পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই, ২০২১

তোবা! তোবা!! ( তওবা! তওবা) - নিমু মাহবুব।

 গত পোস্টে বলেছিলাম কুরআনে গোল্লাছুট খেলার কথা। এবার বলবো কুরআন মজিদে নারী স্বভাবের সার্বজনীনতা সম্পর্কে। ছোট বেলায় গ্রামের বাড়িতে দেখেছি কোন মহিলার সামনে তার সম্পর্কে  অবাস্তব,  অবিশ্বাস্য, মিথ্যা কিংবা আশ্চর্য্য কোন কথা বললে তিনি তৎক্ষণাৎ নিজের  দু'গালে হাত দিয়ে চপড়াতেন আর মুখে  তোবা! তোবা!! ( তওবা! তওবা) আস্তাগফিরুল্লাহ!!! বলতেন। কিন্তু খোদ একজন নবীর বউয়েরও যে এরকম সহজাত স্বভাব থাকতে পারে তা জানলাম সুরা যারিয়াত পড়ে।

ইব্রাহিম আঃ প্রায় ৪৬০০ বৎসর পূর্বে বর্তমান ইরাকের বাবেল শহরে বসবাস করতেন। তার প্রথম বউ সারাহ রাঃ ছিলেন বন্ধা। তারা উভয়ে বৃদ্ধ হয়ে গেলেন। কিন্তু তাদের কোন সন্তান নেই। এ নিয়ে তাদের মনে দুঃখ ছিল কিনা কে জানে। 

এদিকে তৎকালে হযরত লুত আঃ এর কাওম ব্যভিচার ও সমকামিতায় চরমভাবে লিপ্ত হয়ে পড়লে আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাই আল্লাহ জিবরাইল, ইসরাফিল ও মিকাইল ফেরেশতাকে মানুষরূপে দুনিয়াতে পাঠালেন কাওমে লুতকে ধ্বংস করার জন্য। লুত আঃ ছিলেন হযরত ইব্রাহিম আঃ এর ভাতিজা। সম্মানিত ফেরেশতারা প্রথমে হযরত ইব্রাহিম আঃ এর বাড়িতে তাশরিফ নিলেন। ইব্রাহিম আঃ ছিলেন খুবই মেহমানপ্রিয় নবী। তিনি প্রথমে ফেরেশতাদেরকে মানুষ মনে করলেন। তাই তাড়াতাড়ি একটা  গরু জবাই করে গরুর গোস্ত ভাজি করে তাদেরকে খেতে দিলেন। 

কিন্তু ফেরেশতাদের পানাহার আল্লাহর বিধানে নেই। তাই তারা অপারগ হয়ে নিজেদের পরিচয় দিলেন। আর তাদের দুনিয়াতে আগমনের কারণও জানালেন যে, তারাদেরকে কাওমে লুতকে ধ্বংস করার জন্য পাঠানো হয়েছে। এটা শুনে ইব্রাহিম আঃ খুব চিন্তিত হয়ে গেলেন। কারণ তিনি ছিলেন খুবই নরম আর কোমল মনের মানুষ।  এরপর ফেরেশতারা হযরত ইব্রাহিম আঃ ও তার বউ সারাহ রাঃ সুসংবাদ দিলেন যে, আল্লাহ তাদের একটি পুত্র সন্তান ইসহাক আঃ কে দান করবেন।  দেখুন কুরআন কি বলে, 

فَاَقْبَلَتِ امْرَاَتُهٗ فِیْ صَرَّةٍ فَصَكَّتْ وَجْهَهَا وَ قَالَتْ عَجُوْزٌ عَقِیْمٌ

"একথা শুনে তার স্ত্রী চিৎকার করতে করতে অগ্রসর হলো। সে আপন গালে চপেটাঘাত করে বললোঃ বুড়ী,  বন্ধ্যা"।( ৫১: আয-যারিয়াত, আয়াত: ২৯)।  ইতিহাস মোতাবেক হযরত ইব্রাহিম আঃ এর তখন বয়স ছিল ১০০ বছর আর তার বউ সারাহ রাঃ এর বয়স ছিল ৯০ বছর।

 হযরত ইব্রাহিম আঃ কে সুসন্তানের সুসংবাদ দিয়ে ফেরেশতারা এবার হযরত লুত আঃ এর বাড়িতে গেলেন। তিনিো প্রথমে তাদেরকে চিনতে পারেননি। পরে চিনতে পারেন। পরদিন সকালে ফেরেশতারা কাওমে লুতকে তাদের পাপাচার কারণে তাদেরকে ধ্বংস করে দিলেন। শুধু হযরত লুত আঃ এর পরিবারকে ধ্বংস হতে রক্ষা করলেন। কিন্তু তার বউকে রক্ষা না করে পুরো কাওমের সাথে ধ্বংস করে দেয়া হলো। কারণ লুত আঃ এর বউ ছিল পাপাচারী দের দলে।

কুরআনের ভাষ্যমতে, 

فَجَعَلْنَا عَالِیَهَا سَافِلَهَا وَ اَمْطَرْنَا عَلَیْهِمْ حِجَارَةً مِّنْ سِجِّیْلٍؕ

"এবং আমি সেই জনপদটি ওলট পালট করে রেখে দিলাম আর তাদের ওপর পোড়া মাটির পাথর বর্ষণ করলাম।"  ১৫ নং সুরা আল-হিজর, আয়াত: ৭৪।

(১১ নং সুরা হুদ, ১৫ নং সুরা হিজর ও ৫১ নং সুরা যারিয়াত এবং তাফসীরে ইবনে কাসীর ও তাফহীমুল কুরআন অবলম্বনে)





সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০২১

কুরআনে গোল্লাছুট - নিমু মাহবুব

 



কুরআন শরিফ পড়লে শুধু সওয়াব না অনেক দারুণ আর  মজার জিনিসও জানা যায়। এই ধরুন গোল্লাছুট খেলার কথা। কুরআন শরিফে গোল্লাছুট খেলার বর্ণনা পড়ে আমি কিঞ্চিৎ আশ্চর্য্য হয়ে যারপরনাই আনন্দ পেলাম। প্রায় ৩৫০০ (সাড়ে তিন হাজার) বছর আগে ফিলিস্তিনের কেনান শহরে গোল্লাছুট খেলা প্রচলিত ছিল।

 ইউছুপ আঃ এর বদের হাড্ডি সৎ ভাইয়েরা তাকে অন্ধকূপ ফেলে দিয়ে তাদের বাবা নবী ইয়াকুব আঃ এর কাছে এসে "বললঃ হে আমাদের পিতা! আমরা 'গোল্লাছুট' খেলছিলাম এবং ইউসুফকে আমাদের মালপত্রের নিকট রেখে গিয়েছিলাম, অতঃপর তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলেছে; কিন্তু আপনিতো আমাদের বিশ্বাস করবেননা, যদিও আমরা সত্যবাদী।" (১২ নং সূরা ইউছুপ, আয়াত নং -১৭) 


ছোট বেলায় কত মজা করে গোল্লাছুট খেলেছি। আহ! কোথায় সে দিনগুলি! এখনকার পোলাপান তো ফুটবল আর ক্রিকেট ছাড়া কোন খেলার কথা জানেইনা খেলা তো বহু দূরের বিষয়।