শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬

আন নাজম


بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
وَالنَّجْمِ إِذَا هَوَىٰ
১) তারকারাজির শপথ যখন তা অস্তমিত হলো৷

﴿مَا ضَلَّ صَاحِبُكُمْ وَمَا غَوَىٰ﴾
২) তোমার বন্ধু  পথভ্রষ্ট হয়নি বা বিপথগামীও হয়নি৷

﴿وَمَا يَنطِقُ عَنِ الْهَوَىٰ﴾
৩) সে নিজের খেয়াল খুশীমত কথা বলে না৷

﴿إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَىٰ﴾
৪) যা তার কাছে নাযিল করা হয় তা অহী ছাড়া আর কিছুই নয়৷

﴿عَلَّمَهُ شَدِيدُ الْقُوَىٰ﴾
৫) তাকে মহাশক্তির অধিকারী একজন শিক্ষা দিয়েছে,  যে অত্যন্ত জ্ঞানী৷

﴿ذُو مِرَّةٍ فَاسْتَوَىٰ﴾
৬) সে সামনে এসে দাঁড়ালো৷

﴿وَهُوَ بِالْأُفُقِ الْأَعْلَىٰ﴾
৭) তখন সে উঁচু দিগন্তে ছিল৷

﴿ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّىٰ﴾
৮) তারপর কাছে এগিয়ে এলো এবং ওপরে শূন্যে ঝুলে রইলো৷

﴿فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَىٰ﴾
৯) অতপর তাদের মাঝে মুখোমুখি দু’টি ধনুকের জ্যা-এর মত কিংবা তার চেয়ে কিছু কম ব্যবধান রাইলো৷

﴿فَأَوْحَىٰ إِلَىٰ عَبْدِهِ مَا أَوْحَىٰ﴾
১০) তখন আল্লাহর বান্দাকে যে অহী পৌছানোর ছিল তা সে পৌছিয়ে দিল৷

﴿مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَىٰ﴾
১১) দৃষ্টি যা দেখলো মন তার মধ্যে মিথ্যা সংমিশ্রিত করলো না৷১০

﴿أَفَتُمَارُونَهُ عَلَىٰ مَا يَرَىٰ﴾
১২) যা সে নিজের চোখে দেখেছে তা নিয়ে কি তোমরা তার সাথে ঝগড়া করো?

﴿وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً أُخْرَىٰ﴾
১৩) পুনরায় আর একবার সে তাকে

﴿عِندَ سِدْرَةِ الْمُنتَهَىٰ﴾
১৪) সিদরাতুল মুনতাহার কাছে দেখেছে৷

﴿عِندَهَا جَنَّةُ الْمَأْوَىٰ﴾
১৫) যার সন্নিকটেই জান্নাতুল মা’ওয়া অবস্থিত৷ ১১

﴿إِذْ يَغْشَى السِّدْرَةَ مَا يَغْشَىٰ﴾
১৬) সে সময় সিদরাকে আচ্ছাদিত করছিলো এক আচ্ছাদনকারী জিনিস৷ ১২

﴿مَا زَاغَ الْبَصَرُ وَمَا طَغَىٰ﴾
১৭) দৃষ্টি ঝলসেও যায়নি কিংবা সীমা অতিক্রমও করেনি৷ ১৩

﴿لَقَدْ رَأَىٰ مِنْ آيَاتِ رَبِّهِ الْكُبْرَىٰ﴾
১৮) সে তার রবের বড় বড় নিদর্শনসমূহ দেখেছে৷ ১৪

﴿أَفَرَأَيْتُمُ اللَّاتَ وَالْعُزَّىٰ﴾
১৯) এখন একটু বলতো, তোমরা কি কখনো এ লাত, এ উযযা

﴿وَمَنَاةَ الثَّالِثَةَ الْأُخْرَىٰ﴾
২০) এবং তৃতীয় আরো একজন দেবতা মানাতের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে গভীর ভাবে চিন্তা-ভাবনা করে দেখেছো?১৫

﴿أَلَكُمُ الذَّكَرُ وَلَهُ الْأُنثَىٰ﴾
২১) তোমাদের জন্য পুত্র সন্তান আর কন্যা সন্তান কি আল্লাহর জন্য ?১৬

﴿تِلْكَ إِذًا قِسْمَةٌ ضِيزَىٰ﴾
২২) তাহলে এটা অত্যন্ত প্রতারণামূলক বন্টন৷

﴿إِنْ هِيَ إِلَّا أَسْمَاءٌ سَمَّيْتُمُوهَا أَنتُمْ وَآبَاؤُكُم مَّا أَنزَلَ اللَّهُ بِهَا مِن سُلْطَانٍ ۚ إِن يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَمَا تَهْوَى الْأَنفُسُ ۖ وَلَقَدْ جَاءَهُم مِّن رَّبِّهِمُ الْهُدَىٰ﴾
২৩) প্রকৃতপক্ষে এসব তোমাদের বাপ দাদাদের রাখা নাম ছাড়া আর কিছুই না৷ এজন্য আল্লাহ কোন সনদপত্র নাযিল করেননি৷ ১৭ প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে, মানুষ শুধু ধারণা ও প্রবৃত্তির বাসনার দাস হয়ে আছে৷ ১৮ অথচ তাদের রবের পক্ষ থেকে তাদের কাছে হিদায়াত এসেছে৷১৯

﴿أَمْ لِلْإِنسَانِ مَا تَمَنَّىٰ﴾
২৪) মানুষ যা চায় তাই কি তার জন্য ঠিক? ২০

﴿فَلِلَّهِ الْآخِرَةُ وَالْأُولَىٰ﴾
২৫) দুনিয়া ও আখেরাতের মালিক তো একমাত্র আল্লাহ৷

﴿وَكَم مِّن مَّلَكٍ فِي السَّمَاوَاتِ لَا تُغْنِي شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا إِلَّا مِن بَعْدِ أَن يَأْذَنَ اللَّهُ لِمَن يَشَاءُ وَيَرْضَىٰ﴾
২৬) আসমানে তো কত ফেরেশতা আছে যাদের সুপারিশও কোন কাজে আসতে পারে না যতক্ষণ না আল্লাহ নিজ ইচ্ছায় যাকে খুশী তার জন্য সুপারিশ করার অনুমতি দান করেন৷ ২১

﴿إِنَّ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ لَيُسَمُّونَ الْمَلَائِكَةَ تَسْمِيَةَ الْأُنثَىٰ﴾
২৭) কিন্তু যারা আখেরাত মানে না তারা ফেরেশতাদেরকে দেবীদের নামে নামকরণ করে৷ ২২

﴿وَمَا لَهُم بِهِ مِنْ عِلْمٍ ۖ إِن يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ ۖ وَإِنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئًا﴾
২৮) অথচ এ ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞানই নেই৷ তারা কেবলই বদ্ধমূল ধারণার অনুসরণ করছে৷ ২৩ আর ধারণা কখনো জ্ঞানের প্রয়োজন পূরণে কোন কাজে আসতে পারে না৷

﴿فَأَعْرِضْ عَن مَّن تَوَلَّىٰ عَن ذِكْرِنَا وَلَمْ يُرِدْ إِلَّا الْحَيَاةَ الدُّنْيَا﴾
২৯) সুতরাং হে নবী, যে আমার উপদেশ বাণী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় ২৪ এবং দুনিয়ার জীবন ছাড়া যার আর কোন কাম্য নেই তাকে তার আপন অবস্থায় ছেড়ে দাও৷ ২৫

﴿ذَٰلِكَ مَبْلَغُهُم مِّنَ الْعِلْمِ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اهْتَدَىٰ﴾
৩০) এদের ২৬ জ্ঞানের দৌড় এতটুকুই৷২৭  তোমরা রবই অধিক জানেন-কে তাঁর পথ ছেড়ে বিপথগামী হয়েছে আর কে সঠিক পথে আছে৷

﴿وَلِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ لِيَجْزِيَ الَّذِينَ أَسَاءُوا بِمَا عَمِلُوا وَيَجْزِيَ الَّذِينَ أَحْسَنُوا بِالْحُسْنَى﴾
৩১) যমীন ও আসমানের প্রতিটি জিনিসের মালিক একমাত্র আল্লাহ ২৮ -যাতে ২৯ আল্লাহ অন্যায়কারীদেরকে তাদের কাজের প্রতিদান দেন এবং যারা ভাল নীতি ও আচরণ গ্রহণ করেছে তাদের উত্তম প্রতিদান দিয়ে পুরস্কৃত করেন৷

﴿الَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ كَبَائِرَ الْإِثْمِ وَالْفَوَاحِشَ إِلَّا اللَّمَمَ ۚ إِنَّ رَبَّكَ وَاسِعُ الْمَغْفِرَةِ ۚ هُوَ أَعْلَمُ بِكُمْ إِذْ أَنشَأَكُم مِّنَ الْأَرْضِ وَإِذْ أَنتُمْ أَجِنَّةٌ فِي بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ ۖ فَلَا تُزَكُّوا أَنفُسَكُمْ ۖ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اتَّقَىٰ﴾
৩২) যারা বড় বড় গোনাহ ৩০ এবং প্রকাশ্য ও সর্বজনবিদিত অশ্লীল কাজ৩১ থেকে বিরত থাকে -তবে ছোটখাট ক্রুটি -বিচ্যুতি হওয়া ভিন্ন কথা৩২ -নিশ্চয়ই তোমার রবের ক্ষমাশীলতা অনেক ব্যাপক৷ ৩৩ যখন তিনি মাটি থেকে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন৷ এবং যখন তোমরা মাতৃগর্ভে ভ্রূণ আকারে ছিলে তখন থেকে তিনি তোমাদের জানেন৷ অতএব তোমরা নিজেদের পবিত্রতার দাবী করো না৷ সত্যিকার মুত্তাকী কে তা তিনিই ভাল জানেন৷

﴿أَفَرَأَيْتَ الَّذِي تَوَلَّىٰ﴾
৩৩) হে নবী, তুমি কি সেই ব্যক্তিকে দেখেছো যে আল্লাহর পথ থেকে ফিরে গিয়েছে

﴿وَأَعْطَىٰ قَلِيلًا وَأَكْدَىٰ﴾
৩৪) এবং সামান্য মাত্র দিয়ে ক্ষান্ত হয়েছে?৩৪

﴿أَعِندَهُ عِلْمُ الْغَيْبِ فَهُوَ يَرَىٰ﴾
৩৫) তার কাছে কি গায়েবের জ্ঞান আছে যে সে প্রকৃত ব্যাপারটা দেখতে পাচ্ছে? ৩৫

﴿أَمْ لَمْ يُنَبَّأْ بِمَا فِي صُحُفِ مُوسَىٰ﴾
৩৬) তার কাছে কি মূসার সহীফাসমূহের কোন খবর পৌছেনি? আর আনুগত্যের পরম পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছে ৩৬

﴿وَإِبْرَاهِيمَ الَّذِي وَفَّىٰ﴾
৩৭) সে ইবরাহীম তার সহীফাসমূহের কথাও কি পৌছেনি?

﴿أَلَّا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ﴾
৩৮) একথা যে, “কোন বোঝা বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না৷ ”৩৭

﴿وَأَن لَّيْسَ لِلْإِنسَانِ إِلَّا مَا سَعَىٰ﴾
৩৯) একথা যে, “মানুষ যে চেষ্টা সাধনা করে তা ছাড়া তার আর কিছুই প্রাপ্য নেই৷ ৩৮

﴿وَأَنَّ سَعْيَهُ سَوْفَ يُرَىٰ﴾
৪০) একথা যে, “তার চেষ্টা-সাধনা অচিরেই মূল্যায়ণ করা হবে৷ ৩৯

﴿ثُمَّ يُجْزَاهُ الْجَزَاءَ الْأَوْفَىٰ﴾
৪১) এবং তাকে তার পুরো প্রতিদান দেয়া হবে৷ ”

﴿وَأَنَّ إِلَىٰ رَبِّكَ الْمُنتَهَىٰ﴾
৪২) একথা যে, “শেষ পর্যন্ত তোমার রবের কাছেই পৌছতে হবে৷ ”

﴿وَأَنَّهُ هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَىٰ﴾
৪৩) একথা যে, “তিনিই হাসিয়েছেন এবং তিনিই কাঁদিয়েছেন৷ ”৪০

﴿وَأَنَّهُ هُوَ أَمَاتَ وَأَحْيَا﴾
৪৪) একথা যে, “তিনিই মৃত্যু দিয়েছেন এবং তিনিই জীবন দান করেছেন৷ ”

﴿وَأَنَّهُ خَلَقَ الزَّوْجَيْنِ الذَّكَرَ وَالْأُنثَىٰ﴾
৪৫) একথা যে, “তিনিই পুরুষ ও নারী রূপে জোড়া সৃষ্টি করেছেন৷ ”

﴿مِن نُّطْفَةٍ إِذَا تُمْنَىٰ﴾
৪৬) -এক ফোটা শুক্রের সাহায্যে যখন তা নিক্ষেপ করা হয়৷ ”৪১

﴿وَأَنَّ عَلَيْهِ النَّشْأَةَ الْأُخْرَىٰ﴾
৪৭) একথা যে, “পুনরায় জীবন দান করাও তাঁরই কাজ৷ ”৪২

﴿وَأَنَّهُ هُوَ أَغْنَىٰ وَأَقْنَىٰ﴾
৪৮) একথা যে, “তিনিই সম্পদশালী করেছেন এবং স্থায়ী সম্পদ দান করেছেন৷ ”৪৩

﴿وَأَنَّهُ هُوَ رَبُّ الشِّعْرَىٰ﴾
৪৯) একথা যে, “তিনিই শে’রার রব৷ ”৪৪

﴿وَأَنَّهُ أَهْلَكَ عَادًا الْأُولَىٰ﴾
৫০) আর একথাও যে, তিনিই প্রথম আদকে ৪৫ ধ্বংস করেছেন

﴿وَثَمُودَ فَمَا أَبْقَىٰ﴾
৫১) এবং সামূদকে এমনভাবে নিশ্চিহ্ন করেছেন যে, কাউকে অবশিষ্ট রাখেননি৷

﴿وَقَوْمَ نُوحٍ مِّن قَبْلُ ۖ إِنَّهُمْ كَانُوا هُمْ أَظْلَمَ وَأَطْغَىٰ﴾
৫২) তাদের পূর্বে তিনি নূহের কওমকে ধ্বংস করেছেন৷ কারণ, তারা আসলেই বড় অত্যাচারী ও অবাধ্য লোক ছিল৷

﴿وَالْمُؤْتَفِكَةَ أَهْوَىٰ﴾
৫৩) তিনি উল্টে দেয়া জনপদকেও উঠিয়ে নিক্ষেপ করেছেন৷

﴿فَغَشَّاهَا مَا غَشَّىٰ﴾
৫৪) তারপর ঐগুলোকে আচ্ছাদিত করে দিল তাই যা (তোমরা জানো যে কি) আচ্ছাদিত করেছিলো৷ ৪৬

﴿فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكَ تَتَمَارَىٰ﴾
৫৫) তাই, ৪৭ হে শ্রোতা, তোমরা তোমাদের রবের কোন কোন নিয়ামতের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করবে? ৪৮

﴿هَٰذَا نَذِيرٌ مِّنَ النُّذُرِ الْأُولَىٰ﴾
৫৬) এটি একটি সাবধান বাণী-ইতিপূর্বে আগত সাবধান বাণীসমূহের মধ্য থেকে৷ ৪৯

﴿أَزِفَتِ الْآزِفَةُ﴾
৫৭) আগমনকারী মুহূর্ত অতি সন্নিকটবর্তী হয়েছে৷ ৫০

﴿لَيْسَ لَهَا مِن دُونِ اللَّهِ كَاشِفَةٌ﴾
৫৮) আল্লাহ ছাড়া আর কেউ তার প্রতিরোধকারী নেই৷ ৫১

﴿أَفَمِنْ هَٰذَا الْحَدِيثِ تَعْجَبُونَ﴾
৫৯) তাহলে কি এসব কথা শুনেই তোমরা বিস্ময় প্রকাশ করছো?৫২

﴿وَتَضْحَكُونَ وَلَا تَبْكُونَ﴾
৬০) হাসছো কিন্তু কাঁদছো না? ৫৩

﴿وَأَنتُمْ سَامِدُونَ﴾
৬১) আর গান-বাদ্য করে তা এড়িয়ে যাচ্ছো? ৫৪

﴿فَاسْجُدُوا لِلَّهِ وَاعْبُدُوا ۩﴾
৬২) আল্লাহর সামনে মাথা নত কর এবং তাঁর ইবাদাত করতে থাকো৷ ৫৫


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন