بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ حم
১) হা-মীম৷
﴿تَنزِيلُ الْكِتَابِ مِنَ اللَّهِ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ﴾
২) এ কিতাব আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত যিনি মহাপরাক্রমশালী, সবকিছু সম্পর্কে অতিশয় জ্ঞাত,
﴿غَافِرِ الذَّنبِ وَقَابِلِ التَّوْبِ شَدِيدِ الْعِقَابِ ذِي الطَّوْلِ ۖ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ إِلَيْهِ الْمَصِيرُ﴾
৩)
গোনাহ মাফকারী, তাওবা কবুলকারী, কঠোর শাস্তিদাতা এবং অত্যন্ত দয়ালু৷ তিনি
ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই৷ সবাইকে তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবে৷ ১
﴿مَا يُجَادِلُ فِي آيَاتِ اللَّهِ إِلَّا الَّذِينَ كَفَرُوا فَلَا يَغْرُرْكَ تَقَلُّبُهُمْ فِي الْبِلَادِ﴾
৪) আল্লাহ আয়াতসমূহ নিয়ে কেবল সে সবলোকই বিতর্ক ২ সৃষ্টি করে যারা কুফরী করেছে ৩ এরপরও দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে তাদের চলাফেরা যেন তোমাদেরকে প্রতারিত না করে৷৪
﴿كَذَّبَتْ
قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوحٍ وَالْأَحْزَابُ مِن بَعْدِهِمْ ۖ وَهَمَّتْ كُلُّ
أُمَّةٍ بِرَسُولِهِمْ لِيَأْخُذُوهُ ۖ وَجَادَلُوا بِالْبَاطِلِ
لِيُدْحِضُوا بِهِ الْحَقَّ فَأَخَذْتُهُمْ ۖ فَكَيْفَ كَانَ عِقَابِ﴾
৫)
এর পূর্বে নূহের (আ) কওম অস্বীকার করেছে এবং তাদের পরে আরো বহু দল ও
গোষ্ঠী এ কাজ করেছে৷ প্রত্যেক উম্মত তার রসূলকে পাকড়াও করার জন্য
সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তারা সবাই বাতিলের হাতিয়ারের সাহায্যে হককে অবদমিত করার
চেষ্টা করেছে৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি৷ দেখে নাও, কত
কঠিন ছিল আমার শাস্তি৷৫
﴿وَكَذَٰلِكَ حَقَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ عَلَى الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّهُمْ أَصْحَابُ النَّارِ﴾
৬) অনুরূপ যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য তোমার রবের এ সিদ্ধান্তও অবধারিত হয়ে গিয়েছে যে, তারা জাহান্নামের বাসিন্দা হবে৷
﴿الَّذِينَ
يَحْمِلُونَ الْعَرْشَ وَمَنْ حَوْلَهُ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ
وَيُؤْمِنُونَ بِهِ وَيَسْتَغْفِرُونَ لِلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا
وَسِعْتَ كُلَّ شَيْءٍ رَّحْمَةً وَعِلْمًا فَاغْفِرْ لِلَّذِينَ تَابُوا
وَاتَّبَعُوا سَبِيلَكَ وَقِهِمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ﴾
৭) আল্লাহর
আরশের ধারক ফেরেশতাগণ এবং যারা আরশের চারপাশে হাজির থাকে তারা সবাই
প্রশংসাসহ তাদের রবের পবিত্রতা বর্ণনা করে৷ তাঁর প্রতি ঈমান পোষণ করে এবং
ঈমানদারদের জন্য দোয়া করে৷ ৬ তারা বলেঃ হে আমাদের রব, তুমি তোমার রহমত ও জ্ঞান দ্বারা সবকিছু পরিবেষ্টন করে আছো৷ ৭ তাই মাফ করে দাও এবং দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করো ৮ যারা তাওবা করেছে এবং তোমার পথ অনুসরণ করছে ৯ তাদেরকে৷
﴿رَبَّنَا
وَأَدْخِلْهُمْ جَنَّاتِ عَدْنٍ الَّتِي وَعَدتَّهُمْ وَمَن صَلَحَ مِنْ
آبَائِهِمْ وَأَزْوَاجِهِمْ وَذُرِّيَّاتِهِمْ ۚ إِنَّكَ أَنتَ الْعَزِيزُ
الْحَكِيمُ﴾
৮) হে আমাদের রব উপরন্তু তাদেরকে তোমার প্রতিশ্রুত ১০ চিরস্থায়ী
জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দাও৷ আর তাদের বাপ মা, স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে
যারা সৎকর্মশীল (তাদেরকেও সেখানে তাদের সাথে পৌঁছিয়ে দাও)৷ ১১ তুমি নিসন্দেহে সর্বশক্তিমান ও মহাকৌশলী৷
﴿وَقِهِمُ السَّيِّئَاتِ ۚ وَمَن تَقِ السَّيِّئَاتِ يَوْمَئِذٍ فَقَدْ رَحِمْتَهُ ۚ وَذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ﴾
৯) আর তাদেরকে মন্দ কাজসমূহ থেকে রক্ষা করো৷ ১২ কিয়ামতের দিন তুমি যাকে মন্দ ও অকল্যাণসমূহ ১৩ থেকে রক্ষা করেছো তার প্রতি তুমি বড় করুণা করেছো৷ এটাই বড় সফলতা৷
﴿إِنَّ
الَّذِينَ كَفَرُوا يُنَادَوْنَ لَمَقْتُ اللَّهِ أَكْبَرُ مِن
مَّقْتِكُمْ أَنفُسَكُمْ إِذْ تُدْعَوْنَ إِلَى الْإِيمَانِ فَتَكْفُرُونَ﴾
১০)
যারা কুফরী করেছে কিয়ামতের দিন তাদের ডেকে বলা হবে, “আজ তোমরা নিজেদের ওপর
যতটা ক্রোধান্বিত হচ্ছো, আল্লাহ তোমাদের ওপর তার চেয়েও অধিক ক্রোধান্বিত
হতেন তখন যখন তোমাদেরকে ঈমানের দিকে আহ্বান জানানো হতো আর তোমরা উল্টা
কুফরী করতে৷” ১৪
﴿قَالُوا
رَبَّنَا أَمَتَّنَا اثْنَتَيْنِ وَأَحْيَيْتَنَا اثْنَتَيْنِ
فَاعْتَرَفْنَا بِذُنُوبِنَا فَهَلْ إِلَىٰ خُرُوجٍ مِّن سَبِيلٍ﴾
১১) তারা বলবেঃ হে আমাদের রব, প্রকৃতই তুমি আমাদেরকে দু’বার মৃত্যু দিয়েছো এবং দু’বার জীবন দান করেছো৷ ১৫ এখন আমরা অপরাধ স্বীকার করছি৷ ১৬ এখন এখান থেকে বের হওয়ার কোন উপায় কি আছে? ১৭
﴿ذَٰلِكُم
بِأَنَّهُ إِذَا دُعِيَ اللَّهُ وَحْدَهُ كَفَرْتُمْ ۖ وَإِن يُشْرَكْ
بِهِ تُؤْمِنُوا ۚ فَالْحُكْمُ لِلَّهِ الْعَلِيِّ الْكَبِيرِ﴾
১২)
(জবাব দেয়া হবে) এ অবস্থা যার মধ্যে তোমরা আছ, তা এ কারণে যে, যখন একমাত্র
আল্লাহর দিকে ডাকা হতো তখন তোমরা তা মানতে অস্বীকার করতে৷ কিন্তু যখন তাঁর
সাথে অন্যদেরকেও শামিল করা হতো তখন মেনে নিতে৷ এখন তো ফায়সালা মহান ও
মর্যাদাবান আল্লাহর হাতে৷ ১৮
﴿هُوَ الَّذِي يُرِيكُمْ آيَاتِهِ وَيُنَزِّلُ لَكُم مِّنَ السَّمَاءِ رِزْقًا ۚ وَمَا يَتَذَكَّرُ إِلَّا مَن يُنِيبُ﴾
১৩) তিনিই তো তোমাদের নিদর্শনসমূহ দেখান ১৯ এবং তোমাদের জন্য আসমান থেকে রিযিক নাযিল করেন ২০ (কিন্তু এসব নিদর্শন দেখে) কেবল তারাই শিক্ষা গ্রহণ করে যারা আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী ২১
﴿فَادْعُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ﴾
১৪) (সুতরাং হে প্রত্যাবর্তনকারীরা,) দীনকে আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট করে ২২ তাঁকে ডাকো, তোমাদের এ কাজ কাফেরদের কাছে যতই অসহনীয় হোক না কেন৷
﴿رَفِيعُ
الدَّرَجَاتِ ذُو الْعَرْشِ يُلْقِي الرُّوحَ مِنْ أَمْرِهِ عَلَىٰ مَن
يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ لِيُنذِرَ يَوْمَ التَّلَاقِ﴾
১৫) তিনি উচ্চ মর্যাদার অধিকারী, ২৩ আরশের অধিপতি৷ ২৪ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যার কাছে ইচ্ছা নিজের হুকুমে ‘রূহ’ নাযিল করেন ২৫ যাতে সে সাক্ষাতের দিন ২৬ সম্পর্কে সাবধান করে দেয়৷
﴿يَوْمَ
هُم بَارِزُونَ ۖ لَا يَخْفَىٰ عَلَى اللَّهِ مِنْهُمْ شَيْءٌ ۚ لِّمَنِ
الْمُلْكُ الْيَوْمَ ۖ لِلَّهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ﴾
১৬) সেটি এমন
দিন যখন সব মানুষের সবকিছু প্রকাশ হয়ে পড়বে৷ আল্লাহ কাছে তাদের কোন কথাই
গোপন থাকবে না৷ (সেদিন ঘোষণা দিয়ে জিজ্ঞেস করা হবে)৷ আজ রাজত্ব কার? ২৭ (সমস্ত সৃষ্টি বলে উঠবে) একমাত্র আল্লাহর যিনি কাহ্হার৷
﴿الْيَوْمَ تُجْزَىٰ كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ ۚ لَا ظُلْمَ الْيَوْمَ ۚ إِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ﴾
১৭) (বলা হবে,) আজ প্রত্যেক প্রানীকে তার কৃতকর্মের প্রতিদান দেয়া হবে৷ আজ কারো প্রতি কোন জুলুম হবে না৷ ২৮ আল্লাহ অতি দ্রুত হিসেব গ্রহণকারী৷ ২৯ হে নবী,
﴿وَأَنذِرْهُمْ
يَوْمَ الْآزِفَةِ إِذِ الْقُلُوبُ لَدَى الْحَنَاجِرِ كَاظِمِينَ ۚ مَا
لِلظَّالِمِينَ مِنْ حَمِيمٍ وَلَا شَفِيعٍ يُطَاعُ﴾
১৮) এসব লোকদের সেদিন সম্পর্কে সাবধান করে দাও যা সন্নিকটবর্তী হয়েছে৷ ৩০ যেদিন
কলিজা মুখের মধ্যে এসে যাবে আর সব মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত ও দুঃখ ভারাক্রান্ত
মনে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকবে৷ জালেমদের জন্য না থাকবে কোন অন্তরঙ্গ বন্ধু, ৩১ না থাকবে কোন গ্রহণযোগ্য শাফায়াতকারী৷ ৩২
﴿يَعْلَمُ خَائِنَةَ الْأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُورُ﴾
১৯) আল্লাহ চোখের চুরি ও মনের গোপন কথা পর্যন্ত জানেন৷
﴿وَاللَّهُ
يَقْضِي بِالْحَقِّ ۖ وَالَّذِينَ يَدْعُونَ مِن دُونِهِ لَا يَقْضُونَ
بِشَيْءٍ ۗ إِنَّ اللَّهَ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ﴾
২০) আল্লাহ
সঠিক ও ন্যায় ভিত্তিক ফায়সালা করবেন৷ আর (এ মুশরিকরা) আল্লাহকে বাদ দিয়ে
যাদেকে ডাকে৷ তারা কোন কিছুরই ফায়সালাকারী নয়৷ নিসন্দেহে আল্লাহই সবকিছু
শোনেন ও দেখেন৷৩৩
﴿أَوَلَمْ
يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ
كَانُوا مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَانُوا هُمْ أَشَدَّ مِنْهُمْ قُوَّةً وَآثَارًا
فِي الْأَرْضِ فَأَخَذَهُمُ اللَّهُ بِذُنُوبِهِمْ وَمَا كَانَ لَهُم
مِّنَ اللَّهِ مِن وَاقٍ﴾
২১) এসব লোক কি কখনো পৃথিবীর বুকে ভ্রমণ
করেনি তাহলে ইতিপূর্বে যারা অতীত হয়েছে তাদের পরিণাম দেখতে পেতো? তারা এদের
চেয়ে বেশী শক্তিশালী ছিল এবং এদের চেয়েও বেশী শক্তিশালী স্মৃতিচিহ্ন
পৃথিবীর বুকে রেখে গিয়েছে৷ কিন্তু গোনাহর কারণে আল্লাহ তাদেরকে পাকড়াও
করেছেন৷ আল্লাহর হাত থেকে তাদের রক্ষাকারী কাউকে পাওয়া যায়নি৷
﴿ذَٰلِكَ
بِأَنَّهُمْ كَانَت تَّأْتِيهِمْ رُسُلُهُم بِالْبَيِّنَاتِ فَكَفَرُوا
فَأَخَذَهُمُ اللَّهُ ۚ إِنَّهُ قَوِيٌّ شَدِيدُ الْعِقَابِ﴾
২২) তাদের এহেন পরিণতির কারণ হলো তাদের কাছে তাদের রসূল স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ ৩৪ নিয়ে
এসেছিলো আর তারা তা মানতে অস্বীকার করেছিলো৷ অবশেষে আল্লাহ তাদের পাকড়াও
করলেন৷ নিসন্দেহে তিনি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং কঠোর শাস্তিদাতা৷
﴿وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَىٰ بِآيَاتِنَا وَسُلْطَانٍ مُّبِينٍ﴾
২৩) আমি মূসাকে ৩৫ ফেরাউন, হামান ৩৬ ও কারূণের কাছে আমার নিদর্শনসমূহ এবং
﴿إِلَىٰ فِرْعَوْنَ وَهَامَانَ وَقَارُونَ فَقَالُوا سَاحِرٌ كَذَّابٌ﴾
২৪) আমার পক্ষ থেকে আদিষ্ট হওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ ৩৭ সহ পাঠিয়ছিলাম৷ কিন্তু তারা বললোঃ জাদুকর, মিথ্যাবাদী৷
﴿فَلَمَّا
جَاءَهُم بِالْحَقِّ مِنْ عِندِنَا قَالُوا اقْتُلُوا أَبْنَاءَ الَّذِينَ
آمَنُوا مَعَهُ وَاسْتَحْيُوا نِسَاءَهُمْ ۚ وَمَا كَيْدُ الْكَافِرِينَ
إِلَّا فِي ضَلَالٍ﴾
২৫) অতপর যখন সে আমার পক্ষ থেকে সত্য এসে হাজির করলো ৩৮ তখন তারা বললো, যারা ঈমান এনে তার সাথে সামিল হয়েছে তাদের ছেলেদের হত্যা করো এবং মেয়েদের জীবিত রাখো৷ ৩৯ কিন্তু কাফেরদের চক্রান্ত ব্যর্থই হয়ে গেল৷ ৪০
﴿وَقَالَ
فِرْعَوْنُ ذَرُونِي أَقْتُلْ مُوسَىٰ وَلْيَدْعُ رَبَّهُ ۖ إِنِّي
أَخَافُ أَن يُبَدِّلَ دِينَكُمْ أَوْ أَن يُظْهِرَ فِي الْأَرْضِ
الْفَسَادَ﴾
২৬) একদিন ৪১ ফেরাউন তার সভাসদদের বললোঃ আমাকে ছাড়ো, আমি এ মূসাকে হতা করবো৷ ৪২ সে তার রবকে ডকে দেখুক৷ আমার আশংকা হয়, সে তোমাদের দীনকে পাল্টে দেবে কিংবা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে৷”৪৩
﴿وَقَالَ مُوسَىٰ إِنِّي عُذْتُ بِرَبِّي وَرَبِّكُم مِّن كُلِّ مُتَكَبِّرٍ لَّا يُؤْمِنُ بِيَوْمِ الْحِسَابِ﴾
২৭)
মূসা বললো, যেসব অহংকারী হিসেবের দিনের প্রতি ঈমান পোষণ করে না, তাদের
প্রত্যেকের মোকাবিলায় আমি আমার ও তোমাদের রবের আশ্রয় গ্রহণ করেছি৷৪৪
﴿وَقَالَ
رَجُلٌ مُّؤْمِنٌ مِّنْ آلِ فِرْعَوْنَ يَكْتُمُ إِيمَانَهُ أَتَقْتُلُونَ
رَجُلًا أَن يَقُولَ رَبِّيَ اللَّهُ وَقَدْ جَاءَكُم بِالْبَيِّنَاتِ مِن
رَّبِّكُمْ ۖ وَإِن يَكُ كَاذِبًا فَعَلَيْهِ كَذِبُهُ ۖ وَإِن يَكُ
صَادِقًا يُصِبْكُم بَعْضُ الَّذِي يَعِدُكُمْ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي
مَنْ هُوَ مُسْرِفٌ كَذَّابٌ﴾
২৮) এ সময় ফেরাউনের দরবারের এক ব্যক্তি
যে তার ঈমান গোপন রেখেছিলো- বললোঃ তোমরা কি এক ব্যক্তিকে শুধু এ কারণে
হত্যা করবে যে, সে বলে, আল্লাহ আমার রব? অথচ সে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে
তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এসেছে৷ ৪৫ সে মিথাবাদী হয়ে থাকলে তার মিথ্যার দায়-দায়িত্ব তারই৷ ৪৬ কিন্তু
সে যদি সত্যবাদী হয়ে থাকে তাহলে যেসব ভয়ানক পরিণামের কথা সে বলছে তার
কিছুটা তো অবশ্যই তোমাদের ওপর আসবে৷ আল্লাহ কোন সীমালংঘনকারী মিথ্যাবাদী
লোককে হিদায়াত দান করেন না৷৪৭
﴿يَا
قَوْمِ لَكُمُ الْمُلْكُ الْيَوْمَ ظَاهِرِينَ فِي الْأَرْضِ فَمَن
يَنصُرُنَا مِن بَأْسِ اللَّهِ إِن جَاءَنَا ۚ قَالَ فِرْعَوْنُ مَا
أُرِيكُمْ إِلَّا مَا أَرَىٰ وَمَا أَهْدِيكُمْ إِلَّا سَبِيلَ الرَّشَادِ﴾
২৯)
হে আমার কওমের লোকেরা, আজ তোমরা বাদশাহীর অধিকারী এবং ভূ-ভাগের বিজয়ী
শক্তি৷ কিন্তু আল্লাহর আযাব যদি আমাদের ওপর এসে পড়ে তাহলে আমাদেরকে সাহায্য
করার মত কে আছে ?৪৮ ফেরাউন বললো, আমি যা ভাল মনে করছি সে মতামতই তোমাদের সামনে পেশ করছি৷ আর আমি তোমাদেরকে সঠিক পথের নির্দেশনাই দিচ্ছি৷৪৯
﴿وَقَالَ الَّذِي آمَنَ يَا قَوْمِ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُم مِّثْلَ يَوْمِ الْأَحْزَابِ﴾
৩০)
যে ব্যক্তি ঈমান এনেছিলো, বললোঃ হে আমার কওমের লোকেরা, আমার আশংকা হচ্ছে,
তোমাদের ওপরও সেদিনের মত দিন এসে না যায়, যা এর আগে বহু দলের ওপর এসেছিলো৷
﴿مِثْلَ دَأْبِ قَوْمِ نُوحٍ وَعَادٍ وَثَمُودَ وَالَّذِينَ مِن بَعْدِهِمْ ۚ وَمَا اللَّهُ يُرِيدُ ظُلْمًا لِّلْعِبَادِ﴾
৩১)
যেমন দিন এসেছিলো নূহ (আ), আদ, সামূদ এবং তাদের পরবর্তী কওমসমূহের ওপর৷
আর এটা সত্য যে, আল্লাহ তার বান্দাদের ওপর জুলুম করার কোন ইচ্ছা রাখেন না৷ ৫০
﴿وَيَا قَوْمِ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ يَوْمَ التَّنَادِ﴾
৩২) হে কওম, আমার ভয় হয়, তোমাদের ওপর ফরিয়াদ ও অনুশোচনা করার দিন না এসে পড়ে,
﴿يَوْمَ تُوَلُّونَ مُدْبِرِينَ مَا لَكُم مِّنَ اللَّهِ مِنْ عَاصِمٍ ۗ وَمَن يُضْلِلِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِنْ هَادٍ﴾
৩৩)
যখন তোমরা একে অপরকে ডাকতে থাকবে এবং দৌড়িয়ে পালাতে থাকবে৷ কিন্তু
সেখানে আল্লাহর হাত থেকে বাঁচানোর কেউ থাকবে না৷ সত্য কথা হচ্ছে এই যে,
আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করে দেন তাকে কেউ পথ দেখাতে পারে না৷
﴿وَلَقَدْ
جَاءَكُمْ يُوسُفُ مِن قَبْلُ بِالْبَيِّنَاتِ فَمَا زِلْتُمْ فِي شَكٍّ
مِّمَّا جَاءَكُم بِهِ ۖ حَتَّىٰ إِذَا هَلَكَ قُلْتُمْ لَن يَبْعَثَ
اللَّهُ مِن بَعْدِهِ رَسُولًا ۚ كَذَٰلِكَ يُضِلُّ اللَّهُ مَنْ هُوَ
مُسْرِفٌ مُّرْتَابٌ﴾
৩৪) এর আগে ইউসুফ তোমাদের কাছে স্পষ্ট
নিদর্শনসূমহ নিয়ে এসেছিলো৷ কিন্তু তোমরা তার আনীত শিক্ষার ব্যাপারে সন্দেহই
পোষণ করেছো৷ পরে তার ইন্তিকাল হলে তোমরা বললেঃ এখন আর আল্লাহ কোন রসূল
পাঠাবেন না৷ ৫১৫১ এভাবে ৫২ আল্লাহ তা’আলা সেসব লোকদের গোমরাহীর মধ্যে নিক্ষেপ করেন যারা সীমালংঘনকারী ও সন্দেহ প্রবণ হয়৷
﴿الَّذِينَ
يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ بِغَيْرِ سُلْطَانٍ أَتَاهُمْ ۖ كَبُرَ
مَقْتًا عِندَ اللَّهِ وَعِندَ الَّذِينَ آمَنُوا ۚ كَذَٰلِكَ يَطْبَعُ
اللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ قَلْبِ مُتَكَبِّرٍ جَبَّارٍ﴾
৩৫) এবং আল্লাহ আয়াতসমূহের ব্যাপারে ঝগড়া করে৷ অথছ এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোন সনদ বা প্রমাণ আসেনি৷ ৫৩ আল্লাহ ও ঈমানদারদের কাছে এ আচরণ অত্যন্ত ক্রোধ উদ্রেককারী৷ এভাবে আল্লাহ প্রত্যেক অহংকারী ও স্বেচ্ছাচারীর মনে মোহর লাগিয়ে দেন৷ ৫৪
﴿وَقَالَ فِرْعَوْنُ يَا هَامَانُ ابْنِ لِي صَرْحًا لَّعَلِّي أَبْلُغُ الْأَسْبَابَ﴾
৩৬) ফেরাউন বললোঃ “ হে হামান, আমার জন্য একটি সুউচ্চ ইমরাত নির্মাণ করো যাতে আমি রাস্তাসমূহ পর্যন্ত পৌঁছতে পারি৷
﴿أَسْبَابَ
السَّمَاوَاتِ فَأَطَّلِعَ إِلَىٰ إِلَٰهِ مُوسَىٰ وَإِنِّي لَأَظُنُّهُ
كَاذِبًا ۚ وَكَذَٰلِكَ زُيِّنَ لِفِرْعَوْنَ سُوءُ عَمَلِهِ وَصُدَّ عَنِ
السَّبِيلِ ۚ وَمَا كَيْدُ فِرْعَوْنَ إِلَّا فِي تَبَابٍ﴾
৩৭) অর্থাৎ আসমানের রাস্তা এবং মূসার ইলাহকে উকি দিয়ে দেখতে পারি৷ মূসাকে মিথাবাদী বলেই আমার মনে হয়৷”৫৫ এভাবে
ফেরাউনের জন্য তার কুকর্মসমূহ সুদৃশ্য বানিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তার সোজা পথে
চলা থামিয়ে দেয়া হয়েছে৷ ফেরাউনের সমস্ত চক্রান্ত (তার নিজের) ধ্বংসের পথেই
ব্যয়িত হয়েছে৷
﴿وَقَالَ الَّذِي آمَنَ يَا قَوْمِ اتَّبِعُونِ أَهْدِكُمْ سَبِيلَ الرَّشَادِ﴾
৩৮) যে ব্যক্তি ঈমান এনেছিলো, বললোঃ হে আমার কওমের লোকেরা, আমার কথা মেনে নাও৷ আমি তোমাদেরকে সঠিক পথের সন্ধান দিচ্ছি৷
﴿يَا قَوْمِ إِنَّمَا هَٰذِهِ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا مَتَاعٌ وَإِنَّ الْآخِرَةَ هِيَ دَارُ الْقَرَارِ﴾
৩৯) হে কওম, দুনিয়ার এ জীবন তো কয়েক দিনের জন্য৷ ৫৬ একমাত্র আখেরাতই চিরদিনের অবস্থানস্থল৷
﴿مَنْ
عَمِلَ سَيِّئَةً فَلَا يُجْزَىٰ إِلَّا مِثْلَهَا ۖ وَمَنْ عَمِلَ
صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَٰئِكَ
يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ يُرْزَقُونَ فِيهَا بِغَيْرِ حِسَابٍ﴾
৪০) যে
মন্দ কাজ করবে সে যতটুকু মন্দ করবে ততটুকুরই প্রতিফল লাভ করবে৷ আর নারী
হোক বা পুরুষ যে নেক কাজ করবে সে যদি ঈমানদার হয় তাহলে তারা সবাই জান্নাতে
প্রবেশ করবে৷ সেখানে তাদেরকে বেহিসেব রিযিক দেয়া হবে৷
﴿وَيَا قَوْمِ مَا لِي أَدْعُوكُمْ إِلَى النَّجَاةِ وَتَدْعُونَنِي إِلَى النَّارِ﴾
৪১) হে কওম, কি ব্যাপার যে, আমি তোমাদেরকে মুক্তির দিকে আহ্বান জানাচ্ছি আর তোমরা আমাকে আগুনের দিকে আহ্বান জানাচ্ছো৷
﴿تَدْعُونَنِي لِأَكْفُرَ بِاللَّهِ وَأُشْرِكَ بِهِ مَا لَيْسَ لِي بِهِ عِلْمٌ وَأَنَا أَدْعُوكُمْ إِلَى الْعَزِيزِ الْغَفَّارِ﴾
৪২) তোমরা আমাকে আহ্বান জানাচ্ছো যেন আমি আল্লাহর সাথে কুফরী করি এবং সেসব সত্তাকে তাঁর সাথে শরীক করি যাদের আমি জানি না৷ ৫৭ অথচ আমি তোমাদের সে মহাপরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীল আল্লাহর দিকে আহ্বান জানাচ্ছি৷
﴿لَا
جَرَمَ أَنَّمَا تَدْعُونَنِي إِلَيْهِ لَيْسَ لَهُ دَعْوَةٌ فِي
الدُّنْيَا وَلَا فِي الْآخِرَةِ وَأَنَّ مَرَدَّنَا إِلَى اللَّهِ وَأَنَّ
الْمُسْرِفِينَ هُمْ أَصْحَابُ النَّارِ﴾
৪৩) না, সত্য হচ্ছে এই যে, তোমরা যেসব জিনিসের দিকে আমাকে ডাকছো, তাতে না আছে দুনিয়াতে কোন আবেদন না আছে আখেরাতে কোন আহ্বান৷ ৫৮ আমাদেরকে আল্লাহর দিকেই ফিরে যেতে হবে৷ আর সীমালংঘনকারী ৫৯ আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে৷ এর ব্যতিক্রম হতে পারে না৷
﴿فَسَتَذْكُرُونَ مَا أَقُولُ لَكُمْ ۚ وَأُفَوِّضُ أَمْرِي إِلَى اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ بَصِيرٌ بِالْعِبَادِ﴾
৪৪)
আর তোমাদেরকে আমি যা বলছি অচিরেই এমন সময় আসবে যখন তোমরা তা স্মরণ করবে৷
আমি আমার ব্যাপারটা আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিচ্ছি৷ তিনি তাঁর বান্দাদের রক্ষক৷৬০
﴿فَوَقَاهُ اللَّهُ سَيِّئَاتِ مَا مَكَرُوا ۖ وَحَاقَ بِآلِ فِرْعَوْنَ سُوءُ الْعَذَابِ﴾
৪৫) শেষ পর্যন্ত তারা ঐ ঈমানদারের বিরুদ্ধে যেসব জঘন্য চক্রান্ত করেছে আল্লাহ তা’আলা তাকে তা থেকে রক্ষা করেছেন৷৬১ আর ফেরাউনের সাংগপাংগরাই জঘন্য আযাবের চক্রে পড়ে গিয়েছে৷৬২
﴿النَّارُ يُعْرَضُونَ عَلَيْهَا غُدُوًّا وَعَشِيًّا ۖ وَيَوْمَ تَقُومُ السَّاعَةُ أَدْخِلُوا آلَ فِرْعَوْنَ أَشَدَّ الْعَذَابِ﴾
৪৬)
দোযখের আগুন, যে আগুনের সামনে তাদেরকে সকাল-সন্ধ্যায় পেশ করা হয়৷ কিয়ামত
সংঘটিত হলে নিদের্শ দেয়া হবে, ফেরাউনের অনুসারীদের কঠিন আযাবে নিক্ষেপ করো৷৬৩
﴿وَإِذْ
يَتَحَاجُّونَ فِي النَّارِ فَيَقُولُ الضُّعَفَاءُ لِلَّذِينَ
اسْتَكْبَرُوا إِنَّا كُنَّا لَكُمْ تَبَعًا فَهَلْ أَنتُم مُّغْنُونَ
عَنَّا نَصِيبًا مِّنَ النَّارِ﴾
৪৭) তারপর একটু চিন্তা করে দেখো সে
সময়ের কথা যখন এসব লোক দোযখের মধ্যে পরস্পর ঝগড়ায় লিপ্ত হবে৷ যারা দুনিয়ায়
দুর্বল ছিল তারা সেসব লোকদের বলবে যারা নিজেদের বড় মনে করতো, “আমরা তো
তোমাদের অনুসারী ছিলাম৷ এখন এখানে কি তোমরা আমাদেরকে জাহান্নামের কষ্টের
কিছু অংশ থেকে আমাদেরকে রক্ষা করবে ?”৬৪
﴿قَالَ الَّذِينَ اسْتَكْبَرُوا إِنَّا كُلٌّ فِيهَا إِنَّ اللَّهَ قَدْ حَكَمَ بَيْنَ الْعِبَادِ﴾
৪৮) বড়ত্বের দাবীদাররা বলবেঃ আমরা সবাই এখানে একই অবস্থায় আছি৷ আর আল্লাহ তার বান্দাদের ব্যাপারে ফায়সালা করে দিয়েছেন৷৬৫
﴿وَقَالَ الَّذِينَ فِي النَّارِ لِخَزَنَةِ جَهَنَّمَ ادْعُوا رَبَّكُمْ يُخَفِّفْ عَنَّا يَوْمًا مِّنَ الْعَذَابِ﴾
৪৯)
দোযখে নিক্ষিপ্ত এসব লোক জাহান্নামের কর্মকর্তাদের বলবেঃ “তোমাদের রবের
কাছে দোয়া করো তিনি যেন একদিনের জন্য আমাদের আযাব হ্রাস করেন৷”
﴿قَالُوا
أَوَلَمْ تَكُ تَأْتِيكُمْ رُسُلُكُم بِالْبَيِّنَاتِ ۖ قَالُوا بَلَىٰ ۚ
قَالُوا فَادْعُوا ۗ وَمَا دُعَاءُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ﴾
৫০)
তারা বলবে, “তোমাদের রসূলগণ কি তোমাদের কাছে স্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে
আসেননি ?” “তারা বলবে হ্যাঁ৷” জাহান্নামের কর্মকর্তারা বলবেঃ “তাহলে তোমরাই
দোয়া করো৷ তবে কাফেরদের দোয়া ব্যর্থই হয়ে থাকে৷”৬৬
﴿إِنَّا لَنَنصُرُ رُسُلَنَا وَالَّذِينَ آمَنُوا فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ يَقُومُ الْأَشْهَادُ﴾
৫১) নিশ্চিত জানো, আমি এ পার্থিব জীবনে আমার রসূল ও ঈমানদারদের অবশ্যই সাহায্য করি৬৭ এবং যেদিন সাক্ষীদের পেশ করা হবে৬৮ সেদিনও করবো৷
﴿يَوْمَ لَا يَنفَعُ الظَّالِمِينَ مَعْذِرَتُهُمْ ۖ وَلَهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوءُ الدَّارِ﴾
৫২) যেদিন ওজর ও যুক্তি পেশ জালেমদের কোন উপকারে আসবে না, তাদের ওপর লা’নত পড়বে এবং তাদের জন্য হবে জঘন্যতম ঠিকানা৷
﴿وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْهُدَىٰ وَأَوْرَثْنَا بَنِي إِسْرَائِيلَ الْكِتَابَ﴾
৫৩) অবশেষে দেখো, আমি মূসাকে পথনির্দেশনা দিয়েছিলাম৬৯ এবং বনী ইসরাঈলদের এমন এক কিতাবের উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিয়েছি৷
﴿هُدًى وَذِكْرَىٰ لِأُولِي الْأَلْبَابِ﴾
৫৪) যা ছিল বুদ্ধিমান ও জ্ঞানীদের জন্য হিদায়াত ও নসিহত৷৭০
﴿فَاصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنبِكَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ﴾
৫৫) অতএব, হে নবী, ধৈর্যধারণ করো৷৭১ আল্লাহর ওয়াদা সত্য,৭২ নিজের ভূল-ত্রুটির জন্য মাফ চাও৭৩
﴿إِنَّ
الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ بِغَيْرِ سُلْطَانٍ أَتَاهُمْ ۙ
إِن فِي صُدُورِهِمْ إِلَّا كِبْرٌ مَّا هُم بِبَالِغِيهِ ۚ فَاسْتَعِذْ
بِاللَّهِ ۖ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ﴾
৫৬) এবং সকাল সন্ধ্যা নিজের রবের প্রশংসার সাথে সাথে তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করতে থাকো৷৭৪ প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে, যারা তাদের কাছে আসা যুক্তি-প্রমাণ ছাড়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের ব্যাপারে ঝগড়া করছে তাদের মন অহংকারে ভরা৭৫ কিন্তু তারা যে বড়ত্বের অহংকার করে তারা তার ধারেও ঘেঁষতে পারবে না৷৭৬ তাই আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করো৭৭ তিনি সবকিছু দেখেন এবং শোনেন৷
﴿لَخَلْقُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ أَكْبَرُ مِنْ خَلْقِ النَّاسِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ﴾
৫৭) মানুষ৭৮ সৃষ্টি করার চেয়ে আসমান ও যমীন সৃষ্টি করা নিসন্দেহে অনেক বড় কাজ৷ কিন্তু অধিকাংশ মানুষই জানে না৷৭৯
﴿وَمَا
يَسْتَوِي الْأَعْمَىٰ وَالْبَصِيرُ وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا
الصَّالِحَاتِ وَلَا الْمُسِيءُ ۚ قَلِيلًا مَّا تَتَذَكَّرُونَ﴾
৫৮) অন্ধ ও দৃষ্টিশক্তির অধিকারী এক রকম হতে পারে না এবং ঈমানদার ও সৎকর্মশীল সমান হতে পারে না৷ কিন্তু তোমরা কমই বুঝতে পারো৷৮০
﴿إِنَّ السَّاعَةَ لَآتِيَةٌ لَّا رَيْبَ فِيهَا وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يُؤْمِنُونَ﴾
৫৯) কিয়ামত নিশ্চয়ই আসবে, এতে কোন সন্দেহ নেই৷ কিন্তু অধিকাংশ লোক তা বিশ্বাস করে না৷৮১
﴿وَقَالَ
رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ ۚ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ
عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ﴾
৬০) তোমাদের৮২ রব বলেনঃ আমাকে ডাকো৷ আমি তোমাদের দোয়া কবুল করবো৷৮৩ যেসব মানুষ গর্বের কারণে আমার দাসত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তারা অচিরেই লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে৷৮৪
﴿اللَّهُ
الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ لِتَسْكُنُوا فِيهِ وَالنَّهَارَ
مُبْصِرًا ۚ إِنَّ اللَّهَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ وَلَٰكِنَّ
أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَشْكُرُونَ﴾
৬১) আল্লাহই তো সেই মহান সত্তা
যিনি তোমাদের জন্য রাত সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা রাতের বেলা আরাম করতে
পারো৷ আর দিনকে আলোকিত করেছেন৷ সত্য এই যে, আল্লাহ মানুষের প্রতি
অনুকম্পাশীল৷ তবে অধিকাংশ লোক শুকরিয়া আদায় করে না৷৮৫
﴿ذَٰلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ لَّا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ فَأَنَّىٰ تُؤْفَكُونَ﴾
৬২) সে আল্লাহই (যিনি তোমাদের জন্য এসব করেছেন) তোমাদের রব, সবকিছুর স্রষ্টা, তিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই৷৮৬ তোমাদেরকে কোন্ দিকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে ?৮৭
﴿كَذَٰلِكَ يُؤْفَكُ الَّذِينَ كَانُوا بِآيَاتِ اللَّهِ يَجْحَدُونَ﴾
৬৩) এভাবেই সেসব লোককে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে যারা আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করতো৷৮৮
﴿اللَّهُ
الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ قَرَارًا وَالسَّمَاءَ بِنَاءً
وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْ وَرَزَقَكُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ ۚ
ذَٰلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ ۖ فَتَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ﴾
৬৪) আল্লাহই তো সেই সত্তা যিনি পৃথিবীকে অবস্থানস্থল বানিয়েছেন৮৯ এবং ওপরে আসমানকে গম্বুজ বানিয়ে দিয়েছেন৷৯০ যিনি তোমাদের আকৃতি নির্মাণ করেছেন এবং অতি উত্তম আকৃতি নির্মাণ করেছেন৷ যিনি তোমাদেরকে পবিত্র জিনিসের রিযিক দিয়েছেন৷৯১ সে আল্লাহই (এগুলো যার কাজ) তোমাদের রব৷ অপরিসীম কল্যাণের অধিকারী তিনি৷ বিশ্ব-জাহানের রব তিনি৷
﴿هُوَ الْحَيُّ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ فَادْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ ۗ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾
৬৫) তিনি চিরঞ্জীব৷৯২ তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই৷ তোমাদের দীন তাঁর জন্য নিবেদিত করে তাঁকেই ডাকো৷৯৩ গোটা সৃষ্টি জগতের রব আল্লাহর জন্যই সব প্রশংসা৷৯৪
﴿قُلْ
إِنِّي نُهِيتُ أَنْ أَعْبُدَ الَّذِينَ تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ
لَمَّا جَاءَنِيَ الْبَيِّنَاتُ مِن رَّبِّي وَأُمِرْتُ أَنْ أُسْلِمَ
لِرَبِّ الْعَالَمِينَ﴾
৬৬) হে নবী, এসব লোককে বলে দাও, আল্লাহকে বাদ দিয়ে তোমরা যাদেরকে ডাকো আমাকে সেসব সত্তার দাসত্ব করতে নিষেধ করা হয়েছে৷৯৫ (আমি
কি করে এ কাজ করতে পারি) আমার কাছে আমার রবের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট
নির্দেশাবলী এসেছে৷ আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, আমি যেন গোটা বিশ্ব-জাহানের
রবের সামনে আনুগত্যের মস্তক অবনত করি৷
﴿هُوَ
الَّذِي خَلَقَكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ
ثُمَّ يُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوا أَشُدَّكُمْ ثُمَّ
لِتَكُونُوا شُيُوخًا ۚ وَمِنكُم مَّن يُتَوَفَّىٰ مِن قَبْلُ ۖ
وَلِتَبْلُغُوا أَجَلًا مُّسَمًّى وَلَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ﴾
৬৭)
তিনিই তো সে সত্তা যিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন৷ তারপর শুত্রু
থেকে৷ তারপর রক্তের পিণ্ড থেকে৷ অতপর তিনি তোমাদেরকে শিশুর আকৃতিতে বের করে
আনেন৷ এরপর তিনি তোমাদেরকে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত করেন যাতে তোমরা নিজেদের পূর্ণ
শক্তিতে উপনীত হতে পারো৷ তারপর আরো বৃদ্ধিপ্রাপ্ত করেন যাতে তোমরা
বৃদ্ধাবস্থায় উপনীত হও৷ তোমাদের কাউকে আগেই ফিরিয়ে নেয়া হয়৷৯৬ এসব কাজ করা হয় এ জন্য যাতে তোমরা তোমাদের নির্ধারিত সময়ের সীমায় পৌঁছতে পারো৯৭ এবং যাতে প্রকৃত সত্য উপলব্ধি করতে পারো৷৯৮
﴿هُوَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ ۖ فَإِذَا قَضَىٰ أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُن فَيَكُونُ﴾
৬৮)
তিনিই প্রাণ সঞ্চারকারী এবং তিনিই মৃত্যুদানকারী৷ তিনি কোন সিদ্ধান্ত
গ্রহণ করলে শুধু একটি নির্দেশ দেন যে, তাহয়ে যাক, আর তখনি তা হয়ে যায়৷
﴿أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يُجَادِلُونَ فِي آيَاتِ اللَّهِ أَنَّىٰ يُصْرَفُونَ﴾
৬৯) তুমি কি সেসব লোকদের দেখনি যারা আল্লাহর বিধানাবলী নিয়ে ঝগড়া করে, তাদেরকে কোথা থেকে ফিরানো হচ্ছে ?৯৯
﴿الَّذِينَ كَذَّبُوا بِالْكِتَابِ وَبِمَا أَرْسَلْنَا بِهِ رُسُلَنَا ۖ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ﴾
৭০) যারা এ কিতাবকে অস্বীকার করে এবং আমি আমার রসূলদের যা দিয়ে পাঠিয়েছিলাম১০০ তাও অস্বীকার করে ? এসব লোক অচিরেই জানতে পারবে
﴿إِذِ الْأَغْلَالُ فِي أَعْنَاقِهِمْ وَالسَّلَاسِلُ يُسْحَبُونَ﴾
৭১) যখন তাদের গলায় থাকবে গ্রীবা বন্ধনী ও শৃঙ্খল,
﴿فِي الْحَمِيمِ ثُمَّ فِي النَّارِ يُسْجَرُونَ﴾
৭২) এসব ধরে টানতে টানতে তাদেরকে ফুটন্ত পানির দিকে নিয়ে যাওয়া হবে এবং দোযখের আগুনে নিক্ষেপ করা হবে৷১০১
﴿ثُمَّ قِيلَ لَهُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ تُشْرِكُونَ﴾
৭৩) অতপর তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে ; এখন তোমাদের সেসব ইলাহ কোথায় যাদেরকে তোমরা শরীক করতে৷১০২
﴿مِن
دُونِ اللَّهِ ۖ قَالُوا ضَلُّوا عَنَّا بَل لَّمْ نَكُن نَّدْعُو مِن
قَبْلُ شَيْئًا ۚ كَذَٰلِكَ يُضِلُّ اللَّهُ الْكَافِرِينَ﴾
৭৪) তারা জবাব দেবে, তারা আমাদের থেকে হারিয়ে গেছে৷ এর আগে আমরা যাদেরকে ডাকতাম তারা কিছুই না৷১০৩ আল্লাহ এভাবে কাফেরদের ভ্রষ্টতাকে কার্যকর করে দেবেন৷
﴿ذَٰلِكُم بِمَا كُنتُمْ تَفْرَحُونَ فِي الْأَرْضِ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَبِمَا كُنتُمْ تَمْرَحُونَ﴾
৭৫) তাদের বলা হবে, তোমাদের এ পরিণতির কারণ হচ্ছে, তোমরা পৃথিবীতে অসত্য নিয়ে মেতে ছিলে এবং সে জন্য গর্ব প্রকাশ করতে৷১০৪
﴿ادْخُلُوا أَبْوَابَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا ۖ فَبِئْسَ مَثْوَى الْمُتَكَبِّرِينَ﴾
৭৬) এখন অগ্রসর হয়ে জাহান্নামের দরজায় প্রবেশ করো৷ তোমাদেরকে চিরদিন সেখানেই থাকতে হবে৷ অহংকারীদের জন্য তা অতীব জঘন্য জায়গা৷
﴿فَاصْبِرْ
إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ ۚ فَإِمَّا نُرِيَنَّكَ بَعْضَ الَّذِي
نَعِدُهُمْ أَوْ نَتَوَفَّيَنَّكَ فَإِلَيْنَا يُرْجَعُونَ﴾
৭৭) হে নবী, ধৈর্য্য অবলম্বন করো৷১০৫ আল্লাহর
ওয়াদা সত্য৷ আমি তাদেরকে যে মন্দ পরিণতির ভয় দেখাচ্ছি এখন তোমার সামনেই
এদেরকে তার কোন অংশ দেখিয়ে দেই কিংবা (তার আগেই) তোমাকে পৃথিবী থেকে উঠিয়ে
নেই, সর্বাবস্থায় এদেরকে আমার কাছে ফিরে আসতে হবে৷১০৬
﴿وَلَقَدْ
أَرْسَلْنَا رُسُلًا مِّن قَبْلِكَ مِنْهُم مَّن قَصَصْنَا عَلَيْكَ
وَمِنْهُم مَّن لَّمْ نَقْصُصْ عَلَيْكَ ۗ وَمَا كَانَ لِرَسُولٍ أَن
يَأْتِيَ بِآيَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ فَإِذَا جَاءَ أَمْرُ اللَّهِ
قُضِيَ بِالْحَقِّ وَخَسِرَ هُنَالِكَ الْمُبْطِلُونَ﴾
৭৮) হে নবী,১০৭ তোমার
আগে আমি বহু রসূল পাঠিয়েছিলাম৷ আমি তাদের অনেকের কাহিনী তোমাকে বলেছি আবার
অনেকের কাহিনী তোমাকে বলিনি৷ আল্লাহর হুকুম ছাড়া কোন নিদর্শন দেখানোর
ক্ষমতা কোন রসূলেরই ছিল না৷১০৮ অতপর যখন আল্লাহর হুকুম এসেছে তখন ন্যায়সংগতভাবে ফায়সালা করা হয়েছে এবং ভ্রান্ত কাজে লিপ্ত ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷১০৯
﴿اللَّهُ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَنْعَامَ لِتَرْكَبُوا مِنْهَا وَمِنْهَا تَأْكُلُونَ﴾
৭৯)
আল্লাহই তোমাদের জন্য এসব গৃহপালিত পশু সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা এসব পশুর
কোনটির পিঠে আরোহণ করতে পার এবং কোনটির গোশত খেতে পার৷
﴿وَلَكُمْ فِيهَا مَنَافِعُ وَلِتَبْلُغُوا عَلَيْهَا حَاجَةً فِي صُدُورِكُمْ وَعَلَيْهَا وَعَلَى الْفُلْكِ تُحْمَلُونَ﴾
৮০)
এসবের মধ্যে তোমাদের জন্য আরো অনেক কল্যাণ নিহিত আছে৷ তোমাদের মনে যেখানে
যাওয়ার প্রয়োজন অনুভূত হয় এসবের পিঠে আরোহণ করে তোমরা সেখানে পৌঁছতে পার৷
এসব পশু এব নৌকাতেও তোমাদের আরোহণ করতে হয়৷
﴿وَيُرِيكُمْ آيَاتِهِ فَأَيَّ آيَاتِ اللَّهِ تُنكِرُونَ﴾
৮১) আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর এসব নির্দশন দেখাচ্ছেন৷ তোমরা তাঁর কোন্ কোন্ নিদর্শন অস্বীকার করবে ?১১০
﴿أَفَلَمْ
يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ
مِن قَبْلِهِمْ ۚ كَانُوا أَكْثَرَ مِنْهُمْ وَأَشَدَّ قُوَّةً وَآثَارًا
فِي الْأَرْضِ فَمَا أَغْنَىٰ عَنْهُم مَّا كَانُوا يَكْسِبُونَ﴾
৮২) সুতরাং এরা কি১১১ এ
পৃথিবীতে বিচরণ করেনি, তাহলে এরা এদের পূর্ববর্তী লোকদের পরিণতি দেখতে পেত
? তারা সংখ্যায় এদের চেয়ে বেশী ছিল, এদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী ছিল এবং
পৃথিবীর বুকে এদের চেয়ে অধিক জাঁকালো নিদর্শন রেখে গেছে৷ তারা যা অর্জন
করেছিল, তা শেষ পর্যন্ত তাদের কাজে লাগেনি৷১১২
﴿فَلَمَّا
جَاءَتْهُمْ رُسُلُهُم بِالْبَيِّنَاتِ فَرِحُوا بِمَا عِندَهُم مِّنَ
الْعِلْمِ وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ﴾
৮৩) তাদের রসূল যখন সুস্পষ্ট নিদর্শনাদি নিয়ে তাদের কাছে এসেছিলেন তখন তারা নিজের কাছে বিদ্যমান জ্ঞান নিয়েই মগ্ন ছিল এবং যে জিনিস নিয়ে তারা বিদ্রূপ করতো সে জিনিসের আবর্তেই তারা পড়ে গিয়েছিলো৷
﴿فَلَمَّا رَأَوْا بَأْسَنَا قَالُوا آمَنَّا بِاللَّهِ وَحْدَهُ وَكَفَرْنَا بِمَا كُنَّا بِهِ مُشْرِكِينَ﴾
৮৪)
তারা যখন আমার আযাব দেখতে পেল তখন চিৎকার করে বলে উঠলো, আমরা এক ও
লা-শরীক আল্লাহকে মেনে নিলাম৷ আর যেসব উপাস্যদের আমরা শরীক করতাম তাদের
অস্বীকার করলাম৷১১৩
﴿فَلَمْ
يَكُ يَنفَعُهُمْ إِيمَانُهُمْ لَمَّا رَأَوْا بَأْسَنَا ۖ سُنَّتَ
اللَّهِ الَّتِي قَدْ خَلَتْ فِي عِبَادِهِ ۖ وَخَسِرَ هُنَالِكَ
الْكَافِرُونَ﴾
৮৫) কিন্তু আমার আযাব দেখার পর তাদের ঈমান গ্রহণ কোন
উপকারে আসার নয়৷ কারণ, এটাই আল্লাহর সুনির্ধারিত বিধান যা সবসময় তাঁর
বান্দাদের মধ্যে চালু ছিল৷ সে সময় কাফেররা ক্ষতির মধ্যে পড়ে গেল৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন