পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১২

লোহা তপ্ত থাকতেই হাতুড়ি ঠুকতে হয়

লোহা তপ্ত থাকতেই হাতুড়ি ঠুকতে হয়

॥ সিরাজুর রহমান ॥

নব্বই সালের নভেম্বরে ঢাকা গিয়েছিলাম বিবিসি এশীয় অনুষ্ঠান বিভাগের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আন্তঃএশিয়া সঙ্গীতানুষ্ঠান নিবেদন করতে। তত দিনে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার গণতন্ত্রের আন্দোলন পূর্ণতা পেয়েছে। লন্ডনে কর্তাব্যক্তিদের বললাম, লে. জেনারেল এরশাদের সামরিক স্বৈরতন্ত্রের টলটলায়মান অবস'া, তার ‘সাদ্দাদের বেহেশত’ যেকোনো দিন ধসে পড়তে পারে, আমি বরং আন্দোলনের শেষটা দেখে আসি। 
ষড়যন্ত্রের রাজনীতির বহু নাটক দেখেছি সে ক’দিনে। ২২ নভেম্বর বাংলাদেশ বেতারের কনসার্ট হল থেকে সরাসরি বনানীতে এক ডিনার পার্টিতে গিয়েছি। ডজনখানেক রাষ্ট্রদূত-হাইকমিশনার উপসি'ত ছিলেন সেখানে। হঠাৎ করে জেট যাত্রী বিমান নামার বিকট শব্দ হলো। এক রাষ্ট্রদূত বললেন, উনি (এরশাদ) মালদ্বীপ থেকে এসে নামলেন বোধ হয়। অন্য একজন মন্তব্য করলেন, অন্য কোথাও গিয়ে নামলে ভালো হতো না কি? তৃতীয় একজন আমাকে এক পাশে ডেকে জানতে চাইলেন, শুনেছি, এনএসআই আর ডিজিএফআই-এর মধ্যে বিবাদ শুরু হয়েছে, তুমি কিছু শুনেছ নাকি?
পঁচিশ নভেম্বর আর এক ডিনার পার্টিতে গিয়েছিলাম। বেশ ক’জন রাষ্ট্রদূত সেখানেও উপসি'ত ছিলেন। পার্টি বেশ জমে উঠেছিল। এরশাদের কারফিউ শুরু হওয়ার আগেই হোটেলে ফিরতে অধীর হয়ে উঠেছিলাম। জার্মান রাষ্ট্রদূত তখন কবিতা পড়বেন। বললেন, তার কারফিউ পাস আছে, আমাকে হোটেলে নামিয়ে দেবেন। হোটেলে এসে মেসেজ পেলাম, কেউ একজন পাঁচবার টেলিফোন করেছেন; কিন' নাম রাখেননি। ভোর ৫টায় আবার টেলিফোন। ভদ্রলোক নাম বলতে অস্বীকার করলেন। কিন' বললেন, রাতের বেলা এরশাদ তার জেনারেলদের ডেকে খুব শাসিয়েছেন, জানতে যদি চান তাড়াতাড়ি লিখে নিন।
সে ক’দিন আমার ভাগ্য ভালো ছিল। আসলে মাঝে মধ্যে ভাগ্য ভালো না হলে সাংবাদিকের কাজ চলে না। এরশাদ কী করবেন, কী করতে যাচ্ছেন, অপরিচিত একটি সূত্র সব খবরই আমাকে দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেসব সূত্রেই একদিন সকালে টের পেলাম, সে দিন এরশাদ সামরিক আইন জারি করবেন। বিকেলবেলা শিশুপার্কে পুলিশ অফিসে গিয়ে কারফিউ পাস নিয়ে এলাম। কিছুক্ষণ পর পদস' এক পুলিশ কর্মকর্তা হোটেলে এসেই বলে গেলেন, ‘স্যার, আমরা আপনাকে কারফিউ পাস দিয়েছি বলেই হুট করে রাস্তায় বেরিয়ে পড়বেন না। আমরা আপনাকে নিরাপদ রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করব, কিন' জানেন তো, সব কিছু আমাদের হাতে নেই। গাড়িতে ছাড়া রাস্তায় যাবেন না, আর পারলে সাথে কাউকে নিয়ে যাবেন।’

নব্বইয়ের শিক্ষা বর্তমান সময়ে
অপ্রত্যাশিতভাবেই একদিন সকালে খবর পেলাম, সেই রাতে এরশাদ জাতির উদ্দেশে টেলিভাষণ দেবেন। লন্ডনে তখন শেষরাত। বিবিসির নিউজরুমে খবরটা দিয়ে রাখলাম। সেটা হলো এক জ্বালা। ঘণ্টায় ঘণ্টায় লন্ডন থেকে টেলিফোন, এরশাদ কী বলবেন, সে সম্বন্ধে আঁচ-অনুমানও টের পেলে সাথে সাথে জানাবে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে খোঁজ পেলাম এরশাদ তার ভাষণ রেকর্ড করেছেন। তাতে তিনি বলেছেন যে, তিনি শিগগিরই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন দেবেন এবং সে নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে তিনি পদত্যাগ করবেন।
একটা জটিল সমস্যায় পড়লাম আমি। বাংলাদেশের মানুষ কি এরশাদের কথায় বিশ্বাস করে আন্দোলন ত্যাগ করবে? আন্দোলন যদি থিতিয়ে আসে, তাহলে এরশাদ কি কথা রাখবেন? যাদের রাজনৈতিক বিচারবুদ্ধির ওপর আমার আস'া ছিল, তাদের সাথে টেলিফোনে আলাপ করলাম। প্রায় সবাই এক কথা বললেন, শেখ হাসিনা যদি এরশাদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান তাহলে আন্দোলন থিতিয়ে পড়বেই, তারপর কী হবে বলা যায় না। আমার হয়েছে মহা সমস্যা। এরশাদের ভাষণের প্রতিক্রিয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করতেই হবে। এক বন্ধু সমাধান বলে দিলেন। বললেন, হাসিনা বলে বেড়াচ্ছেন যে, এরশাদ তার টেলিফোন লাইন কেটে দিয়েছেন, আসলে কিন' তার টেলিফোন ঠিকই আছে, তুমি তার দাবির সুযোগ নাও। 
এরপর সমাধান সহজ হয়ে গেল। বিবিসি অফিসে ফোন করে দিলাম। এরশাদ মোটামুটি নির্বাচনের প্রস্তাব দেবেন। আমি টেলিভিশনে দেখে সেটা সমর্থন করব। শেখ হাসিনার টেলিফোন যেহেতু বিচ্ছিন্ন, সেহেতু তার প্রতিক্রিয়া নেয়া যাবে না। তবে খালেদা জিয়া নিজের বাড়ি ছেড়ে যেখানে আছেন সেখানের টেলিফোন নম্বর এই, আর আওয়ামী লীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. কামাল হোসেনকে পাওয়া যাবে এই নম্বরে। তাদের দু’জনের প্রতিক্রিয়াই যথেষ্ট হবে।
জেনারেল এরশাদ রাত ১০টায় টেলিভাষণ দিলেন। সন্ধ্যাবেলা যা জানতে পেয়েছিলাম মোটামুটি সে কথাগুলোই বললেন তিনি। আমি টেলিফোনে সে কথা জানালাম বিবিসির অফিসে। এরশাদের ভাষণের পরপরই লন্ডন থেকে আতিকুস সামাদ টেলিফোন করে খালেদা জিয়া আর ড. কামাল হোসেনের প্রতিক্রিয়া সরাসরি প্রচার করলেন। আধা ঘণ্টার মধ্যেই রাজধানীর আবালবৃদ্ধবনিতা ‘মানি না, মানি না’ বলে সড়কে বেরিয়ে পড়ল। পেটিকোট পরেও বহু নারী সে দিন রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলেন।
এরপর জেনারেল এরশাদের আর গদি আঁকড়ে থাকা সম্ভব ছিল না। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে সাথে নিয়ে সকালে আমি ঢাকা দেখতে বেরিয়েছিলাম। রমনা পার্কে লেকের ধারে তখনো বহু সেনাছাউনি। তোপখানা রোড ধরে বায়তুল মোকাররম যাওয়ার পথে বহু ট্রাকে পুলিশ বসে তামাশা দেখছে। জনতা তাদের ফুল দিচ্ছে, তারা জনতার সাথে হাত মেলাচ্ছে। একটু পরে খবর পেলাম, রমনা পার্কের সেনাছাউনিগুলো অদৃশ্য হয়ে গেছে। আমার লন্ডনে ফেরার কথা ছিল ২৩ নভেম্বর। ফিরেছিলাম ৪ ডিসেম্বর রাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের সাক্ষাৎকার নিয়ে। 

সুযোগের অবহেলা নেতৃত্বের দুর্বলতা প্রমাণ করে
এত যে অতীতের কাসুন্দি ঘাঁটলাম তার কিছু তাৎপর্য আছে। ধরুন, এরশাদের ভাষণের পর সে রাতে যদি আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া দিতেন শেখ হাসিনা (তার টেলিফোন নম্বর আমার জানা ছিল) এবং তিনি যদি এরশাদের প্রস্তাব মেনে নিতেন, বাংলাদেশের ইতিহাস তাহলে কিভাবে লেখা হতো? আমরা কি ধরে নিতে পারি যে, এরশাদ তার স্বভাবসুলভ ছলনা-প্রতারণা দিয়ে আরো বহু দিন গদিতে আসীন থাকতেন এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা আগের নয় বছরের মতো প্রয়োজনবোধে এরশাদকে সমর্থন দিয়ে যেতেন?
সেটা শেখ হাসিনার চরিত্র এবং জেনারেল এরশাদের সাথে তার সম্পর্কের সাথে সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ হতো। তখনো আমাকে বলা হয়েছিল, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যা এবং জেনারেল এরশাদের ক্ষমতা গ্রহণের চক্রান্ত হয়েছিল যখন শেখ হাসিনা দিল্লিতে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস'া র-এর হেফাজতে ছিলেন, যখন জেনারেল এরশাদ ভারতীয় সামরিক অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণরত ছিলেন এবং যখন জেনারেল এরশাদের সাথে র-এর একজন শীর্ষ কর্মকর্তার বন্ধুত্ব হয়। যেটা অকাট্য সত্য সেটা এই যে, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যা সম্বন্ধে সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। সব রহস্যের সমাধান যিনি দিতে পারতেন, সেই জেনারেল মঞ্জুরকে মাথার পেছনে মাত্র একটা গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। মঞ্জুর হত্যারও কোনো তদন্ত হয়নি, বিচার তো দূরের কথা। বাংলাদেশের সরকার এখন কথায় কথায় ‘বিচার, বিচার’ স্লোগান তোলে। কিন' সিরাজ সিকদার, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আর জেনারেল মঞ্জুরের হত্যার বিচারের কথা বলতে বর্তমান শাসকদের লজ্জা করে।
বাংলার বাণী তখন ছিল আওয়ামী লীগের মুখপত্র। এরশাদের সামরিক অভ্যুত্থানের সাফল্য কামনা এবং সন'ষ্টি জ্ঞাপন করে বাংলার বাণী সম্পাদকীয় লিখেছিল। শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ প্রায়ই এরশাদের সামরিক স্বৈরতন্ত্রকে সমর্থন দিয়েছিলেন। বিশ্বসমাজের চাপে বৈধতা পাওয়ার আশায় এরশাদ ১৯৮৬ সালের ৬ মে জাতীয় সংসদের নির্বাচন ডেকেছিলেন। ১৯ এপ্রিল আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ছোট ছোট ক’টি দল যৌথ বৈঠকে সে নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন' ২১ এপ্রিল আওয়ামী লীগ বিশ্বাস ভঙ্গ করে ঘোষণা করে যে, তারা এরশাদের সাজানো-পাতানো নির্বাচনে অংশ নেবে। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শোচনীয় পরাজয় হলে শেখ হাসিনা সংসদের অধিবেশন বর্জন করার ঘোষণা দেন। কিন' জেনারেল এরশাদের সাথে তিন ঘণ্টার মোটরগাড়ি বিহারের পর হাসিনা পিঠটান দেন। বলেন যে, আওয়ামী লীগ সংসদের বৈঠকে যোগ দেবে। আওয়ামী লীগ নেত্রী কী কারণে উভয় ব্যাপারে মতপরিবর্তন করেছিলেন, সেসব কথা সবিস্তারে লিখেছেন শেখ হাসিনার তৎকালীন ব্যক্তিগত সহকারী, মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ুর রহমান রেন্টু তার আমার ফাঁসি চাই বইয়ে। 
কথায় কথায় অনেক দূরে চলে এলাম। খালেদা জিয়া ১৯৮২ সাল থেকেই সামরিক স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে অকুতোভয় সংগ্রাম করেছেন। বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই তার পেছনে ছিল। কিন' মূলত অন্য প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ এবং সেই দলের নেত্রীর বিশ্বাসভঙ্গের কারণে একাধিক দফায় সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে এসেও আন্দোলন সফল হতে পারেনি। নব্বইয়ের ডিসেম্বরেও যদি শেখ হাসিনাকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেয়া হতো এবং তিনি যদি এরশাদের প্রস্তাব মেনে নিতেন, তাহলে কী হতে পারত?
এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব দেখার সুযোগ যাদের হয়নি, তারা গত কয়েক মাসে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে তার আন্দোলন দেখেছে। দেশের যেখানে তিনি গেছেন সেখানে মানুষ ছুটে এসেছে, অধীর আগ্রহে তার বক্তব্য শোনার জন্য অপেক্ষা করেছে। সিলেট রোডমার্চ, রাজশাহী রোডমার্চ, খুলনা রোডমার্চ আর গত রবি ও সোমবার চট্টগ্রাম রোডমার্চে বহু, বহুবার একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। নেত্রীকে তারা গণতন্ত্রের রক্ষক মনে করে। তার কথা শোনার জন্য তাদের অনেকে আগের দিন থেকে মহাসড়কের ধারে, পথসভাগুলোর নির্ধারিত স'ানে এবং মহাসমাবেশের জন্য নির্দিষ্ট স'ানে অপেক্ষা করেছে। জনসমর্থন যে ষোল আনা খালেদা জিয়ার পক্ষে, সে কথা অন্ধ-বধিরেও জানে।

এ সিদ্ধান্ত মনঃস্তাপের কারণ হতে পারে 
কিন' এ প্রমাণ কি আমরা ১৯৮২-৯০ আন্দোলনে দেখিনি? জনতা কি সে দিনও গণতন্ত্রের মানসকন্যা খালেদা জিয়ার পেছনে ছিল না? তবু কেন সে আন্দোলন সফল হতে এত বিলম্ব হয়েছিল? কারণ এই যে, আন্দোলন যখনই তুঙ্গে উঠত শেখ হাসিনা ও তার আওয়ামী লীগ তখন আন্দোলন থেকে সরে গিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সামরিক স্বৈরতন্ত্রকে সমর্থন দিচ্ছিলেন। আন্দোলন অনেকটা বন্দুকের মতো। বন্দুকের ঘোড়া টানলেন, যথাস'লে বারুদও ঢাললেন, কিন' সময়মতো ট্রিগার টেপা না হলে সে বারুদ ঠাণ্ডা হয়ে যাবে, তখন আর ট্রিগার টিপলেও বিস্ফোরণ হবে না। আমার মনে হয় খালেদা জিয়ার বর্তমান আন্দোলনও ১৯৮২-৯০ সালের আন্দোলনের মন্দভাগ্যে ভুগছে। জাতি ও জনতা প্রস'ত। তারা আর এই ফ্যাসিবাদী সরকার চায় না, তারা বাকশালী স্বৈরতন্ত্রে ফিরে যেতে রাজি নয়। বন্দুকের ঘোড়া টেনে নলে বারুদ ঢালা হয়েছে। কিন' কখন ট্রিগার টেপা হবে তা নিয়ে দলের ভেতরে বিতর্ক সৃষ্টি করে সময় নষ্ট করা হচ্ছে। আগেও আমি বলেছি, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের ভেতরের অবস'া যুদ্ধক্ষেত্রে বসে ‘যুদ্ধ কি শান্তি’ বিতর্কে সময় নষ্ট করারই মতো। এ দিকে সাধারণ সৈনিকেরা ত্যক্তবিরক্ত হয়ে ময়দান থেকে সরে পড়ছে। শুনেছি, ছাত্রদল আর যুবদলও হতাশ হয়ে রণে ভঙ্গ দিচ্ছে। বিএনপি কি আরো নয় বছর আন্দোলন করতে চায়? 
খালেদা জিয়া তিন মাস পরে ১২ মার্চ ‘ঢাকা চলো’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। এই তিন মাসে বিএনপির মাঠপর্যায়ের নেতারা কি মুক্ত থাকবেন? জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের যেভাবে হাজার গণ্ডা মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে, বিএনপির নেতাকর্মীদেরও যে সেভাবে জেলে পুরে আন্দোলনকে দুর্বল করে ফেলা হবে না, সে গ্যারান্টি কোথায়? যারা ক্ষমতায় থাকে, দৃশ্য-অদৃশ্য বহু অস্ত্র থাকে তাদের হাতে। সে অস্ত্রগুলো ব্যবহার করে সরকার যে দুর্বার আন্দোলনকে দুর্বল করে ফেলবে না, সে কথা কে বলেছে বিএনপিকে? মার্চ মাসে সরকার যদি সড়ক-মহাসড়কগুলো বন্ধ করে দেয়, ‘ঢাকা চলো’ যদি বানচাল হয়ে যায়, আমার মনে হয় সে জন্য দায়ী হবে আন্দোলন তিন মাস পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত। 
লন্ডন, ১১.০১.১২ 
serajurrahman@btinternet.com
 সূত্র: নয়াদিগন্ত, 14/01/2011

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন