শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৬

আস - সফফাত

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
 وَالصَّافَّاتِ صَفًّا﴾
১) সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মানদের কসম,
﴿فَالزَّاجِرَاتِ زَجْرًا﴾
২) তারপর যারা ধমক ও অভিশাপ দেয় তাদের কসম,
﴿فَالتَّالِيَاتِ ذِكْرًا﴾
৩) তারপর তাদের কসম যারা উপদেশবাণী শুনায়, ১
﴿إِنَّ إِلَٰهَكُمْ لَوَاحِدٌ﴾
৪) তোমাদের প্রকৃত মাবুদ মাত্র একজনই-
﴿رَّبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ الْمَشَارِقِ﴾
৫) যিনি পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলীর এবং পৃথিবী ও আকাশের মধ্যে যা কিছু আছে তাদের সবার মালিক এবং সমস্ত উদয়স্থলের ৩ মালিক৷
﴿إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِزِينَةٍ الْكَوَاكِبِ﴾
৬) আমি দুনিয়ার আকাশকে  তারকারাজির সৌন্দর্য দ্বারা সুসজ্জিত করেছি
﴿وَحِفْظًا مِّن كُلِّ شَيْطَانٍ مَّارِدٍ﴾
৭) এবং প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তান থেকে তাকে সুরক্ষিত রেখেছি৷
﴿لَّا يَسَّمَّعُونَ إِلَى الْمَلَإِ الْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٍ﴾
৮) এ শয়তানরা উর্ধ জগতের কথা শুনতে পারে না,
﴿دُحُورًا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ وَاصِبٌ﴾
৯) সবদিক থেকে আঘাতপ্রাপ্ত ও তাড়িত হয় এবং তাদের জন্য রয়েছে অবিরাম শাস্তি৷
﴿إِلَّا مَنْ خَطِفَ الْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ ثَاقِبٌ﴾
১০) তবুও যদি তাদের কেউ তার মধ্য থেকে কিছু হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয় তাহলে একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা তার পেছনে ধাওয়া করে৷
﴿فَاسْتَفْتِهِمْ أَهُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَم مَّنْ خَلَقْنَا ۚ إِنَّا خَلَقْنَاهُم مِّن طِينٍ لَّازِبٍ﴾
১১) এখন এদেরকে জিজ্ঞেস করো, এদের সৃষ্টি বেশী কঠিন, না আমি যে জিনিসগুলো সৃষ্টি করে রেখেছি সেগুলোর ? এদেরকে তো আমি সৃষ্টি করেছি আঠাল কাদামাটি দিয়ে৷
﴿بَلْ عَجِبْتَ وَيَسْخَرُونَ﴾
১২) তুমি তো (আল্লাহর কুদরাতের মহিমা দেখে) অবাক হচ্ছো এবং এরা তার প্রতি করছে বিদ্রূপ৷
﴿وَإِذَا ذُكِّرُوا لَا يَذْكُرُونَ﴾
১৩) তাদেরকে বুঝালেও তারা বোঝে না৷
﴿وَإِذَا رَأَوْا آيَةً يَسْتَسْخِرُونَ﴾
১৪) কোনো নিদর্শন দেখলে উপহাস করে উড়িয়ে দেয়
﴿وَقَالُوا إِنْ هَٰذَا إِلَّا سِحْرٌ مُّبِينٌ﴾
১৫) এবং বলে, “এ তো স্পষ্ট যাদু৷ ১০
﴿أَإِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَامًا أَإِنَّا لَمَبْعُوثُونَ﴾
১৬) আমরা যখন মরে একেবারে মাটি হয়ে যাবো এবং থেকে যাবে শুধুমাত্র হাড়ের পিঞ্জর তখন আমাদের আবার জীবিত করে উঠানো হবে, এমনও কি কখনো হতে পারে ?
﴿أَوَآبَاؤُنَا الْأَوَّلُونَ﴾
১৭) আর আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকেও কি উঠানো হবে?”
﴿قُلْ نَعَمْ وَأَنتُمْ دَاخِرُونَ﴾
১৮) এদেরকে বলো, হ্যাঁ, এবং তোমরা (আল্লাহর মোকাবিলায়) অসহায়৷ ১১
﴿فَإِنَّمَا هِيَ زَجْرَةٌ وَاحِدَةٌ فَإِذَا هُمْ يَنظُرُونَ﴾
১৯) ব্যস, একটিমাত্র বিকট ধমক হবে এবং সহসাই এরা স্বচক্ষে (সেই সবকিছু যার খবর দেয়া হচ্ছে) দেখতে থাকবে৷ ১২
﴿وَقَالُوا يَا وَيْلَنَا هَٰذَا يَوْمُ الدِّينِ﴾
২০) সে সময় এরা বলবে, হায়! আমাদের দুর্ভাগ্য, এতো প্রতিফল দিবস৷
﴿هَٰذَا يَوْمُ الْفَصْلِ الَّذِي كُنتُم بِهِ تُكَذِّبُونَ﴾
২১) “এটা সে ফায়সালার দিন যাকে তোমরা মিথ্যা বলতে৷” ১৩
﴿احْشُرُوا الَّذِينَ ظَلَمُوا وَأَزْوَاجَهُمْ وَمَا كَانُوا يَعْبُدُونَ﴾
২২) (হুকুম দেয়া হবে) ঘেরাও করে নিয়ে এসো
﴿مِن دُونِ اللَّهِ فَاهْدُوهُمْ إِلَىٰ صِرَاطِ الْجَحِيمِ﴾
২৩) সব জালেমকে, ১৪ তাদের সাথিদেরকে ১৫ এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব মাবুদদের তারা বন্দেগী করতো তাদেরকে ১৬ তারপর তাদের সবাইকে জাহান্নামের পথ দেখিয়ে দাও৷
﴿وَقِفُوهُمْ ۖ إِنَّهُم مَّسْئُولُونَ﴾
২৪) আর এদেরকে একটু থামাও, এদেরকে কিছু জিজ্ঞেস করতে হবে৷
﴿مَا لَكُمْ لَا تَنَاصَرُونَ﴾
২৫) “ তোমাদের কি হয়েছে, এখন কেন পরস্পরকে সাহায্য করো না?
﴿بَلْ هُمُ الْيَوْمَ مُسْتَسْلِمُونَ﴾
২৬) আরে, আজ তো এরা নিজেরাই নিজেদেরকে (এবং একজন অন্যজনকে) সমর্পণ করে দিয়ে যাচ্ছে৷” ১৭১৭
﴿وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَاءَلُونَ﴾
২৭) এরপর এরা একে অন্যের দিকে ফিরবে এবং পরস্পর বিতর্ক শুরু করে দেবে৷
﴿قَالُوا إِنَّكُمْ كُنتُمْ تَأْتُونَنَا عَنِ الْيَمِينِ﴾
২৮) (আনুগত্যকারীরা তাদের নেতাদেরকে) বলবে, “ তোমরা তো আমাদের কাছে আসতে সোজা দিক দিয়ে৷”১৮১৮
﴿قَالُوا بَل لَّمْ تَكُونُوا مُؤْمِنِينَ﴾
২৯) তারা জবাব দেবে, “না, তোমরা নিজেরাই মু’মিন ছিলে না৷
﴿وَمَا كَانَ لَنَا عَلَيْكُم مِّن سُلْطَانٍ ۖ بَلْ كُنتُمْ قَوْمًا طَاغِينَ﴾
৩০) তোমাদের ওপর আমাদের কোন জোর ছিল না৷ বরং তোমরা নিজেরাই ছিলে বিদ্রোহী৷
﴿فَحَقَّ عَلَيْنَا قَوْلُ رَبِّنَا ۖ إِنَّا لَذَائِقُونَ﴾
৩১) শেষ পর্যন্ত আমরা আমাদের রবের এ ফরমানের হকদার হয়ে গেছি যে, আমরা আযাবের স্বাদ গ্রহণ করবো৷
﴿فَأَغْوَيْنَاكُمْ إِنَّا كُنَّا غَاوِينَ﴾
৩২) কাজেই আমরা তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিলাম কারণ আমরা নিজেরাই বিভ্রান্ত ছিলাম৷”১৯
﴿فَإِنَّهُمْ يَوْمَئِذٍ فِي الْعَذَابِ مُشْتَرِكُونَ﴾
৩৩) এভাবে তারা সবাই সেদিন শাস্তিতে শরীক হবে৷ ২০
﴿إِنَّا كَذَٰلِكَ نَفْعَلُ بِالْمُجْرِمِينَ﴾
৩৪) আমি অপরাধীদের সাথে এমনটিই করে থাকি৷
﴿إِنَّهُمْ كَانُوا إِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا إِلَٰهَ إِلَّا اللَّهُ يَسْتَكْبِرُونَ﴾
৩৫) এরা ছিল এমন সব লোক যখন এদেরকে বলা হতো, “আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই” তখন এরা অহংকার করতো৷
﴿وَيَقُولُونَ أَئِنَّا لَتَارِكُو آلِهَتِنَا لِشَاعِرٍ مَّجْنُونٍ﴾
৩৬) এবং বলতো, “আমরা কি একজন উন্মাদ কবির জন্য আমাদের মাবুদদেরকে ত্যাগ করবো?”
﴿بَلْ جَاءَ بِالْحَقِّ وَصَدَّقَ الْمُرْسَلِينَ﴾
৩৭) অথচ সে সত্য নিয়ে এসেছিল এবং রসূলদেরকে সত্য বলে মেনে নিয়েছিল ২১
﴿إِنَّكُمْ لَذَائِقُو الْعَذَابِ الْأَلِيمِ﴾
৩৮) (এখন তাদেরকে বলা হবে) তোমরা নিশ্চিতভাবেই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করবে
﴿وَمَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ﴾
৩৯) এবং পৃথিবীতে তোমরা যে সমস্ত কাজ করতে তারই প্রতিদান তোমাদের দেয়া হচ্ছে৷
﴿إِلَّا عِبَادَ اللَّهِ الْمُخْلَصِينَ﴾
৪০) কিন্তু আল্লাহর নির্বাচিত বান্দারা (এ অশুভ পরিণাম) মুক্ত হবে৷
﴿أُولَٰئِكَ لَهُمْ رِزْقٌ مَّعْلُومٌ﴾
৪১) তাদের জন্য রয়েছে জ্ঞাত রিযিক, ২২
﴿فَوَاكِهُ ۖ وَهُم مُّكْرَمُونَ﴾
৪২) সব রকমের
﴿فِي جَنَّاتِ النَّعِيمِ﴾
৪৩) সুস্বাদু জিনিস ২৩ এবং নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাত, যেখানে তাদেরকে মর্যাদা সহকারে রাখা হবে৷
﴿عَلَىٰ سُرُرٍ مُّتَقَابِلِينَ﴾
৪৪) বসবে তারা আসনে মুখোমুখি৷
﴿يُطَافُ عَلَيْهِم بِكَأْسٍ مِّن مَّعِينٍ﴾
৪৫) শরাবের ২৪ ঝরণা ২৫ থেকে পানপাত্র ভরে ভরে তাদেরকে ঘুরে ঘুরে পরিবেশন করা হবে৷ ২৬
﴿بَيْضَاءَ لَذَّةٍ لِّلشَّارِبِينَ﴾
৪৬) উজ্জ্বল শরাব, পানকারীদের জন্য হবে সুস্বাদু৷
﴿لَا فِيهَا غَوْلٌ وَلَا هُمْ عَنْهَا يُنزَفُونَ﴾
৪৭) তা তাদের কোন শারীরিক ক্ষতি করবে না এবং তাতে তাদের বুদ্ধিও ভ্রষ্ট হবে না৷ ২৭
﴿وَعِندَهُمْ قَاصِرَاتُ الطَّرْفِ عِينٌ﴾
৪৮) আর তাদের কাছে থাকবে আনত নয়না ২৮ সুলোচনা নারীগণ, ২৯
﴿كَأَنَّهُنَّ بَيْضٌ مَّكْنُونٌ﴾
৪৯) এমন নাজুক যেমন হয় ডিমের খোসার নিচে লুকানো ঝিল্লি৷ ৩০
﴿فَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَاءَلُونَ﴾
৫০) তারপর তারা একজন অন্যজনের দিকে ফিরে অবস্থা জিজ্ঞেস করবে৷
﴿قَالَ قَائِلٌ مِّنْهُمْ إِنِّي كَانَ لِي قَرِينٌ﴾
৫১) তাদের একজন বলবে, “দুনিয়ায় আমার ছিল এক সংগী
﴿يَقُولُ أَإِنَّكَ لَمِنَ الْمُصَدِّقِينَ﴾
৫২) সে আমাকে বলতো, তুমিও কি সত্য বলে মেনে নেবার দলে? ৩১
﴿أَإِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَامًا أَإِنَّا لَمَدِينُونَ﴾
৫৩) যখন আমরা মরে যাবো, মাটির সাথে মিশে যাবো এবং অস্থি পিঞ্জরই থেকে যাবে তখন সত্যিই কি আমাদের শাস্তি ও পুরস্কার দেয়া হবে?
﴿قَالَ هَلْ أَنتُم مُّطَّلِعُونَ﴾
৫৪) তোমরা কি দেখতে চাও সে এখন কোথায় আছে ?”
﴿فَاطَّلَعَ فَرَآهُ فِي سَوَاءِ الْجَحِيمِ﴾
৫৫) এ বলে যেমনি সে নিচের দিকে ঝুঁকবে তখনই দেখবে তাকে জাহান্নামের অতল গভীরে৷
﴿قَالَ تَاللَّهِ إِن كِدتَّ لَتُرْدِينِ﴾
৫৬) এবং তাকে সম্বোধন করে বলতে থাকবে, “আল্লাহর কসম, তুই তো আমাকে ধ্বংসই করে দিতে চাচ্ছিলি৷
﴿وَلَوْلَا نِعْمَةُ رَبِّي لَكُنتُ مِنَ الْمُحْضَرِينَ﴾
৫৭) আমার রবের মেহেরবাণী না হলে আজ আমিও যারা পাকড়াও হয়ে এসেছে তাদের অন্তরভুক্ত হতাম৷ ৩২
﴿أَفَمَا نَحْنُ بِمَيِّتِينَ﴾
৫৮) আচ্ছা, তাহলে কি এখন আমরা আর মরবো না?
﴿إِلَّا مَوْتَتَنَا الْأُولَىٰ وَمَا نَحْنُ بِمُعَذَّبِينَ﴾
৫৯) আমাদের যে মৃত্যু হবার ছিল তা প্রথমে হয়ে গেছে ? এখন আমাদের কোন শাস্তি হবে না?” ৩৩
﴿إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ﴾
৬০) নিশ্চিতভাবেই এটিই মহান সাফল্য৷
﴿لِمِثْلِ هَٰذَا فَلْيَعْمَلِ الْعَامِلُونَ﴾
৬১) এ ধরনের সাফল্যের জন্যই কাজ করতে হবে তাদের যারা কাজ করে৷
﴿أَذَٰلِكَ خَيْرٌ نُّزُلًا أَمْ شَجَرَةُ الزَّقُّومِ﴾
৬২) বলো, এ ভোজ ভালো, না যাক্কুম গাছ? ৩৪
﴿إِنَّا جَعَلْنَاهَا فِتْنَةً لِّلظَّالِمِينَ﴾
৬৩) আমি এ গাছটিকে জালেমদের জন্য ফিতনায় পরিণত করে দিয়েছি৷ ৩৫
﴿إِنَّهَا شَجَرَةٌ تَخْرُجُ فِي أَصْلِ الْجَحِيمِ﴾
৬৪) সেটি একটি গাছ, যা বের হয় জাহান্নামের তলদেশ থেকে৷
﴿طَلْعُهَا كَأَنَّهُ رُءُوسُ الشَّيَاطِينِ﴾
৬৫) তার ফুলের কলিগুলো যেন শয়তানদের মুণ্ডু৷ ৩৬
﴿فَإِنَّهُمْ لَآكِلُونَ مِنْهَا فَمَالِئُونَ مِنْهَا الْبُطُونَ﴾
৬৬) জাহান্নামের অধিবাসীরা তা খাবে এবং তা নিয়ে পেট ভরবে৷
﴿ثُمَّ إِنَّ لَهُمْ عَلَيْهَا لَشَوْبًا مِّنْ حَمِيمٍ﴾
৬৭) তারপর পান করার জন্য তারা পাবে ফুটন্ত পানি৷
﴿ثُمَّ إِنَّ مَرْجِعَهُمْ لَإِلَى الْجَحِيمِ﴾
৬৮) আর এরপর তাদের প্রত্যাবর্তন হবে৷ এ অগ্নিময় দোজখের দিকে৷৩৭
﴿إِنَّهُمْ أَلْفَوْا آبَاءَهُمْ ضَالِّينَ﴾
৬৯) এরা এমনসব লোক যারা নিজেদের বাপ-দাদাদেরকে পথভ্রষ্ট পেয়েছে৷
﴿فَهُمْ عَلَىٰ آثَارِهِمْ يُهْرَعُونَ﴾
৭০) এবং তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে ছুটে চলেছে৷৩৮
﴿وَلَقَدْ ضَلَّ قَبْلَهُمْ أَكْثَرُ الْأَوَّلِينَ﴾
৭১) অথচ তাদের পূর্বে বহু লোক পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছিল৷
﴿وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا فِيهِم مُّنذِرِينَ﴾
৭২) এবং তাদের মধ্যে আমি সতর্ককারী রসূল পাঠিয়েছিলাম৷
﴿فَانظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُنذَرِينَ﴾
৭৩) এখন দেখো সে সতর্ককৃত লোকদের কি পরিণাম হয়েছিল৷
﴿إِلَّا عِبَادَ اللَّهِ الْمُخْلَصِينَ﴾
৭৪) এ অশুভ পরিণতির হাত থেকে কেবলমাত্র আল্লাহর সে বান্দারাই রেহাই পেয়েছে যাদেরকে তিনি নিজের জন্য স্বতন্ত্র করে নিয়েছেন৷
﴿وَلَقَدْ نَادَانَا نُوحٌ فَلَنِعْمَ الْمُجِيبُونَ﴾
৭৫) (ইতিপূর্বে) ৩৮ নূহ আমাকে ডেকেছিল, ৪০ তাহলে দেখো, আমি ছিলাম কত ভালো জওয়াবদাতা৷
﴿وَنَجَّيْنَاهُ وَأَهْلَهُ مِنَ الْكَرْبِ الْعَظِيمِ﴾
৭৬) আমি তাকে ও তার পরিবারবর্গকে উদ্ধার করি ভয়াবহ যন্ত্রণা থেকে, ৪১৪১
﴿وَجَعَلْنَا ذُرِّيَّتَهُ هُمُ الْبَاقِينَ﴾
৭৭) শুধু তার বংশধরদেরকেই টিকিয়ে রাখি ৪২
﴿وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِينَ﴾
৭৮) এবং পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে তারই প্রশংসা ছেড়ে দেই ৷
﴿سَلَامٌ عَلَىٰ نُوحٍ فِي الْعَالَمِينَ﴾
৭৯) সমগ্র বিশ্ববাসীর মধ্যে নূহের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক৷ ৪৩
﴿إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ﴾
৮০) সৎকর্মশীলদেরকে আমি এমনই প্রতিদান দিয়ে থাকি৷
﴿إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ﴾
৮১) আসলে সে ছিল আমার মু’মিন বান্দাদের অন্তরভূক্ত৷
﴿ثُمَّ أَغْرَقْنَا الْآخَرِينَ﴾
৮২) তারপর অন্যদলেকে আমি ডুবিয়ে দেই৷
﴿وَإِنَّ مِن شِيعَتِهِ لَإِبْرَاهِيمَ﴾
৮৩) আর নূহের পথের অনুসারী ছিল ইবরাহীম৷
﴿إِذْ جَاءَ رَبَّهُ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ﴾
৮৪) যখন সে তার রবের সামনে হাজির হয় “বিশুদ্ধ চিত্ত” নিয়ে৷ ৪৪
﴿إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِ مَاذَا تَعْبُدُونَ﴾
৮৫) যখন বলে সে তার পিতা ও তার জাতিকে ৪৫ “এগুলো কি জিনিস যার ইবাদাত তোমরা করছো?
﴿أَئِفْكًا آلِهَةً دُونَ اللَّهِ تُرِيدُونَ﴾
৮৬) আল্লাহকে বাদ দিয়ে কি তোমরা মিথ্যা বানোয়াট মাবুদ চাও ?
﴿فَمَا ظَنُّكُم بِرَبِّ الْعَالَمِينَ﴾
৮৭) সমস্ত বিশ্ব-জগতের রব আল্লাহ সম্পর্কে তোমাদের ধারণা কি?” ৪৬
﴿فَنَظَرَ نَظْرَةً فِي النُّجُومِ﴾
৮৮) তারপর ৪৭ সে তারকাদের দিকে একবার তাকালো ৪৮
﴿فَقَالَ إِنِّي سَقِيمٌ﴾
৮৯) এবং বললো, আমি অসুস্থ৷ ৪৯
﴿فَتَوَلَّوْا عَنْهُ مُدْبِرِينَ﴾
৯০) কাজেই তারা তাকে ত্যাগ করে চলে গেলো৷৫০
﴿فَرَاغَ إِلَىٰ آلِهَتِهِمْ فَقَالَ أَلَا تَأْكُلُونَ﴾
৯১) তাদের পেছনে সে চুপিচুপি তাদের দেবতাদের মন্দিরে ঢুকে পড়লো এবং বললো, “আপনারা খাচ্ছেন না কেন?”৫১
﴿مَا لَكُمْ لَا تَنطِقُونَ﴾
৯২) কি হলো আপনাদের, কথা বলছেন না কেন ?”
﴿فَرَاغَ عَلَيْهِمْ ضَرْبًا بِالْيَمِينِ﴾
৯৩) এরপর সে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো এবং ডান হাত দিয়ে খুব আঘাত করলো৷
﴿فَأَقْبَلُوا إِلَيْهِ يَزِفُّونَ﴾
৯৪) (ফিরে এসে) তারা দৌড়ে তার কাছে এলো৷৫২
﴿قَالَ أَتَعْبُدُونَ مَا تَنْحِتُونَ﴾
৯৫) সে বললো, “তোমরা কি নিজেদেরই খোদাই করা জিনিসের পূজা করো?
﴿وَاللَّهُ خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ﴾
৯৬) অথচ আল্লাহই তোমাদেরকেও সৃষ্টি করেছেন এবং তোমরা যে জিনিসগুলো তৈরি করো তাদেরকেও৷”
﴿قَالُوا ابْنُوا لَهُ بُنْيَانًا فَأَلْقُوهُ فِي الْجَحِيمِ﴾
৯৭) তারা পরস্পর বললো, “এর জন্য একটি অগ্নিকুণ্ডু তৈরি করো এবং একে জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে ফেলে দাও৷”
﴿فَأَرَادُوا بِهِ كَيْدًا فَجَعَلْنَاهُمُ الْأَسْفَلِينَ﴾
৯৮) তারা তার বিরুদ্ধে একটি পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিল কিন্তু আমি তাদেরকে হেয়প্রতিপন্ন করেছি৷ ৫৩
﴿وَقَالَ إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَىٰ رَبِّي سَيَهْدِينِ﴾
৯৯) ইবরাহীম বললো, ৫৪ “আমি আমার রবের দিকে যাচ্ছি, ৫৫ তিনিই আমাকে পথ দেখাবেন৷
﴿رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ﴾
১০০) হে পরওয়ারদিগার! আমাকে একটি সৎকর্মশীল পুত্র সন্তান দাও৷”৫৬
﴿فَبَشَّرْنَاهُ بِغُلَامٍ حَلِيمٍ﴾
১০১) (এ দোয়ার জবাবে) আমি তাকে একটি ধৈর্যশীল পুত্রের সুসংবাদ দিলাম৷ ৫৭
﴿فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ السَّعْيَ قَالَ يَا بُنَيَّ إِنِّي أَرَىٰ فِي الْمَنَامِ أَنِّي أَذْبَحُكَ فَانظُرْ مَاذَا تَرَىٰ ۚ قَالَ يَا أَبَتِ افْعَلْ مَا تُؤْمَرُ ۖ سَتَجِدُنِي إِن شَاءَ اللَّهُ مِنَ الصَّابِرِينَ﴾
১০২) সে পুত্র যখন তার সাথে কাজকর্ম করার বয়সে পৌঁছুলো তখন (একদিন ইবরাহীম তাকে বললো, “ হে পুত্র! আমি স্বপ্নে দেখি তোমাকে আমি যাবেহ করছি, ৫৮ এখন তুমি বল তুমি কি মনে কর?” ৫৯ সে বললো, “ হে আব্বাজান! আপনাকে যা হুকুম দেয়া হচ্ছে ৬০ তা করে ফেলুন, আপনি আমাকে ইনশাআল্লাহ সবরকারীই পাবেন৷”
﴿فَلَمَّا أَسْلَمَا وَتَلَّهُ لِلْجَبِينِ﴾
১০৩) শেষ পর্যন্ত যখন এরা দু’জন আনুগত্যের শির নত করে দিল এবং ইবরাহীম পুত্রকে উপুড় করে শুইয়ে দিল৷ ৬১
﴿وَنَادَيْنَاهُ أَن يَا إِبْرَاهِيمُ﴾
১০৪) এবং আমি আওয়াজ দিলাম, ৬২ “ হে ইবরাহীম!
﴿قَدْ صَدَّقْتَ الرُّؤْيَا ۚ إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ﴾
১০৫) তুমি স্বপ্নকে সত্য করে দেখিয়ে দিয়েছো৷ ৬৩ আমি সৎকর্মকারীদেরকে এভাবেই পুরস্কৃত করে থাকি৷ ৬৪
﴿إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ الْبَلَاءُ الْمُبِينُ﴾
১০৬) নিশ্চিতভাবেই এটি ছিল একটি প্রকাশ পরীক্ষা৷” ৬৫
﴿وَفَدَيْنَاهُ بِذِبْحٍ عَظِيمٍ﴾
১০৭) একটি বড় কুরবানীর বিনিময়ে আমি এ শিশুটিকে ছাড়িয়ে নিলাম ৬৬
﴿وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِينَ﴾
১০৮) এবং পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে চিরকালের জন্য তার প্রশংসা রেখে দিলাম৷
﴿سَلَامٌ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ﴾
১০৯) শান্তি বর্ষিত হোক ইবরাহীমের প্রতি৷
﴿كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ﴾
১১০) আমি সৎকর্মকারীদেরকে এভাবেই পুরস্কৃত করে থাকি৷
﴿إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ﴾
১১১) নিশ্চিতভাবেই সে ছিল আমার মুসলিম বান্দাদের অন্তরভুক্ত৷
﴿وَبَشَّرْنَاهُ بِإِسْحَاقَ نَبِيًّا مِّنَ الصَّالِحِينَ﴾
১১২) আর আমি তাকে ইসহাকের সুসংবাদ দিলাম, সে ছিল সৎকর্মশীলদের মধ্য থেকে একজন নবী৷
﴿وَبَارَكْنَا عَلَيْهِ وَعَلَىٰ إِسْحَاقَ ۚ وَمِن ذُرِّيَّتِهِمَا مُحْسِنٌ وَظَالِمٌ لِّنَفْسِهِ مُبِينٌ﴾
১১৩) বরকত দিলাম তাকে ও ইসহাককে, ৬৭ এখন এ দু’জনের বংশধরদের মধ্য থেকে কতক সৎকর্মকারী আবার কতক নিজেদের প্রতি সুস্পষ্ট জুলুমকারী৷ ৬৮
﴿وَلَقَدْ مَنَنَّا عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَارُونَ﴾
১১৪) আমি অনুগ্রহ করেছি মূসা ও হারূনের প্রতি৷
﴿وَنَجَّيْنَاهُمَا وَقَوْمَهُمَا مِنَ الْكَرْبِ الْعَظِيمِ﴾
১১৫) তাদের উভয়কে ও তাদের জাতিকে উদ্ধার করেছি মহাক্লেশ থেকে৷ ৬৯
﴿وَنَصَرْنَاهُمْ فَكَانُوا هُمُ الْغَالِبِينَ﴾
১১৬) তাদেরকে সাহায্য করেছি, যার ফলে তারাই বিজয়ী হয়েছে৷
﴿وَآتَيْنَاهُمَا الْكِتَابَ الْمُسْتَبِينَ﴾
১১৭) তাদের উভয়কে অত্যন্ত সুস্পষ্ট কিতাব দান করেছি৷
﴿وَهَدَيْنَاهُمَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ﴾
১১৮) উভয়কে সঠিক পথ দেখিয়েছি
﴿وَتَرَكْنَا عَلَيْهِمَا فِي الْآخِرِينَ﴾
১১৯) এবং পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে তাদের উভয়ের সম্পর্কে সুখ্যাতি অক্ষুণ্ন রেখেছি৷
﴿سَلَامٌ عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَارُونَ﴾
১২০) মুসা ও হারূদের প্রতি সালাম৷
﴿إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ﴾
১২১) সৎকর্মশীলদের আমি অনুরূপ প্রতিদানই দিয়ে থাকি৷
﴿إِنَّهُمَا مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ﴾
১২২) আসলে তারা আমার মু’মিন বান্দাদের অন্তরভুক্ত ছিল৷
﴿وَإِنَّ إِلْيَاسَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ﴾
১২৩) আর ইলিয়াসও অবশ্যই রসূলদের একজন ছিল৷ ৭০
﴿إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ أَلَا تَتَّقُونَ﴾
১২৪) স্মরণ করো যখন সে তার জাতিকে বলেছিল, “তোমরা ভয় করো না ?
﴿أَتَدْعُونَ بَعْلًا وَتَذَرُونَ أَحْسَنَ الْخَالِقِينَ﴾
১২৫) তোমরা কি বা’আলকে ৭১ ডাকো এবং পরিত্যাগ করো শ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহকে,
﴿اللَّهَ رَبَّكُمْ وَرَبَّ آبَائِكُمُ الْأَوَّلِينَ﴾
১২৬) যিনি তোমাদের ও তোমাদের আগের পেছনের বাপ-দাদাদের রব?”
﴿فَكَذَّبُوهُ فَإِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ﴾
১২৭) কিন্তু তারা তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করলো কাজেই এখন নিশ্চিতভাবেই তাদেরকে শাস্তির জন্য পেশ করা হবে,
﴿إِلَّا عِبَادَ اللَّهِ الْمُخْلَصِينَ﴾
১২৮) তবে আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দারা ছাড়া৷ ৭২
﴿وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآخِرِينَ﴾
১২৯) আর ইলিয়াসের সম্পর্কে সুখ্যাতি আমি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে অব্যাহত রেখেছি৷ ৭৩
﴿سَلَامٌ عَلَىٰ إِلْ يَاسِينَ﴾
১৩০) ইলিয়াসের প্রতি সালাম৷ ৭৪
﴿إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ﴾
১৩১) সৎকর্মশীলদের আমি অনুরূপ প্রতিদানই দিয়ে থাকি৷
﴿إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ﴾
১৩২) যথার্থই সে আমার মু’মিন বান্দাদের একজন ছিল৷
﴿وَإِنَّ لُوطًا لَّمِنَ الْمُرْسَلِينَ﴾
১৩৩) আর লূতও তাদের একজন ছিল যাদেরকে রসূল বানিয়ে পাঠানো হয়৷
﴿إِذْ نَجَّيْنَاهُ وَأَهْلَهُ أَجْمَعِينَ﴾
১৩৪) স্মরণ করো যখন আমি তাকে এবং তার পরিবারের সকলকে উদ্ধার করি,
﴿إِلَّا عَجُوزًا فِي الْغَابِرِينَ﴾
১৩৫) এক বুড়ি ছাড়া যে পেছনে অবস্থানকারীদের অন্তরভূক্ত ছিল৷ ৭৫
﴿ثُمَّ دَمَّرْنَا الْآخَرِينَ﴾
১৩৬) তারপর বাকি সবাইকে ধ্বংস করে দেই৷
﴿وَإِنَّكُمْ لَتَمُرُّونَ عَلَيْهِم مُّصْبِحِينَ﴾
১৩৭) এখন তোমরা দিনরাত তাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকা
﴿وَبِاللَّيْلِ ۗ أَفَلَا تَعْقِلُونَ﴾
১৩৮) অতিক্রম করে যাও৷ ৭৬ তোমরা কি বোঝ না?
﴿وَإِنَّ يُونُسَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ﴾
১৩৯) আর অবশ্যই ইউনুস রসূলদের একজন ছিল৷ ৭৭
﴿إِذْ أَبَقَ إِلَى الْفُلْكِ الْمَشْحُونِ﴾
১৪০) স্মরণ করো যখন সে একটি বোঝাই নৌকার দিকে পালিয়ে গেলো, ৭৮
﴿فَسَاهَمَ فَكَانَ مِنَ الْمُدْحَضِينَ﴾
১৪১) তারপর লটারীতে অংশগ্রহণ করলো, এবং তাতে হেরে গেলো৷
﴿فَالْتَقَمَهُ الْحُوتُ وَهُوَ مُلِيمٌ﴾
১৪২) শেষ পর্যন্ত মাছ তাকে গিলে ফেললা এবং সে ছিল ধিকৃত৷৭৯
﴿فَلَوْلَا أَنَّهُ كَانَ مِنَ الْمُسَبِّحِينَ﴾
১৪৩) এখন যদি সে তাস্‌বীহকারীদের অন্তরভুক্ত না হতো, ৮০
﴿لَلَبِثَ فِي بَطْنِهِ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ﴾
১৪৪) তাহলে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত এ মাছের পেটে থাকতো৷ ৮১
﴿فَنَبَذْنَاهُ بِالْعَرَاءِ وَهُوَ سَقِيمٌ﴾
১৪৫) শেষ পর্যন্ত আমি তাকে বড়ই রুগ্ন অবস্থায় একটি তৃণলতাহীণ বিরান প্রান্তরে নিক্ষেপ করলাম৮২
﴿وَأَنبَتْنَا عَلَيْهِ شَجَرَةً مِّن يَقْطِينٍ﴾
১৪৬) এবং তার ওপর একটি লতানো গাছ উৎপন্ন করলাম৷ ৮৩
﴿وَأَرْسَلْنَاهُ إِلَىٰ مِائَةِ أَلْفٍ أَوْ يَزِيدُونَ﴾
১৪৭) এরপর আমি তাকে এক লাখ বা এরচেয়ে বেশী লোকাদের কাছে পাঠালাম৷ ৮৪
﴿فَآمَنُوا فَمَتَّعْنَاهُمْ إِلَىٰ حِينٍ﴾
১৪৮) তারা ঈমান আনলো এবং আমি একটি বিশেষ সময় পর্যন্ত তাদেরকে টিকিয়ে রাখলাম৷ ৮৫
﴿فَاسْتَفْتِهِمْ أَلِرَبِّكَ الْبَنَاتُ وَلَهُمُ الْبَنُونَ﴾
১৪৯) তারপর তাদেরকে একটু জিজ্ঞেস করো, ৮৬ (তাদের মন কি একথায় সায় দেয় যে,) তোমাদের রবের জন্য তো হচ্ছে কন্যারা এবং তাদের জন্য পুত্ররা? ৮৭
﴿أَمْ خَلَقْنَا الْمَلَائِكَةَ إِنَاثًا وَهُمْ شَاهِدُونَ﴾
১৫০) সত্যই কি আমি ফেরেশ্‌তাদেরকে মেয়ে হিসেবে সৃষ্টি করেছি এবং তারা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করে একথা বলছে ?
﴿أَلَا إِنَّهُم مِّنْ إِفْكِهِمْ لَيَقُولُونَ﴾
১৫১) ভালো করেই শুনে রাখো, আসলে তারা তো মনগড়া কথা বলে যে,
﴿وَلَدَ اللَّهُ وَإِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ﴾
১৫২) আল্লাহর সন্তান আছে এবং যথার্থই তারা মিথ্যাবাদী৷
﴿أَصْطَفَى الْبَنَاتِ عَلَى الْبَنِينَ﴾
১৫৩) আল্লাহ কি নিজের জন্য পুত্রের পরিবর্তে কন্যা পছন্দ করেছেন?
﴿مَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ﴾
১৫৪) তোমাদের কি হয়ে গেছে, কিভাবে ফায়সালা করছো?
﴿أَفَلَا تَذَكَّرُونَ﴾
১৫৫) তোমরা কি সচেতন হবে না ?
﴿أَمْ لَكُمْ سُلْطَانٌ مُّبِينٌ﴾
১৫৬) অথবা তোমাদের কাছে তোমাদের এসব কথার স্বপক্ষে কোন পরিষ্কা প্রমাণপত্র আছে ?
﴿فَأْتُوا بِكِتَابِكُمْ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ﴾
১৫৭) তাহলে আনো তোমাদের সে কিতাব, যদি তোমরা সত্যবাদী হও৷ ৮৮
﴿وَجَعَلُوا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجِنَّةِ نَسَبًا ۚ وَلَقَدْ عَلِمَتِ الْجِنَّةُ إِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ﴾
১৫৮) তারা আল্লাহ ও ফেরেশ্‌তাদের ৮৯ মধ্যে আত্মীয় সম্পর্ক স্থাপন করে রেখেছে৷ অথচ ফেরেশ্‌তারা ভালো করেই জানে তাদেরকে অপরাধী হিসেবে উপস্থিত করা হবে৷
﴿سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يَصِفُونَ﴾
১৫৯) (এবং তারা বলে,) “আল্লাহ সেসব দোষ থেকে মুক্ত
﴿إِلَّا عِبَادَ اللَّهِ الْمُخْلَصِينَ﴾
১৬০) যেগুলো তাঁর একনিষ্ঠ বান্দারা ছাড়া অন্যেরা তাঁর ওপর আরোপ করে৷
﴿فَإِنَّكُمْ وَمَا تَعْبُدُونَ﴾
১৬১) কাজেই তোমরা ও তোমাদের এ উপাস্যরা
﴿مَا أَنتُمْ عَلَيْهِ بِفَاتِنِينَ﴾
১৬২) কাউকে আল্লাহ থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারবে না,
﴿إِلَّا مَنْ هُوَ صَالِ الْجَحِيمِ﴾
১৬৩) সে ব্যক্তিকে ছাড়া যে জাহান্নামের প্রজ্জ্বীলত আগুনে প্রবেশকারী হবে৷ ৯০
﴿وَمَا مِنَّا إِلَّا لَهُ مَقَامٌ مَّعْلُومٌ﴾
১৬৪) আর আমাদের অবস্থা তো হচ্ছে এই যে, আমাদের মধ্য থেকে প্রত্যেকের একটি স্থান নির্ধারিত রয়েছে৷ ৯১
﴿وَإِنَّا لَنَحْنُ الصَّافُّونَ﴾
১৬৫) এবং আমরা সারিবদ্ধ
﴿وَإِنَّا لَنَحْنُ الْمُسَبِّحُونَ﴾
১৬৬) খাদেম ও তাসবীহ পাঠকারী৷”
﴿وَإِن كَانُوا لَيَقُولُونَ﴾
১৬৭) তারা তো আগে বলে বেড়াতো,
﴿لَوْ أَنَّ عِندَنَا ذِكْرًا مِّنَ الْأَوَّلِينَ﴾
১৬৮) হায়! পূর্ববর্তী জাতিরা যে “যিকির” লাভ করেছিল তা যদি আমাদের কাছে থাকতো
﴿لَكُنَّا عِبَادَ اللَّهِ الْمُخْلَصِينَ﴾
১৬৯) তাহলে আমরা হতাম আল্লাহর নির্বাচিত বান্দা৷ ৯২
﴿فَكَفَرُوا بِهِ ۖ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ﴾
১৭০) কিন্তু (যখন সে এসে গেছে) তখন তারা তাকে অস্বীকার করেছে৷ এখন শিগ্‌গির তারা (তাদের এ নীতির ফল) জানতে পারবে৷
﴿وَلَقَدْ سَبَقَتْ كَلِمَتُنَا لِعِبَادِنَا الْمُرْسَلِينَ﴾
১৭১) আমার প্রেরিত বান্দাদেরকে আমি আগেই, প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে, অবশ্যই তাদেরকে সাহায্য করা হবে৷
﴿إِنَّهُمْ لَهُمُ الْمَنصُورُونَ﴾
১৭২) অবশ্যই তাদেরকে সাহায্য করা হবে৷
﴿وَإِنَّ جُندَنَا لَهُمُ الْغَالِبُونَ﴾
১৭৩) এবং আমার সেনাদলই বিজয়ী হবে৷ ৯৩
﴿فَتَوَلَّ عَنْهُمْ حَتَّىٰ حِينٍ﴾
১৭৪) কাজেই হে নবী! কিছু সময় পর্যন্ত তাদেরকে তাদের অবস্থার ওপর ছেড়ে দাও৷
﴿وَأَبْصِرْهُمْ فَسَوْفَ يُبْصِرُونَ﴾
১৭৫) এবং দেখতে থাকো, শীঘ্রই তারা নিজেরাও দেখে নেবে৷ ৯৪
﴿أَفَبِعَذَابِنَا يَسْتَعْجِلُونَ﴾
১৭৬) তারা কি আমার আযাবের জন্য তাড়াহুড়া করছে ?
﴿فَإِذَا نَزَلَ بِسَاحَتِهِمْ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنذَرِينَ﴾
১৭৭) যখন তা নেমে আসবে তাদের আঙিনায়, সেদিনটি হবে যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল তাদের জন্য বড়ই অশুভ৷
﴿وَتَوَلَّ عَنْهُمْ حَتَّىٰ حِينٍ﴾
১৭৮) ব্যস, তাদেরকে কিছুকালের জন্য ছেড়ে দাও৷
﴿وَأَبْصِرْ فَسَوْفَ يُبْصِرُونَ﴾
১৭৯) এবং দেখতে থাকো, শিগ্‌গির তারা নিজেরাও দেখে নেবে৷
﴿سُبْحَانَ رَبِّكَ رَبِّ الْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ﴾
১৮০) তারা যেসব কথা তৈরি করছে তা থেকে পাক-পবিত্র তোমার রব, তিনি মর্যাদার অধিকারী৷
﴿وَسَلَامٌ عَلَى الْمُرْسَلِينَ﴾
১৮১) আর সালাম প্রেরিতদের প্রতি
﴿وَالْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾
১৮২) এবং সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ রব্বুল আলামীনেরই জন্য৷ 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন