শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬

আদ দাহর

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
هَلْ أَتَىٰ عَلَى الْإِنسَانِ حِينٌ مِّنَ الدَّهْرِ لَمْ يَكُن شَيْئًا مَّذْكُورًا﴾
১) মানুষের ওপরে কি অন্তহীন মহাকালের এমন একটি সময়ও অতিবাহিত হয়েছে যখন সে উল্লেখযোগ্য কোন জিনিসই ছিল না?
﴿إِنَّا خَلَقْنَا الْإِنسَانَ مِن نُّطْفَةٍ أَمْشَاجٍ نَّبْتَلِيهِ فَجَعَلْنَاهُ سَمِيعًا بَصِيرًا﴾
২) আমি মানুষকে এক সংমিশ্রণ বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছি   যাতে তার পরীক্ষা নিতে পারি৷   এর উদ্দেশ্যে আমি তাকে শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তির অধিকারী করেছি৷
﴿إِنَّا هَدَيْنَاهُ السَّبِيلَ إِمَّا شَاكِرًا وَإِمَّا كَفُورًا﴾
৩) আমি তাকে রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছি৷ এরপর হয় সে শোকরগোজার হবে নয়তো হবে কুফরের পথ অনুসরণকারী৷
﴿إِنَّا أَعْتَدْنَا لِلْكَافِرِينَ سَلَاسِلَ وَأَغْلَالًا وَسَعِيرًا﴾
৪) আমি কাফেরদের জন্য শিকল,বেড়ি এবং জ্বলন্ত আগুন প্রস্তুত করে রেখেছি৷
﴿إِنَّ الْأَبْرَارَ يَشْرَبُونَ مِن كَأْسٍ كَانَ مِزَاجُهَا كَافُورًا﴾
৫) (বেহেশতে) নেককার লোকেরা   পানপাত্র থেকে এমন শরাব পান করবে যাতে কর্পূর পানি সংমিশ্রিত থাকবে৷
﴿عَيْنًا يَشْرَبُ بِهَا عِبَادُ اللَّهِ يُفَجِّرُونَهَا تَفْجِيرًا﴾
৬) এটি হবে একটি বহমান ঝর্ণা৷   আল্লাহর বান্দারা   যার পানির সাথে শরাব মিশিয়ে পান করবে এবং যেখানেই ইচ্ছা সহজেই তার শাখা-প্রশাখা বের করে নেবে৷
﴿يُوفُونَ بِالنَّذْرِ وَيَخَافُونَ يَوْمًا كَانَ شَرُّهُ مُسْتَطِيرًا﴾
৭) এরা হবে সেসব লোক যারা (দুনিয়াতে )মানত পূরণ করে ১০   সে দিনকে ভয় করে যার বিপদ সবখানে ছড়িয়ে থাকবে৷
﴿وَيُطْعِمُونَ الطَّعَامَ عَلَىٰ حُبِّهِ مِسْكِينًا وَيَتِيمًا وَأَسِيرًا﴾
৮) আর আল্লাহর মহব্বতে ১১   মিসকীন,ইয়াতীম, এবং বন্দীকে ১২   খাবার দান করে ১৩
﴿إِنَّمَا نُطْعِمُكُمْ لِوَجْهِ اللَّهِ لَا نُرِيدُ مِنكُمْ جَزَاءً وَلَا شُكُورًا﴾
৯) এবং (তাদেরকে বলে) আমরা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই তোমাদের খেতে দিচ্ছি৷ আমরা তোমাদের কাছে এর কোন প্রতিদান বা কৃতজ্ঞতা ১৪   পেতে চাই না৷
﴿إِنَّا نَخَافُ مِن رَّبِّنَا يَوْمًا عَبُوسًا قَمْطَرِيرًا﴾
১০) আমরা তো আমাদের রবের পক্ষ থেকে সেদিনের আযাবের ভয়ে ভীত, যা হবে কঠিন বিপদ ভরা অতিশয় দীর্ঘ দিন৷
﴿فَوَقَاهُمُ اللَّهُ شَرَّ ذَٰلِكَ الْيَوْمِ وَلَقَّاهُمْ نَضْرَةً وَسُرُورًا﴾
১১) আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সেদিনের অকল্যাণ থেকে রক্ষা করবেন এবং তাদেরকে সজীবতা ও আনন্দ দান করবেন৷ ১৫
﴿وَجَزَاهُم بِمَا صَبَرُوا جَنَّةً وَحَرِيرًا﴾
১২) আর তাদের সবরের বিনিময়ে ১৬   তাদেরকে জান্নাত ও রেশমী পোশাক দান করবেন৷
﴿مُّتَّكِئِينَ فِيهَا عَلَى الْأَرَائِكِ ۖ لَا يَرَوْنَ فِيهَا شَمْسًا وَلَا زَمْهَرِيرًا﴾
১৩) তারা সেখানে উঁচু আসনের ওপরে হেলান দিয়ে বসবে৷ সেখানে রোদের উত্তাপ কিংবা শীতের তীব্রতা তাদের কষ্ট দেবে না ৷
﴿وَدَانِيَةً عَلَيْهِمْ ظِلَالُهَا وَذُلِّلَتْ قُطُوفُهَا تَذْلِيلًا﴾
১৪) জান্নাতের বৃক্ষরাজির ছায়া তাদের ওপর ঝুঁকে পড়ে ছায়া দিতে থাকবে ৷আর তার ফলরাজি সবসময় তাদের নাগালের মধ্যে থাকবে (তারা যেভাবে ইচ্ছা চয়ন করতে পারবে)
﴿وَيُطَافُ عَلَيْهِم بِآنِيَةٍ مِّن فِضَّةٍ وَأَكْوَابٍ كَانَتْ قَوَارِيرَا﴾
১৫) তার সামনে রৌপ্য পাত্র ১৭   ও সচ্ছ কাঁচের পাত্রসমূহ পরিবেশিত হতে থাকবে ৷কাঁচ পাত্রও হবে রৌপ্য জাতীয় ধাতুর ১৮
﴿قَوَارِيرَ مِن فِضَّةٍ قَدَّرُوهَا تَقْدِيرًا﴾
১৬) যা (জান্নাতের ব্যবস্থাপকরা) যথাযথ পরিমাণে পূর্ণ করে রাখবে৷ ১৯
﴿وَيُسْقَوْنَ فِيهَا كَأْسًا كَانَ مِزَاجُهَا زَنجَبِيلًا﴾
১৭) সেখানে তাদের এমন সূরা পাত্র পান করানো হবে যাতে শুকনো আদার সংমিশ্রণ থাকবে ৷
﴿عَيْنًا فِيهَا تُسَمَّىٰ سَلْسَبِيلًا﴾
১৮) এটি জান্নাতের একটি ঝর্ণা যা সালসাবীল নামে অভিহিত৷ ২০
﴿وَيَطُوفُ عَلَيْهِمْ وِلْدَانٌ مُّخَلَّدُونَ إِذَا رَأَيْتَهُمْ حَسِبْتَهُمْ لُؤْلُؤًا مَّنثُورًا﴾
১৯) তাদের সেবার জন্য এমন সব কিশোর বালক সদা তৎপর থাকবে যারা চিরদিনই কিশোর থাকবে৷ তুমি তাদের দেখলে মনে করবে যেন ছড়ানো ছিটানো মুক্তা৷ ২১
﴿وَإِذَا رَأَيْتَ ثَمَّ رَأَيْتَ نَعِيمًا وَمُلْكًا كَبِيرًا﴾
২০) তুমি সেখানে যে দিকেই তাকাবে সেদিকেই শুধু নিয়ামত আর ভোগের উপকরণের সমাহার দেখতে পাবে এবং বিশাল সাম্রাজ্যের সাজ-সরঞ্জাম তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবে৷ ২২
﴿عَالِيَهُمْ ثِيَابُ سُندُسٍ خُضْرٌ وَإِسْتَبْرَقٌ ۖ وَحُلُّوا أَسَاوِرَ مِن فِضَّةٍ وَسَقَاهُمْ رَبُّهُمْ شَرَابًا طَهُورًا﴾
২১) তাদের পরিধানে থাকবে মিহি রেশমের সবুজ পোশাক এবং মখমল ও সোনালী কিংখাবের বস্ত্ররাজি৷ ২৩   আর তাদেরকে রৌপ্যের কঙ্কন পরানো হবে ৷ ২৪   আর তাদের রব তাদেরকে অতি পবিত্র শরাব পান করাবেন৷ ২৫
﴿إِنَّ هَٰذَا كَانَ لَكُمْ جَزَاءً وَكَانَ سَعْيُكُم مَّشْكُورًا﴾
২২) এ হচ্ছে তোমাদের জন্য প্রতিদান৷ কারণ, তোমাদের কাজ কর্ম মূল্যবান প্রমাণিত হয়েছে৷ ২৬
﴿إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْقُرْآنَ تَنزِيلًا﴾
২৩) হে নবী ,আমিই তোমার এ কুরআনে অল্প অল্প করে নাযিল করেছি৷ ২৭
﴿فَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ وَلَا تُطِعْ مِنْهُمْ آثِمًا أَوْ كَفُورًا﴾
২৪) তাই তুমি ধৈর্যের সাথে তোমার রবের হুকুম পালন করতে থাকো৷ ২৮   এবং এদের মধ্যকার কোন দুষ্কর্মশীল এবং সত্য অমান্যকারীর কথা শুনবে না৷ ২৯
﴿وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ بُكْرَةً وَأَصِيلًا﴾
২৫) সকাল সন্ধ্যায় তোমার রবের নাম স্মরণ করো৷
﴿وَمِنَ اللَّيْلِ فَاسْجُدْ لَهُ وَسَبِّحْهُ لَيْلًا طَوِيلًا﴾
২৬) রাতের বেলায়ও তার সামনে সিজদায় অবনত হও৷ রাতের দীর্ঘ সময় তাঁর তাসবীহ অর্থাৎ পবিত্র বর্ণনা করতে থাকো৷ ৩০
﴿إِنَّ هَٰؤُلَاءِ يُحِبُّونَ الْعَاجِلَةَ وَيَذَرُونَ وَرَاءَهُمْ يَوْمًا ثَقِيلًا﴾
২৭) এসব লোক তো দ্রুত লাভ করা যায় এমন জিনিসকে (দুনিয়াকে)ভালবাসে এবং ভবিষ্যতে যে কঠিন দিন আসছে তাকে উপেক্ষা করে চলছে৷ ৩১
﴿نَّحْنُ خَلَقْنَاهُمْ وَشَدَدْنَا أَسْرَهُمْ ۖ وَإِذَا شِئْنَا بَدَّلْنَا أَمْثَالَهُمْ تَبْدِيلًا﴾
২৮) আমিই এদের সৃষ্টি করেছি এবং এদের প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গ ও সন্ধিস্থল মজবুত করেছি৷ আর যখনই চাইবো তাদের আকার-আকৃতি পরিবর্তন করে দেব৷ ৩২
﴿إِنَّ هَٰذِهِ تَذْكِرَةٌ ۖ فَمَن شَاءَ اتَّخَذَ إِلَىٰ رَبِّهِ سَبِيلًا﴾
২৯) এটি একটি উপদেশ বাণী৷এখন কেউ চাইলে তার রবের দিকে যাওয়ার পথ অবলম্বন করতে পারে৷ ৩৩
﴿وَمَا تَشَاءُونَ إِلَّا أَن يَشَاءَ اللَّهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا﴾
৩০) তোমাদের চাওয়ার কিছুই হয় না যদি আল্লাহ না চান৷
﴿يُدْخِلُ مَن يَشَاءُ فِي رَحْمَتِهِ ۚ وَالظَّالِمِينَ أَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا﴾
৩১) আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও সুবিজ্ঞ৷ যাকে ইচ্ছা তিনি তাকে তাঁর রহমতের মধ্যে শামিল করেন৷ আর জালেমদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন কঠিন শাস্তি৷ ৩৪

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন