بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُّبِينًا
১) হে নবী, আমি তোমাকে সুস্পষ্ট বিজয় দান করেছি১
﴿لِّيَغْفِرَ
لَكَ اللَّهُ مَا تَقَدَّمَ مِن ذَنبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ وَيُتِمَّ
نِعْمَتَهُ عَلَيْكَ وَيَهْدِيَكَ صِرَاطًا مُّسْتَقِيمًا﴾
২) যাতে আল্লাহ তোমার আগের ও পরের সব ক্রটি-বিচ্যুতি মাফ করে দেন, ২ তোমার জন্য তাঁর নিয়ামতকে পূর্ণত্বা দান করেন, ৩
﴿وَيَنصُرَكَ اللَّهُ نَصْرًا عَزِيزًا﴾
৩) তোমাকে সরল সহজ পথ দেখিয়ে দেন ৪ এবং অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে সাহায্য করেন৷৫
﴿هُوَ
الَّذِي أَنزَلَ السَّكِينَةَ فِي قُلُوبِ الْمُؤْمِنِينَ لِيَزْدَادُوا
إِيمَانًا مَّعَ إِيمَانِهِمْ ۗ وَلِلَّهِ جُنُودُ السَّمَاوَاتِ
وَالْأَرْضِ ۚ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا﴾
৪) তিনিই তো সে সত্তা যিনি মু’মিনদের মনে প্রশান্তি নাযিল করেছেন ৬ যাতে তারা নিজেদের ঈমান আরো বাড়িয়ে নেয়৷ ৭ আসমান ও যমীনের সমস্ত বাহিনী আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন৷ তিনি মহাজ্ঞানী ও কৌশলী৷ ৮
﴿لِّيُدْخِلَ
الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا
الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَيُكَفِّرَ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ ۚ
وَكَانَ ذَٰلِكَ عِندَ اللَّهِ فَوْزًا عَظِيمًا﴾
৫) (এ কাজ তিনি এ জন্য করেছেন) যাতে ঈমানদার নারী ও পুরুষদেরকে ৯ চিরদিন
অবস্থানের জন্য এমন জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেন যার পাদদেশ দিয়ে
ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহিত হতে থাকবে এবং তাদের মন্দ কর্মসমূহ দূর করবেন৷ ১০ এটা আল্লাহর কাছে বড় সফলতা৷
﴿وَيُعَذِّبَ
الْمُنَافِقِينَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْمُشْرِكِينَ وَالْمُشْرِكَاتِ
الظَّانِّينَ بِاللَّهِ ظَنَّ السَّوْءِ ۚ عَلَيْهِمْ دَائِرَةُ السَّوْءِ ۖ
وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَلَعَنَهُمْ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَهَنَّمَ ۖ
وَسَاءَتْ مَصِيرًا﴾
৬) আর যেসব মুনাফিক নারী ও পুরুষ এবং মুশরিক নারী ও পুরুষ আল্লাহ সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করে ১১ তাদের শাস্তি দেবেন৷ তারা নিজেরাই অকল্যাণর চক্রে পড়ে গিয়েছে৷ ১২ আল্লাহর গযব পড়েছে তাদের ওপর তিনি লা’নত করেছেন তাদেরকে এবং তাদের জন্য জাহান্নাম প্রস্তুত করে রেখেছেন -যা অত্যন্ত জঘন্য জায়গা৷
﴿وَلِلَّهِ جُنُودُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا﴾
৭) আসমান ও যমীনের সকল বাহিনী আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন৷ তিনি মহাজ্ঞানী ও কৌশলী৷১৩
﴿إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا﴾
৮) হে নবী, আমি তোমাকে সাক্ষ্যদানকারী, ১৪ সুসংবাদদানকারী এবং সতর্ককারী ১৫ হিসেবে পাঠিয়েছি-
﴿لِّتُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُ وَتُسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا﴾
৯)
যাতে হে মানুষ, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আন, তাঁকে সাহায্য
কর, তাঁর প্রতি সম্মান ও মর্যাদা দেখাও এবং সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা
বর্ণনা কর৷১৬
﴿إِنَّ
الَّذِينَ يُبَايِعُونَكَ إِنَّمَا يُبَايِعُونَ اللَّهَ يَدُ اللَّهِ
فَوْقَ أَيْدِيهِمْ ۚ فَمَن نَّكَثَ فَإِنَّمَا يَنكُثُ عَلَىٰ نَفْسِهِ ۖ
وَمَنْ أَوْفَىٰ بِمَا عَاهَدَ عَلَيْهُ اللَّهَ فَسَيُؤْتِيهِ أَجْرًا
عَظِيمًا﴾
১০) হে নবী যারা তোমার হাতে বাইয়াত করছিলো প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর কাছেই বাইয়াত করছিলো৷ ১৭ তাদের হাতের ওপর ছিল আল্লাহর হাত৷ ১৮ যে
প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করবে তার প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করার অশুভ পরিণাম তার নিজের ওপরেই
বর্তাবে৷ আর যে আল্লাহর সাথে কৃত এ প্রতিশ্রুতি পালন করবে, ১৯ আল্লাহ অচিরেই তাকে বড় পুরস্কার দান করবেন৷
﴿سَيَقُولُ
لَكَ الْمُخَلَّفُونَ مِنَ الْأَعْرَابِ شَغَلَتْنَا أَمْوَالُنَا
وَأَهْلُونَا فَاسْتَغْفِرْ لَنَا ۚ يَقُولُونَ بِأَلْسِنَتِهِم مَّا
لَيْسَ فِي قُلُوبِهِمْ ۚ قُلْ فَمَن يَمْلِكُ لَكُم مِّنَ اللَّهِ شَيْئًا
إِنْ أَرَادَ بِكُمْ ضَرًّا أَوْ أَرَادَ بِكُمْ نَفْعًا ۚ بَلْ كَانَ
اللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا﴾
১১) হে নবী (সা)! বদ্দু আরবদের ২০ মধ্যে
যাদেরকে পিছনে ছেড়ে যাওয়া হয়েছিল এখন তারা এসে অবশ্যই তোমাকে বলবেঃ
“আমাদেরকে আমাদের ধন-মাল ও সন্তান-সন্ততিদের চিন্তা-ই ব্যস্ত রেখেছিল, আপনি
আমাদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করুন৷” এ লোকেরা নিজেদের মুখে সেসব কথা বলছে
যা তাদের অন্তরে থাকে না৷ ২১ তাদেরকে
বলো ঠিক আছে৷ ইহাই যদি সত্য হয়ে থাকে তা হলে তোমাদের ব্যাপারে আল্লাহর
ফায়সালাকে কার্যকর হওয়া থেকে বাধাদানের সামান্য ক্ষমতা কি কারো আছে যদি
তিনি তোমাদের কোন ক্ষতি করতে চান ; অথবা চান কোন কলাণ দান করতে ? তোমাদের
কাজ-কর্ম সম্পর্কে তো আল্লাহই ভালভাবে অবহিত২২
﴿بَلْ
ظَنَنتُمْ أَن لَّن يَنقَلِبَ الرَّسُولُ وَالْمُؤْمِنُونَ إِلَىٰ
أَهْلِيهِمْ أَبَدًا وَزُيِّنَ ذَٰلِكَ فِي قُلُوبِكُمْ وَظَنَنتُمْ ظَنَّ
السَّوْءِ وَكُنتُمْ قَوْمًا بُورًا﴾
১২) (কিন্তু আসল কথা তো তা নয় যা
তোমরা বলছো); বরং তোমরা মনে করি নিয়েছে যে, রসূল ও মু’মিনগণ নিজেদের ঘরে
কখনই ফিরতে পারবে না৷ এ খেয়ালটা তোমাদের অন্তরে খুব ভাল লেগেছিল ২৩ এবং তোমরা খুবই খারাপ ধারণা মনে স্থান দিয়েছো, আসলে তোমরা খুবই খারাপ মন-মানসিকতার লোক৷ ২৪
﴿وَمَن لَّمْ يُؤْمِن بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ فَإِنَّا أَعْتَدْنَا لِلْكَافِرِينَ سَعِيرًا﴾
১৩) আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি যারা ঈমান আনেনি এমন কাফেরদের জন্য আমরা দাউ দাউ করে জ্বলা অগ্নি কুণ্ডলি তৈরী করে রেখেছি৷২৫
﴿وَلِلَّهِ
مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ يَغْفِرُ لِمَن يَشَاءُ وَيُعَذِّبُ
مَن يَشَاءُ ۚ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا﴾
১৪) আকাশ মণ্ডলী ও
পৃথিবীর বাদশাহীর (প্রভূত্ব ও প্রশাসন ক্ষমতা) একচ্ছত্র মালিক একমাত্র
আল্লাহ৷ তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন৷
আল্লাহ-ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়৷ ২৬
﴿سَيَقُولُ
الْمُخَلَّفُونَ إِذَا انطَلَقْتُمْ إِلَىٰ مَغَانِمَ لِتَأْخُذُوهَا
ذَرُونَا نَتَّبِعْكُمْ ۖ يُرِيدُونَ أَن يُبَدِّلُوا كَلَامَ اللَّهِ ۚ
قُل لَّن تَتَّبِعُونَا كَذَٰلِكُمْ قَالَ اللَّهُ مِن قَبْلُ ۖ
فَسَيَقُولُونَ بَلْ تَحْسُدُونَنَا ۚ بَلْ كَانُوا لَا يَفْقَهُونَ إِلَّا
قَلِيلًا﴾
১৫) তোমরা যখন গনীমাতের মাল লাভ করার জন্য যেতে থাকবে তখন এ
পিছনে রেখে যাওয়া লোকেরা তোমাকে অবশ্যই বলবে যে, আমাদরকেও তোমাদের সাথে
যেতে দাও৷ ২৭ এরা আল্লাহর ফরমান পরিবর্তন করে দিতে চায়৷ ২৮ এদের স্পষ্ট ভাষায় বলে দাওঃ ‘তোমরা কখনই আমাদের সাথে যেতে পারো না, আল্লাহ তো আগেই একথা বলে দিয়েছেন৷” ২৯ এর বলবেঃ “না, তোমরাই বরং আমাদের প্রতি হিংসা পোষণ কর৷” (অথচ এটা কোন হিংসার কথা নয়) আসলে সঠিক কথা খুব কমই বুঝে৷
﴿قُل
لِّلْمُخَلَّفِينَ مِنَ الْأَعْرَابِ سَتُدْعَوْنَ إِلَىٰ قَوْمٍ أُولِي
بَأْسٍ شَدِيدٍ تُقَاتِلُونَهُمْ أَوْ يُسْلِمُونَ ۖ فَإِن تُطِيعُوا
يُؤْتِكُمُ اللَّهُ أَجْرًا حَسَنًا ۖ وَإِن تَتَوَلَّوْا كَمَا
تَوَلَّيْتُم مِّن قَبْلُ يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا﴾
১৬) এ
পিছনে রেখে যাওয়া বদ্দু আরবদেরকে বলে দাওঃ “খুব শীঘ্রই তোমাদেরকে এমন সব
লোকের সাথে লড়াই করার জন্য ডাকা হবে যারা বড়ই শক্তি সম্পন্ন৷” তোমাদেরকে
তাদের সাথে যুদ্ধ করতে হবে, কিংবা তারা অনুগত হয়ে যাবে৷ ৩০ সে
সময় তোমরা জিহাদের নির্দেশ পালন করলে আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম সওয়াব দিবেন৷
আর যদি তোমরা পিছনে হটে যাও যেমন পূর্বে হটে গিয়েছিল, তাহলে আল্লাহ
তোমাদেরকে কঠিন পীড়াদায়ক শাস্তি দেবেন৷
﴿لَّيْسَ
عَلَى الْأَعْمَىٰ حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْأَعْرَجِ حَرَجٌ وَلَا عَلَى
الْمَرِيضِ حَرَجٌ ۗ وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ
تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ وَمَن يَتَوَلَّ يُعَذِّبْهُ
عَذَابًا أَلِيمًا﴾
১৭) যদি অন্ধ, পংগু ও রোগাক্রান্ত লোক জিহাদে না আসে তাহলে কোন দোষ নেই ৷৩১ যে
কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে, আল্লাহ তাকে সেসব জান্নাতে প্রবেশ
করাবেন, যেসবের নিম্নদেশে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহমান থাকবে৷ আর যে মুখ
ফিরিয়ে থাকবে আল্লাহ তাকে মর্মান্তিক আযাব দেবেন৷
﴿لَّقَدْ
رَضِيَ اللَّهُ عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ
الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمْ فَأَنزَلَ السَّكِينَةَ
عَلَيْهِمْ وَأَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِيبًا﴾
১৮) আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন তারা গাছের নিচে তোমরা কাছে বাইয়াত করছিলো৷ ৩২ তিনি তাদের মনের অবস্থা জানতেন৷ তাই তিনি তাদের ওপর প্রশান্তি নাযিল করেছেন, ৩৩ পুরস্কার স্বরূপ তাদেরকে আশু বিজয় দান করেছেন৷
﴿وَمَغَانِمَ كَثِيرَةً يَأْخُذُونَهَا ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمًا﴾
১৯) এবং প্রচুর গনীমতের সম্পদ দান করেছেন যা তারা অচিরেই লাভ করবে৷ ৩৪ আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞান৷
﴿وَعَدَكُمُ
اللَّهُ مَغَانِمَ كَثِيرَةً تَأْخُذُونَهَا فَعَجَّلَ لَكُمْ هَٰذِهِ
وَكَفَّ أَيْدِيَ النَّاسِ عَنكُمْ وَلِتَكُونَ آيَةً لِّلْمُؤْمِنِينَ
وَيَهْدِيَكُمْ صِرَاطًا مُّسْتَقِيمًا﴾
২০) আল্লাহর তোমাদরকে অঢেল গনীমতের সম্পদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যা তোমরা লাভ করবে৷ ৩৫ তিনি তোমাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিজয় দিয়েছেন ৩৬ এবং তোমাদের বিরুদ্ধে মানুষের হাত উত্তোলনকে থামিয়ে দিয়েছেন ৩৭ যাতে মু’মিনদের জন্য তা একটি নিদর্শন হয়ে থাকে৷ ৩৮ আর আল্লাহ তোমাদেরকে সোজা পথের হিদায়াত দান করেন৷৩৯
﴿وَأُخْرَىٰ لَمْ تَقْدِرُوا عَلَيْهَا قَدْ أَحَاطَ اللَّهُ بِهَا ۚ وَكَانَ اللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرًا﴾
২১)
এ ছাড়া তিনি তোমাদেরকে আরো গনীমতের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যা তোমরা এখনো
পর্যন্ত লাভ করতে পারনি৷ কিন্তু আল্লাহ তা পরিবেষ্টন করে রেখেছেন৷ ৪০ আল্লাহ সবকিছুর ওপরে ক্ষমতাবান৷
﴿وَلَوْ قَاتَلَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوَلَّوُا الْأَدْبَارَ ثُمَّ لَا يَجِدُونَ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا﴾
২২)
এ মুহূর্তেই এসব কাফের যদি তোমাদের সাথে লড়াই বাধিয়ে বসতো তাহলে অবশ্যই
পৃষ্ঠপ্রদর্শন করতো এবং কোন সহযোগী ও সাহায্যকারী পেতো না৷ ৪১
﴿سُنَّةَ اللَّهِ الَّتِي قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلُ ۖ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّةِ اللَّهِ تَبْدِيلًا﴾
২৩) এটা আল্লাহর বিধান যা পূর্ব থেকেই চলে আসছে৷ ৪২ তুমি আল্লাহর বিধানে কোন পরিবর্তন পাবে না৷
﴿وَهُوَ
الَّذِي كَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ عَنْهُم بِبَطْنِ
مَكَّةَ مِن بَعْدِ أَنْ أَظْفَرَكُمْ عَلَيْهِمْ ۚ وَكَانَ اللَّهُ بِمَا
تَعْمَلُونَ بَصِيرًا﴾
২৪) তিনিই সেই সত্তা যিনি মক্কা ভূমিতে তাদের
হাত তোমাদের থেকে আর তোমাদের হাত তাদের থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তাদের ওপর
তোমাদেরকে আধিপত্য দান করার পর৷ তোমরা যা কিছু করছিলে আল্লাহ তা দেখছিলেন৷
﴿هُمُ
الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوكُمْ عَنِ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَالْهَدْيَ
مَعْكُوفًا أَن يَبْلُغَ مَحِلَّهُ ۚ وَلَوْلَا رِجَالٌ مُّؤْمِنُونَ
وَنِسَاءٌ مُّؤْمِنَاتٌ لَّمْ تَعْلَمُوهُمْ أَن تَطَئُوهُمْ فَتُصِيبَكُم
مِّنْهُم مَّعَرَّةٌ بِغَيْرِ عِلْمٍ ۖ لِّيُدْخِلَ اللَّهُ فِي رَحْمَتِهِ
مَن يَشَاءُ ۚ لَوْ تَزَيَّلُوا لَعَذَّبْنَا الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْهُمْ
عَذَابًا أَلِيمًا﴾
২৫) এরাই তো সেসব লোক যারা কুফরী করেছে,
তোমাদেরকে মসজিদে হারামে যেতে বাধা দিয়েছে এবং কুরবানীর উটসমূহকে কুরবানী
গাহে পৌঁঠতে দেয়নি৷ ৪৩ যদি
(মক্কায়) এমন নারী পুরুষ না থাকতো যাদেরকে তোমরা চিন না অজান্তে তাদেরকে
পদদলিত করে ফেলবে এবং তাদের কারণে তোমরা বদনাম কুড়াবে এমন আশংকা না থাকতো
(তাহলে যুদ্ধ থামানো হতো না ৷ তা বন্ধ করা হয়েছে এ কারণে) যে, আল্লাহ যাকে
ইচ্ছা যেন তাঁর রহমতের মধ্যে স্থান দেন৷ সেসব মু’মিন যদি আলাদা হয়ে যেতো
তাহলে (মক্কাবাসীদের মধ্যে) যারা কাফের ছিল আমি অবশ্যই তাদেরকে কঠিন শাস্তি
দিতাম৷৪৪
﴿إِذْ
جَعَلَ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي قُلُوبِهِمُ الْحَمِيَّةَ حَمِيَّةَ
الْجَاهِلِيَّةِ فَأَنزَلَ اللَّهُ سَكِينَتَهُ عَلَىٰ رَسُولِهِ وَعَلَى
الْمُؤْمِنِينَ وَأَلْزَمَهُمْ كَلِمَةَ التَّقْوَىٰ وَكَانُوا أَحَقَّ
بِهَا وَأَهْلَهَا ۚ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا﴾
২৬) এ কারণেই যখন ঐ সব কাফেররা তাদের মনে জাহেলী সংকীর্ণতার স্থান দিল ৪৫ তখন আল্লাহ তাঁর রসূল ও ঈমানদারদের ওপর প্রশান্তি নাযিল করলেন ৪৬ এবং
তাদেরকে তাকওয়ার নীতির ওপর সুদৃঢ়রূপে প্রতিষ্ঠিত রাখলেন৷ তারাই এ জন্য
বেশী উপযুক্ত ও হকদার ছিল৷ আল্লাহ সব জিনিস সম্পর্কেই পরিজ্ঞাত৷
﴿لَّقَدْ
صَدَقَ اللَّهُ رَسُولَهُ الرُّؤْيَا بِالْحَقِّ ۖ لَتَدْخُلُنَّ
الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ إِن شَاءَ اللَّهُ آمِنِينَ مُحَلِّقِينَ
رُءُوسَكُمْ وَمُقَصِّرِينَ لَا تَخَافُونَ ۖ فَعَلِمَ مَا لَمْ تَعْلَمُوا
فَجَعَلَ مِن دُونِ ذَٰلِكَ فَتْحًا قَرِيبًا﴾
২৭) প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তাঁর রসূলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন- যা ছিল সরাসরি হক৷ ৪৭ ইনশাআল্লাহ ৪৮ তোমরা পূর্ণ নিরাপত্তার সাথে অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে৷ ৪৯ নিজেদের মাথা মুণ্ডন করবে, চুল কাটাবে ৫০ এবং
তোমাদের কোন ভয় থাকবে না৷ তোমরা যা জানতে না তিনি তা জানতেন৷ তাই স্বপ্ন
বাস্তব রূপ লাভ করার পূর্বে তিনি তোমাদেরকে এ আসন্ন বিজয় দান করেছেন৷
﴿هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَىٰ وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ ۚ وَكَفَىٰ بِاللَّهِ شَهِيدًا﴾
২৮)
আল্লাহই তো সে মহান সত্তা যিনি তাঁর রসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীন দিয়ে
পাঠিয়েছেন যেন তাকে সমস্ত দীনের ওপর বিজয়ী করে দেন৷ আর এ বাস্তবতা সম্পর্কে
আল্লাহর সাক্ষই যথেষ্ট৷৫১
﴿مُّحَمَّدٌ
رَّسُولُ اللَّهِ ۚ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ
رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ ۖ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا
مِّنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا ۖ سِيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِم مِّنْ أَثَرِ
السُّجُودِ ۚ ذَٰلِكَ مَثَلُهُمْ فِي التَّوْرَاةِ ۚ وَمَثَلُهُمْ فِي
الْإِنجِيلِ كَزَرْعٍ أَخْرَجَ شَطْأَهُ فَآزَرَهُ فَاسْتَغْلَظَ
فَاسْتَوَىٰ عَلَىٰ سُوقِهِ يُعْجِبُ الزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ
الْكُفَّارَ ۗ وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ
مِنْهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا﴾
২৯) মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল৷ আর যারা তাঁর সাথে আছে তারা কাফেরদের বিরুদ্ধে আপোষহীন ৫২ এবং নিজেরা পরস্পর দয়া পরবশ৷ ৫৩ তোমরা যখনই দেখবে তখন তাদেরকে চেহারায় সিজদার চিহ্ন বর্তমান যা দিয়ে তাদেরকে আলাদা চিনে নেয়া যায়৷ ৫৪ তাদের এ পরিচয় তাওরাতে দেয়া হয়েছে৷ ৫৫ আর ইনযীলে তাদের উপমা পেশ করা হয়েছে এই বলে ৫৬ যে,
একটি শস্যক্ষেত যা প্রথমে অঙ্কুরোদগম ঘটালো৷ পরে তাকে শক্তি যোগালো তারপর
তা শক্ত ও মজবুত হয়ে স্বীয় কাণ্ডে ভর করে দাঁড়ালো৷ যা কৃষককে খুশী করে
কিন্তু কাফের তার পরিপুষ্টি লাভ দেখে মনোকষ্ট পায়৷ এ শ্রেণীর লোক যারা ঈমান
আনয়ন করছে এবং সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ও বড় পুরস্কারের
প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷৫৭
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন