بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
حم
১) হা-মী-ম৷
﴿تَنزِيلُ الْكِتَابِ مِنَ اللَّهِ الْعَزِيزِ الْحَكِيمِ﴾
২) এই কিতাব মহাপরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত৷১
﴿مَا
خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا إِلَّا بِالْحَقِّ
وَأَجَلٍ مُّسَمًّى ۚ وَالَّذِينَ كَفَرُوا عَمَّا أُنذِرُوا مُعْرِضُونَ﴾
৩) আমি যমীন ও আসমান এবং দুয়ের মাঝে যা কিছু আছে যথার্থ সত্যের ভিত্তিতে বিশেষ সময় নির্ধারিত করে সৃষ্টি করেছি৷২ কিন্তু যে বিষয়ে এই কাফেরদের সাবধান করা হয়েছে তা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে আছে৷৩
﴿قُلْ
أَرَأَيْتُم مَّا تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ أَرُونِي مَاذَا خَلَقُوا
مِنَ الْأَرْضِ أَمْ لَهُمْ شِرْكٌ فِي السَّمَاوَاتِ ۖ ائْتُونِي
بِكِتَابٍ مِّن قَبْلِ هَٰذَا أَوْ أَثَارَةٍ مِّنْ عِلْمٍ إِن كُنتُمْ
صَادِقِينَ﴾
৪) হে নবী, এদের বলে দাও, “তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের
ডেকে থাকো কখনো কি তাদের ব্যাপারে ভেবে দেখেছো? আমাকে একটু দেখাও তো
পৃথিবীতে তারা কি সৃষ্টি করেছে কিংবা আসমানসমূহের সৃষ্টি ও ব্যবস্থাপনায়
তাদের কি অংশ আছে৷ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে ইতিপূর্বে প্রেরিত কোন
কিতাব কিংবা জ্ঞানের কোন অবশিষ্টাংশ (এসব আকীদা-বিশ্বাসের সমর্থনে) তোমাদের
কাছে থাকলে নিয়ে এসো৷”৪
﴿وَمَنْ
أَضَلُّ مِمَّن يَدْعُو مِن دُونِ اللَّهِ مَن لَّا يَسْتَجِيبُ لَهُ
إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَهُمْ عَن دُعَائِهِمْ غَافِلُونَ﴾
৫) সেই ব্যক্তির চেয়ে বেশী পথভ্রষ্ট কে যে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন সব সত্তাকে ডাকে যারা কিয়ামত পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দিতে সক্ষম নয়৷ ৫ এমনকি আহবানকারী যে তাকে আহবান করছে সে বিষয়েও সে অজ্ঞ৷ ৬
﴿وَإِذَا حُشِرَ النَّاسُ كَانُوا لَهُمْ أَعْدَاءً وَكَانُوا بِعِبَادَتِهِمْ كَافِرِينَ﴾
৬) যখন সমস্ত মানুষকে সমবেত করা হবে তখন তারা নিজেদের আহবানকারীর দুশমন হয়ে যাবে এবং ইবাদতকারীদের অস্বীকার করবে৷৭
﴿وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا بَيِّنَاتٍ قَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلْحَقِّ لَمَّا جَاءَهُمْ هَٰذَا سِحْرٌ مُّبِينٌ﴾
৭) যখন এসব লোকদের আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ শুনানো হয় এবং সত্য তাদের সামনে আত্মপ্রকাশ করে তখন এই কাফেররা বলে এতো পরিস্কার যাদু৷৮
﴿أَمْ
يَقُولُونَ افْتَرَاهُ ۖ قُلْ إِنِ افْتَرَيْتُهُ فَلَا تَمْلِكُونَ لِي
مِنَ اللَّهِ شَيْئًا ۖ هُوَ أَعْلَمُ بِمَا تُفِيضُونَ فِيهِ ۖ كَفَىٰ
بِهِ شَهِيدًا بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ ۖ وَهُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ﴾
৮) তারা কি বলতে চায় যে রসূল নিজেই এসব রচনা করেছেন? ৯ তাদের
বলে দাও : “আমি নিজেই যদি তা রচনা করে থাকি তাহলে কোন কিছু আমাকে আল্লাহর
পাকড়াও থেকে রক্ষা করতে পারবে না৷ যেসব কথা তোমরা তৈরী করছো আল্লাহর তা ভাল
করেই জানেন৷ আমার ও তোমাদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য তিনিই যথেষ্ট৷১০ তিনি অতীব ক্ষমাশীল ও দয়ালু৷১১
﴿قُلْ
مَا كُنتُ بِدْعًا مِّنَ الرُّسُلِ وَمَا أَدْرِي مَا يُفْعَلُ بِي وَلَا
بِكُمْ ۖ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰ إِلَيَّ وَمَا أَنَا إِلَّا
نَذِيرٌ مُّبِينٌ﴾
৯) এদের বলো, ‘আমি কোন অভিনব রসূল নই৷ কাল তোমাদের
সাথে কি আচরণ করা হবে এবং আমার সাথেই বা কি আচরণ করা হবে তা আমি জানি না৷
আমি তো কেবল সেই অহীর অনুসরণ করি যা আমার কাছে পাঠানো হয় এবং আমি সুস্পষ্ট
সাবধানকারী ছাড়া আর কিছুই নই৷১২
﴿قُلْ
أَرَأَيْتُمْ إِن كَانَ مِنْ عِندِ اللَّهِ وَكَفَرْتُم بِهِ وَشَهِدَ
شَاهِدٌ مِّن بَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَىٰ مِثْلِهِ فَآمَنَ
وَاسْتَكْبَرْتُمْ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ﴾
১০)
হে নবী (সা) ! তাদের বলো, তোমরা কি কখনো একথা ভেবে দেখেছো, যদি এই বাণী
আল্লাহর পক্ষ থেকেই এসে থাকে আর তোমরা তা প্রত্যাখান করো (তাহলে তোমাদের
পরিণাম কি হবে)?১৩ এ রকম একটি বাণী সম্পর্কে তো বনী ইসরাঈলদের একজন সাক্ষী সাক্ষ্যও দিয়েছে৷ সে ঈমান এনেছে৷ কিন্তু তোমরা আত্মম্ভরিতায় ডুবে আছো৷১৪ এ রকম জালেমদের আল্লাহ হিদায়াত দান করেন না’৷
﴿وَقَالَ
الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ آمَنُوا لَوْ كَانَ خَيْرًا مَّا
سَبَقُونَا إِلَيْهِ ۚ وَإِذْ لَمْ يَهْتَدُوا بِهِ فَسَيَقُولُونَ هَٰذَا
إِفْكٌ قَدِيمٌ﴾
১১) যারা মানতে অস্বীকার করেছে তারা মু’মিনদের
সম্পর্কে বলে, এই কিতাব মেনে নেয়া যদি কোন ভাল কাজ হতো তাহলে এ ব্যাপারে
এসব লোক আমাদের চেয়ে অগ্রগামী হতে পারতো না৷ ১৫ যেহেতু এরা তা থেকে হিদায়াত লাভ করেনি তাই তারা অবশ্যই বলবে, এটা পুরনো মিথ্যা৷১৬
﴿وَمِن
قَبْلِهِ كِتَابُ مُوسَىٰ إِمَامًا وَرَحْمَةً ۚ وَهَٰذَا كِتَابٌ
مُّصَدِّقٌ لِّسَانًا عَرَبِيًّا لِّيُنذِرَ الَّذِينَ ظَلَمُوا وَبُشْرَىٰ
لِلْمُحْسِنِينَ﴾
১২) অথচ এর পূর্বে মূসার কিতাব পথ-প্রদর্শক ও রহমত
হয়ে এসেছিলো৷ আর এ কিতাবে তার সত্যায়নকারী, আরবী ভাষায় এসেছে যাতে জালেমদের
সাবধান করে দেয়১৭ এবং সৎ আচরণ গ্রহণ-কারীদের সুসংবাদ দান করে৷
﴿إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ﴾
১৩)
যারা ঘোষণা করেছে আল্লাহই আমাদের রব, অতপর তার ওপরে স্থির থেকেছে নিশ্চয়ই
তাদের জন্য কোন ভয় নেই এবং তারা মন মরা ও দুঃখ ভারাক্রান্ত হবে না৷১৮
﴿أُولَٰئِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ خَالِدِينَ فِيهَا جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾
১৪) এ ধরনের সব মানুষ জান্নাতে যাবে৷ তারা সেখানে চিরদিন থাকবে, তাদের সেই কাজের বিনিময়ে যা তারা পৃথিবীতে করেছিলো৷
﴿وَوَصَّيْنَا
الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا
وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا ۚ
حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ أَشُدَّهُ وَبَلَغَ أَرْبَعِينَ سَنَةً قَالَ رَبِّ
أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَىٰ
وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَصْلِحْ لِي فِي
ذُرِّيَّتِي ۖ إِنِّي تُبْتُ إِلَيْكَ وَإِنِّي مِنَ الْمُسْلِمِينَ﴾
১৫)
আমি মানুষ এই মর্মে নির্দেশনা দিয়েছি যে, তারা যেন পিতা-মাতার সাথে
সদ্ব্যবহার করে৷ তার মা কষ্ট করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছিলো এবং কষ্ট করেই
তাকে প্রসব করেছিলো৷ তাকে গর্ভে ধারণ ও দুধপান করাতে ত্রিশ মাস লেগেছে৷ ১৯ এমন
কি যখন সে পূর্ণ যৌবনে পৌঁছেছে এবং তারপর চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হয়েছে তখন
বলেছে : “হে আমার রব, তুমি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে যেসব নিয়ামত দান
করেছো আমাকে তার শুকরিয়া আদায় করার তাওফীক দাও৷ আর এমন সৎ কাজ করার তাওফীক
দাও যা তুমি পছন্দ করো৷ ২০ আমার সন্তানদেরকে সৎ বানিয়ে আমাকে সুখ দাও৷ আমি তোমার কাছে তাওবা করছি৷ আমি নির্দেশের অনুগত (মুসলিম) বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত৷”
﴿أُولَٰئِكَ
الَّذِينَ نَتَقَبَّلُ عَنْهُمْ أَحْسَنَ مَا عَمِلُوا وَنَتَجَاوَزُ عَن
سَيِّئَاتِهِمْ فِي أَصْحَابِ الْجَنَّةِ ۖ وَعْدَ الصِّدْقِ الَّذِي
كَانُوا يُوعَدُونَ﴾
১৬) এ ধরনের মানুষের কাছে থেকে তাদের উত্তম আমলসমূহ আমি গ্রহণ করে থাকি, তাদের মন্দ কাজসমূহ ক্ষমা করে দেই৷ ২১ যে প্রতিশ্রুতি তাদের দিয়ে আসা হয়েছে তা ছিলো সত্য প্রতিশ্রুতি৷ সেই প্রতিশ্রুতি অনুসারে এরা জান্নাতী লোকদের অন্তর্ভূক্ত হবে৷
﴿وَالَّذِي
قَالَ لِوَالِدَيْهِ أُفٍّ لَّكُمَا أَتَعِدَانِنِي أَنْ أُخْرَجَ وَقَدْ
خَلَتِ الْقُرُونُ مِن قَبْلِي وَهُمَا يَسْتَغِيثَانِ اللَّهَ وَيْلَكَ
آمِنْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ فَيَقُولُ مَا هَٰذَا إِلَّا أَسَاطِيرُ
الْأَوَّلِينَ﴾
১৭) আর যে ব্যক্তি তার পিতা মাতাকে বললো : “আহ! তোমরা
বিরক্তির একশেষ করে দিলে৷ তোমরা কি আমাকে এ ভয় দেখাচ্ছো যে, মৃত্যুর পর আমি
আবার কবর থেকে উত্তোলিত হবো? আমার পূর্বে তো আরো বহু মানুষ চলে গেছে৷
(তাদের কেউ তো জীবিত হয়ে ফিরে আসেনি)৷” মা-বাপ আল্লাহর দোহাই দিয়ে বলে :
“আরে হতভাগা, বিশ্বাস কর৷ আল্লাহর ওয়াদা সত্য৷” কিন্তু সে বলে, “এসব তো
প্রাচীনকালের বস্তাপচা কাহিনী”
﴿أُولَٰئِكَ
الَّذِينَ حَقَّ عَلَيْهِمُ الْقَوْلُ فِي أُمَمٍ قَدْ خَلَتْ مِن
قَبْلِهِم مِّنَ الْجِنِّ وَالْإِنسِ ۖ إِنَّهُمْ كَانُوا خَاسِرِينَ﴾
১৮)
এরাই সেই সব লোক যাদের ব্যাপারে আযাবের সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে৷ এদের পূর্বে
জিন ও মানুষদের মধ্য থেকে (এই প্রকৃতির) যেসব ক্ষুদ্র দল অতীত হয়েছে এরাও
গিয়ে তাদের সাথে মিলিত হবে৷ নিশ্চয়ই এরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার লোক৷২২
﴿وَلِكُلٍّ دَرَجَاتٌ مِّمَّا عَمِلُوا ۖ وَلِيُوَفِّيَهُمْ أَعْمَالَهُمْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ﴾
১৯)
উভয় দলের প্রত্যেক মানুষের মর্যাদা হবে তাদের কর্ম অনুযায়ী৷ যাতে আল্লাহ
তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের পরিপূর্ণ প্রতিদান দেন৷ তাদের প্রতি মোটেই জুলুম
করা হবে না৷২৩
﴿وَيَوْمَ
يُعْرَضُ الَّذِينَ كَفَرُوا عَلَى النَّارِ أَذْهَبْتُمْ طَيِّبَاتِكُمْ
فِي حَيَاتِكُمُ الدُّنْيَا وَاسْتَمْتَعْتُم بِهَا فَالْيَوْمَ تُجْزَوْنَ
عَذَابَ الْهُونِ بِمَا كُنتُمْ تَسْتَكْبِرُونَ فِي الْأَرْضِ بِغَيْرِ
الْحَقِّ وَبِمَا كُنتُمْ تَفْسُقُونَ﴾
২০) অতপর এসব কাফেরদের যখন
আগুনের সামনে এনে দাঁড় করানো হবে তখন তাদের বলা হবে, ‘তোমরা নিজের অংশের
নিয়ামতসমূহ দুনিয়ার জীবনেই ভোগ করে নিঃশেষ করে ফেলেছো এবং তা ভোগ করেছো এবং
যে নাফরমানি করেছো সে কারণে আজ তোমাদের লাঞ্ছনাকর আযাব দেয়া হবে’৷২৪
﴿وَاذْكُرْ
أَخَا عَادٍ إِذْ أَنذَرَ قَوْمَهُ بِالْأَحْقَافِ وَقَدْ خَلَتِ
النُّذُرُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا
اللَّهَ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ﴾
২১) এদেরকে ‘আদের ভাই (হূদ)- এর কাহিনী কিছুটা শুনাও যখন সে আহক্বাফে তার কওমকে সতর্ক করেছিলো৷ ২৫ -এ
ধরনের সতর্ককারী পূর্বেও এসেছিলো এবং তার পরেও এসেছে-যে আল্লাহ ছাড়া আর
কারো বন্দেগী করো না৷ তোমাদের ব্যাপারে আমার এক বড় ভয়ংকর দিনের আযাবের
আশংকা আছে৷
﴿قَالُوا أَجِئْتَنَا لِتَأْفِكَنَا عَنْ آلِهَتِنَا فَأْتِنَا بِمَا تَعِدُنَا إِن كُنتَ مِنَ الصَّادِقِينَ﴾
২২)
তারা বললোঃ “তুমি কি এ জন্য এসেছো যে, আমাদের প্রতারিত করে আমাদের
উপাস্যদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী করে দেবে? ঠিক আছে, তুমি যদি প্রকৃত সত্যবাদী
হয়ে থাকো তাহলে আমাদের যে আযাবের ভীতি প্রদর্শন করে থাকো তা নিয়ে এসো৷”
﴿قَالَ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِندَ اللَّهِ وَأُبَلِّغُكُم مَّا أُرْسِلْتُ بِهِ وَلَٰكِنِّي أَرَاكُمْ قَوْمًا تَجْهَلُونَ﴾
২৩) সে বললো : এ ব্যাপারের জ্ঞান শুধু আল্লাহরই আছে৷২৬ যে পয়গাম দিয়ে আমাকে পাঠানো হয়েছে আমি সেই পয়গাম তোমাদের কাছে পৌছিয়ে দিচ্ছি৷ তবে আমি দেখছি, তোমরা অজ্ঞতা প্রদর্শন করছো৷২৭
﴿فَلَمَّا
رَأَوْهُ عَارِضًا مُّسْتَقْبِلَ أَوْدِيَتِهِمْ قَالُوا هَٰذَا عَارِضٌ
مُّمْطِرُنَا ۚ بَلْ هُوَ مَا اسْتَعْجَلْتُم بِهِ ۖ رِيحٌ فِيهَا عَذَابٌ
أَلِيمٌ﴾
২৪) পরে যখন তারা সেই আযাবকে তাদের উপত্যাকার দিকে আসতে দেখলো, বলতে শুরু করলো : এই তো মেঘ, আমাদের ‘ওপর প্রচুর বারিবর্ষণ করবে-না’, ২৮ এটা বরং সেই জিনিস যার জন্য তোমরা হাড়াহুড়া করছিলে৷ এটা প্রচন্ড ঝড়ো বাতাস, যার মধ্যে কষ্টদায়ক আযাব এগিয়ে আসছে৷
﴿تُدَمِّرُ
كُلَّ شَيْءٍ بِأَمْرِ رَبِّهَا فَأَصْبَحُوا لَا يُرَىٰ إِلَّا
مَسَاكِنُهُمْ ۚ كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْقَوْمَ الْمُجْرِمِينَ﴾
২৫) তার
রবের নির্দেশে প্রতিটি বস্তুকে ধ্বংস করে ফেলবে৷ অবশেষে তাদের অবস্থা
দাঁড়ালো এই সে, তাদের বসবাসের স্থান ছাড়া সেখানে আর কিছুই দৃষ্টিগোচর হতো
না৷ এভাবেই আমি অপরাধীদের প্রতিদান দিয়ে থাকি৷ ২৯
﴿وَلَقَدْ
مَكَّنَّاهُمْ فِيمَا إِن مَّكَّنَّاكُمْ فِيهِ وَجَعَلْنَا لَهُمْ
سَمْعًا وَأَبْصَارًا وَأَفْئِدَةً فَمَا أَغْنَىٰ عَنْهُمْ سَمْعُهُمْ
وَلَا أَبْصَارُهُمْ وَلَا أَفْئِدَتُهُم مِّن شَيْءٍ إِذْ كَانُوا
يَجْحَدُونَ بِآيَاتِ اللَّهِ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُوا بِهِ
يَسْتَهْزِئُونَ﴾
২৬) আমি তাদেরকে এমন কিছু দিয়েছিলাম যা তোমাদের দেইনি৷৩০ আমি
তাদেরকে কান, চোখ, হৃদয়-মন সব কিছু দিয়েছিলাম৷ কিন্তু না সে কান তাদের কোন
কাজে লেগেছে, না চোখ, না হৃদয়-মন৷ কারণ, তারা আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার
করতো৷ ৩১ তারা সেই জিনিসের পাল্লায় পড়ে গেল যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতো৷
﴿وَلَقَدْ أَهْلَكْنَا مَا حَوْلَكُم مِّنَ الْقُرَىٰ وَصَرَّفْنَا الْآيَاتِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ﴾
২৭)
আমি তোমাদের আশে পাশের বহু এলাকার বহু সংখ্যক জনপদ ধ্বংস করেছি৷ আমি আমার
আয়াতসমূহ পাঠিয়ে বার বার নানাভাবে তাদের বুঝিয়েছি, হয়তো তারা বিরত হবে৷
﴿فَلَوْلَا
نَصَرَهُمُ الَّذِينَ اتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ قُرْبَانًا آلِهَةً ۖ
بَلْ ضَلُّوا عَنْهُمْ ۚ وَذَٰلِكَ إِفْكُهُمْ وَمَا كَانُوا يَفْتَرُونَ﴾
২৮) কিন্তু আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব সত্তাকে কারা আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম মনে করে উপাস্য বানিয়ে নিয়েছিলো ৩২ তারা
কেন তাদেরকে সাহায্য করলো না৷ বরং তার তাদের থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলো৷ এটা
ছিল তাদের মিথ্যা এবং মনগড়া আকীদা-বিশ্বাসের পরিনাম, যা তারা গড়ে নিয়েছিলো৷
﴿وَإِذْ
صَرَفْنَا إِلَيْكَ نَفَرًا مِّنَ الْجِنِّ يَسْتَمِعُونَ الْقُرْآنَ
فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوا أَنصِتُوا ۖ فَلَمَّا قُضِيَ وَلَّوْا إِلَىٰ
قَوْمِهِم مُّنذِرِينَ﴾
২৯) (আর সেই ঘটনাও উল্লেখযোগ্য) যখন আমি জিনদের একটি দলকে তোমার কাছে নিয়ে এসেছিলাম, যাতে তারা কুরআন শোনে৷ ৩৩ যখন
তারা সেইখানে পৌঁছলো (যেখানে তুমি কুরআন পাঠ করছিলে) তখন পরস্পরকে বললো :
চুপ করো৷ যখন তা পাঠ করা শেষ হলো তখন তারা সতর্ককারী হয়ে নিজ কওমের কাছে
ফিরে গেল৷
﴿قَالُوا
يَا قَوْمَنَا إِنَّا سَمِعْنَا كِتَابًا أُنزِلَ مِن بَعْدِ مُوسَىٰ
مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ يَهْدِي إِلَى الْحَقِّ وَإِلَىٰ
طَرِيقٍ مُّسْتَقِيمٍ﴾
৩০) তারা গিয়ে বললো : হে আমাদের কওমের লোকজন!
আমরা এমন কিতাব শুনেছি যা মূসার পরে নাযিল করা হয়েছে৷ যা ইতিপূর্বেকার
সমস্ত কিতাবকে সমর্থন করে, ন্যায় ও সঠিক পথপ্রদর্শন করে৷ ৩৪
﴿يَا قَوْمَنَا أَجِيبُوا دَاعِيَ اللَّهِ وَآمِنُوا بِهِ يَغْفِرْ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ وَيُجِرْكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ﴾
৩১)
হে আমাদের কওমের লোকেরা, আল্লাহর প্রতি আহবানকারীর আহবানে সাড়া দাও এবং
তাঁর প্রতি ঈমান আনো৷ আল্লাহ তোমাদের গোনাহ মাফ করবেন এবং কষ্টদায়ক আযাব
থেকে রক্ষা করবেন৷৩৫
﴿وَمَن
لَّا يُجِبْ دَاعِيَ اللَّهِ فَلَيْسَ بِمُعْجِزٍ فِي الْأَرْضِ وَلَيْسَ
لَهُ مِن دُونِهِ أَوْلِيَاءُ ۚ أُولَٰئِكَ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ﴾
৩২) আর যে ৩৬ আল্লাহর
পক্ষ থেকে আহবানকারীর আহবানে সাড়া দেবে না সে না পৃথিবীতে এমন শক্তি রাখে
যে আল্লাহকে নিরূপায় ও অক্ষম করে ফেলতে পারে, না তার এমন কোন সাহায্যকারী ও
পৃষ্ঠপোষক আছে যে আল্লাহর হাত থেকে তাকে রক্ষা করতে পারে৷ এসব লোক
সুস্পষ্ট গোমরাহীর মধ্যে ডুবে আছে৷
﴿أَوَلَمْ
يَرَوْا أَنَّ اللَّهَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَمْ
يَعْيَ بِخَلْقِهِنَّ بِقَادِرٍ عَلَىٰ أَن يُحْيِيَ الْمَوْتَىٰ ۚ بَلَىٰ
إِنَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾
৩৩) যে আল্লাহ এই পৃথিবী ও
আসমান সৃষ্টি করেছেন এবং এগুলো সৃষ্টি করতে যিনি পরিশ্রান্ত হননি তিনি
অবশ্যই মৃতদের জীবিত করে তুলতে সক্ষম, এসব লোক কি তা বুঝে না? কেন পারবেন
না, অবশ্যই তিনি সব কিছু করতে সক্ষম৷
﴿وَيَوْمَ
يُعْرَضُ الَّذِينَ كَفَرُوا عَلَى النَّارِ أَلَيْسَ هَٰذَا بِالْحَقِّ ۖ
قَالُوا بَلَىٰ وَرَبِّنَا ۚ قَالَ فَذُوقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنتُمْ
تَكْفُرُونَ﴾
৩৪) যে দিন এসব কাফেরকে আগুনের সামনে হাজির করা হবে
সেদিন তাদের জিজ্ঞেস করা হবে, “এটা কি বাস্তব ও সত্য নয়?” এরা বলবে “হাঁ,
আমাদের রবের শপথ, (এটা প্রকৃতই সত্য)৷” আল্লাহ বলবেন : “ঠিক আছে, তাহলে
তোমরা যে অস্বীকার করেতে পরিণতি হিসেবে এখন আযাবের স্বাদ গ্রহণ করো৷”
﴿فَاصْبِرْ
كَمَا صَبَرَ أُولُو الْعَزْمِ مِنَ الرُّسُلِ وَلَا تَسْتَعْجِل لَّهُمْ ۚ
كَأَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَ مَا يُوعَدُونَ لَمْ يَلْبَثُوا إِلَّا
سَاعَةً مِّن نَّهَارٍ ۚ بَلَاغٌ ۚ فَهَلْ يُهْلَكُ إِلَّا الْقَوْمُ
الْفَاسِقُونَ﴾
৩৫) অতএব , হে নবী, দৃঢ়চেতা রসূলদের মত ধৈর্য ধারণ করো এবং তাদের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করো না৷৩৭ এদেরকে
এখন যে জিনিসের ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে যেদিন এরা তা দেখবে সেদিন এদের
মনে হবে যেন পৃথিবীতে অল্প কিছুক্ষণের বেশি অবস্থান করেনি৷ কথা পৌছিয়ে দেয়া
হয়েছে৷ অবাধ্য লোকেরা ছাড়া কি আর কেউ ধ্বংস হবে?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন