَلَيۡنَاؕ اِنَّهٗ مَنۡ يَّتَّقِ وَيَصۡبِرۡ فَاِنَّ اللّٰهَ لَا يُضِيۡعُ اَجۡرَ الۡمُحۡسِنِيۡنَ‏‏﴾

 তারা চমকে উঠে বললো, “হায় তুমিই ইউসুফ নাকি?” সে বললো, “হ্যাঁ, আমি ইউসুফ এবং এই আমার সহোদর। আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আসলে কেউ যদি তাকওয়া ও সবর অবলম্বন করে তাহলে আল্লাহর কাছে এ ধরণের সৎলোকদের কর্মফল নষ্ট হয়ে যায় না।”
১২।
﴿ وَالَّذِيۡنَ صَبَرُوۡا ابۡتِغَآءَ وَجۡهِ رَبِّهِمۡ وَاَقَامُوۡا الصَّلٰوةَ وَاَنۡفَقُوۡا مِمَّا رَزَقۡنٰهُمۡ سِرًّا وَّعَلَانِيَةً وَّيَدۡرَءُوۡنَ بِالۡحَسَنَةِ السَّيِّئَةَ اُولٰۤٮِٕكَ لَهُمۡ عُقۡبَى الدَّارِۙ‏﴾

তাদের অবস্থা হয় এই যে, নিজেদের রবের সন্তুষ্টির জন্য তারা সবর করে,৩৯ নামায কায়েম করে, আমার দেয়া রিযিক থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে খরচ করে এবং ভালো দিয়ে মন্দ দূরীভূত করে।৪০ আখেরাতের গৃহ হচ্ছে তাদের জন্যই। অর্থাৎ এমন সব বাগান যা হবে তাদের চিরস্থায়ী আবাস। রাদ- ২২।
১৩।
وَلَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا مُوۡسٰى بِاٰيٰتِنَاۤ اَنۡ اَخۡرِجۡ قَوۡمَكَ مِنَ الظُّلُمٰتِ اِلَى النُّوۡرِ ۙ وَذَكِّرۡهُمۡ بِاَيّٰٮمِ اللّٰهِ‌ؕ اِنَّ فِىۡ ذٰلِكَ لَاَيٰتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُوۡرٍ﴾

 আমি এর আগে মূসাকেও নিজের নিদর্শনাবলী সহকারে পাঠিয়ে ছিলাম। তাকেও আমি হুকুম দিয়েছিলাম, নিজের সম্প্রদায়কে অন্ধকার থেকে বের করে আলোকের মধ্যে নিয়ে এসো এবং তাদেরকে ইতিহাসের শিক্ষণীয় ঘটনাবলী শুনিয়ে উপদেশ দাও। এ ঘটনাবলীর মধ্যে বিরাট নিদর্শন রয়েছে এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে সবর করে ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। ইবরাহীম - ৫।
১৪।

﴿ مَا عِنۡدَكُمۡ يَنۡفَدُ‌ وَمَا عِنۡدَ اللّٰهِ بَاقٍؕ وَلَنَجۡزِيَنَّ الَّذِيۡنَ صَبَرُوۡۤا اَجۡرَهُمۡ بِاَحۡسَنِ مَا كَانُوۡا يَعۡمَلُوۡنَ‏﴾

 তোমাদের কাছে যা কিছু আছে খরচ হয়ে যাবে এবং আল্লাহর কাছে যা কিছু আছে তাই স্থায়ী হবে এবং আমি অবশ্যই যারা সবরের পথ অবলম্বন করবে তাদের প্রতিদান তাদের সর্বোত্তম কাজ অনুযায়ী দেবো। নাহল- ১৬ঃ৯৬।
১৫।
﴿ ثُمَّ اِنَّ رَبَّكَ لِلَّذِيۡنَ هَاجَرُوۡا مِنۡۢ بَعۡدِ مَا فُتِنُوۡا ثُمَّ جٰهَدُوۡا وَصَبَرُوۡۤاۙ اِنَّ رَبَّكَ مِنۡۢ بَعۡدِهَا لَغَفُوۡرٌ رَّحِيۡمٌ‏﴾

পক্ষান্তরে যাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, (ঈমান আনার কারণে) যখন তারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা বাড়ি-ঘর ত্যাগ করেছে, হিজরত করেছে, আল্লাহর পথে কষ্ট সহ্য করেছে এবং সবর করেছে, ১১১ তাদের জন্য অবশ্যই তোমার রব ক্ষমাশীল ও করুণাময়। নাহল, ১৬ঃ ১১০।
১৬।

﴿وَاِنۡ عَاقَبۡتُمۡ فَعَاقِبُوۡا بِمِثۡلِ مَا عُوۡقِبۡتُمۡ بِهٖ‌ۚ وَلَٮِٕنۡ صَبَرۡتُمۡ لَهُوَ خَيۡرٌ لِّلصّٰبِرِيۡنَ‏﴾

 আর যদি তোমরা প্রতিশোধ নাও, তাহলে ঠিক ততটুকু নাও যতটুকু তোমাদের ওপর বাড়াবাড়ি করা হয়েছে। কিন্তু যদি তোমরা সবর করো তাহলে নিশ্চিতভাবেই এটা সবরকারীদের পক্ষে উত্তম। নাহল, ১৬ঃ ১২৬।
১৭।

﴿وَاصۡبِرۡ وَمَا صَبۡرُكَ اِلَّا بِاللّٰهِ‌ وَلَا تَحۡزَنۡ عَلَيۡهِمۡ وَلَا تَكُ فِىۡ ضَيۡقٍ مِّمَّا يَمۡكُرُوۡنَ﴾

হে মুহাম্মাদ! সবর অবলম্বন করো--- আর তোমার এ সবর আল্লাহরই সুযোগ দানের ফলমাত্র--- এদের কার্যকলাপে দুঃখ করো না এবং এদের চক্রান্তের কারণে মনঃক্ষুণ্ণ হয়ো না। নাহল, ১৬ঃ ১২৭।
১৮।
﴿ قَالَ سَتَجِدُنِىۡۤ اِنۡ شَآءَ اللّٰهُ صَابِرًا وَّلَاۤ اَعۡصِىۡ لَكَ اَمۡرًا‏﴾

 মূসা বললো, “ইন্শাআল্লাহ আপনি আমাকে সবরকারী হিসেবেই পাবেন এবং কোন ব্যাপারেই আমি আপনার হুকুম অমান্য করবো না।” কাহাফ,১৮ঃ ৬৯।
১৯।
﴿رَّبُّ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ وَمَا بَيۡنَهُمَا فَاعۡبُدۡهُ وَاصۡطَبِرۡ لِعِبَادَتِهٖ‌ؕ هَلۡ تَعۡلَمُ لَهٗ سَمِيًّا‏﴾

তিনি আসমান ও যমীনের এবং এ দূয়ের মাঝখানে যা কিছু আছে সবকিছুর রব। কাজেই আপনি তার বন্দেগী করুন এবং তার বন্দেগীর ওপর অবিচল থাকুন। আপনার জানা মতে তাঁর সমকক্ষ কোন সত্তা আছে কি? মারিয়াম, ১৯ঃ ৬৫।
২০।
﴿ فَاصۡبِرۡ عَلٰى مَا يَقُوۡلُوۡنَ وَسَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّكَ قَبۡلَ طُلُوۡعِ الشَّمۡسِ وَقَبۡلَ غُرُوۡبِهَا‌ۚ وَمِنۡ اٰنَآىِٕ الَّيۡلِ فَسَبِّحۡ وَاَطۡرَافَ النَّهَارِ لَعَلَّكَ تَرۡضٰى﴾

কাজেই হে মুহাম্মাদ! এরা যেসব কথা বলে তাতে সবর করো এবং নিজের রবের প্রশংসা ও গুণগান সহকারে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো সূর্য উদয়ের আগে ও তার অস্ত যাবার আগে, আর রাত্রিকালেও প্রশংসা ও মহিমা ঘোষণা করো এবং দিনের প্রান্তগুলোতেও। হয়তো এতে তুমি সন্তুষ্ট হয়ে যাবে। তা'হা,২০ঃ ১৩০।

মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০১৭

সবর সিরিজ -১

সবর সম্পর্কে কুরআনে বর্ণিত আয়াত সংকলন
১।

﴿ وَاسۡتَعِيۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَالصَّلٰوةِ‌ؕ وَاِنَّهَا لَكَبِيۡرَةٌ اِلَّا عَلَى الۡخٰشِعِيۡنَ‏﴾

 সবর ও নামায সহকারে সাহায্য নাও। নিঃসন্দেহে নামায বড়ই কঠিন কাজ, তাদের জন্য নয় যারা বিনয়ী।  বাকারা ২ঃ৪৫।
২।
﴿ يٰٓاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا اسۡتَعِيۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَالصَّلٰوةِؕ اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الصّٰبِرِيۡنَ‏﴾

হে ঈমানদারগণ! সবর ও নামাযের দ্বারা সাহায্য গ্রহণ করো, আল্লাহ‌ সবরকারীদের সাথে আছেন। বাকারা, ২ঃ ১৫৩।
৩।
﴿ وَلَنَبۡلُوَنَّكُمۡ بِشَىۡءٍ مِّنَ الۡخَوۡفِ وَالۡجُوۡعِ وَنَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوٰلِ وَالۡاَنۡفُسِ وَالثَّمَرٰتِؕ وَبَشِّرِ الصّٰبِرِيۡنَۙ‏﴾

আর নিশ্চয়ই আমরা ভীতি, অনাহার, প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে এবং উপার্জন ও আমদানী হ্রাস করে তোমাদের পরীক্ষা করবো। এ অবস্থায় যারা সবর করে তাদেরকে সুসংবাদ দাও। বাকারা, ২ঃ১৫৫।
৪।
...... وَاَقَامَ الصَّلٰوةَ وَاٰتَى الزَّکٰوةَ‌ ۚ وَالۡمُوۡفُوۡنَ بِعَهۡدِهِمۡ اِذَا عٰهَدُوۡاۚ وَالصّٰبِرِيۡنَ فِىۡ الۡبَاۡسَآءِ وَالضَّرَّآءِ وَحِيۡنَ الۡبَاۡسِؕ اُولٰٓٮِٕكَ الَّذِيۡنَ صَدَقُوۡاؕ وَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الۡمُتَّقُوۡنَ‏﴾

.....আর নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দান করবে। যারা অঙ্গীকার করে তা পূর্ণ করবে এবং বিপদে-অনটনে ও হক–বাতিলের সংগ্রামে সবর করবে তারাই সৎ ও সত্যাশ্রয়ী এবং তারাই মুত্তাকী। বাকারা, ২ঃ১৭৭।
৫।
﴿ لَتُبۡلَوُنَّ فِىۡۤ اَمۡوَالِكُمۡ وَاَنۡفُسِكُمۡ وَلَتَسۡمَعُنَّ مِنَ الَّذِيۡنَ اُوۡتُوۡا الۡكِتٰبَ مِنۡ قَبۡلِكُمۡ وَمِنَ الَّذِيۡنَ اَشۡرَكُوۡۤا اَذًى كَثِيۡرًا‌ؕ وَاِنۡ تَصۡبِرُوۡا وَتَتَّقُوۡا فَاِنَّ ذٰلِكَ مِنۡ عَزۡمِ الۡاُمُوۡرِ‏﴾

(হে মুসলমানগণ!) তোমাদের অবশ্যি ধন ও প্রাণের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে এবং তোমরা আহলি কিতাব ও মুশরিকদের থেকে অনেক কষ্টদায়ক কথা শুনবে। যদি এমন অবস্থায় তোমরা সবর ও তাকওয়ার নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকো তাহলে তা হবে বিরাট সাহসিকতার পরিচায়ক। আল ইমরান- ১৮৬।

৬।

﴿ وَاَطِيۡعُوۡا اللّٰهَ وَرَسُوۡلَهٗ وَلَا تَنَازَعُوۡا فَتَفۡشَلُوۡا وَتَذۡهَبَ رِيۡحُكُمۡ‌ وَاصۡبِرُوۡا‌ؕ اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الصّٰبِرِيۡنَ‌ۚ‏﴾

আর আল্লাহ‌ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করো এবং নিজেদের মধ্যে বিবাদ করো না, তাহলে তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা দেখা দেবে এবং তোমাদের প্রতিপত্তির দিন শেষ হয়ে যাবে। সবরের পথ অবলম্বন করো, অবশ্যি আল্লাহ‌ সবরকারীদের সাথে রয়েছেন। আনফাল, ৮ঃ৪৬।
৭।
﴿ يٰۤاَيُّهَا النَّبِىُّ حَرِّضِ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ عَلَى الۡقِتَالِ‌ؕ اِنۡ يَّكُنۡ مِّنۡكُمۡ عِشۡرُوۡنَ صٰبِرُوۡنَ يَغۡلِبُوۡا مِائَتَيۡنِ‌ۚ وَاِنۡ يَّكُنۡ مِّنۡكُمۡ مِّائَةٌ يَّغۡلِبُوۡۤا اَلۡفًا مِّنَ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا بِاَنَّهُمۡ قَوۡمٌ لَّا يَفۡقَهُوۡنَ‏﴾

 হে নবী! মুমিনদেরকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করো। তোমাদের মধ্যে বিশজন সবরকারী থাকলে তারা দু'শ জনের ওপর বিজয়ী হবে। আর যদি এমনি ধরনের একশ জন থাকে, তাহলে তারা সত্য অস্বীকারকারীদের মধ্য থেকে এক হাজার জনের ওপর বিজয়ী হবে। কারণ তারা এমন এক ধরনের লোক যাদের বোধশক্তি নেই। আনফাল, ৮ঃ ৬৫।
৮।
﴿ اَلۡـٰٔنَ خَفَّفَ اللّٰهُ عَنۡكُمۡ وَعَلِمَ اَنَّ فِيۡكُمۡ ضَعۡفًا‌ؕ فَاِنۡ يَّكُنۡ مِّنۡكُمۡ مِّائَةٌ صَابِرَةٌ يَّغۡلِبُوۡا مِائَتَيۡنِ‌ؕ وَاِنۡ يَّكُنۡ مِّنۡكُمۡ اَلۡفٌ يَّغۡلِبُوۡۤا اَلۡفَيۡنِ بِاِذۡنِ اللّٰهِؕ وَاللّٰهُ مَعَ الصّٰبِرِيۡنَ﴾

বেশ, এখন আল্লাহ‌ তোমাদের বোঝা হালকা করে দিয়েছেন এবং তিনি জেনেছেন যে, এখনো তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা রয়েছে। কাজেই যদি তোমাদের মধ্যে একশ জন সবরকারী হয়, তাহলে তারা দু'শ জনের ওপর এবং এক হাজার লোক এমনি পর্যায়ের হলে, তারা দু'হাজারের ওপর আল্লাহর হুকুমে বিজয়ী হবে। আর আল্লাহ‌ সবরকারীদের সাথে আছেন। আনফাল, ৮ঃ৬৬।

৯।

﴿ وَاتَّبِعۡ مَا يُوۡحٰىۤ اِلَيۡكَ وَاصۡبِرۡ حَتّٰى يَحۡكُمَ اللّٰهُ‌‌ۖ‌ۚ وَهُوَ خَيۡرُ الۡحٰكِمِيۡنَ‏﴾

হে নবী! তোমার কাছে অহীর মাধ্যমে যে হেদায়াত পাঠানো হচ্ছে তুমি তার অনুসরণ করো। আর আল্লাহ‌ ফায়সালা দান করা পর্যন্ত সবর করো এবং তিনিই সবচেয়ে ভালো ফায়সালাকারী। ইউনুছ, ১০ঃ১০৯।
১০।

﴿تِلْكَ مِنْ أَنبَاء الْغَيْبِ نُوحِيهَا إِلَيْكَ مَا كُنتَ تَعْلَمُهَا أَنتَ وَلاَ قَوْمُكَ مِن قَبْلِ هَـذَا فَاصْبِرْ إِنَّ الْعَاقِبَةَ لِلْمُتَّقِين﴾

 হে মুহাম্মাদ! এসব গায়েবের খবর, যা আমি তোমাকে অহীর মাধ্যমে জানাচ্ছি। এর আগে তুমি এসব জানতে না এবং তোমার কওমও জানতো না। কাজেই সবর করো। মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে শুভ পরিণাম। হুদ, ১১ঃ ৪৯।